ওবেসিটি জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধ থেকে জানা গেছে খাবারের মোট ক্যালোরির ২৫ শতাংশ প্রোটিন থেকে এলে ভুলভাল খাবার খাওয়ার প্রবণতা প্রায় ৬০ শতাংশ কমে যায়। কাজেই দিনের প্রতিটি খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত প্রোটিন যেন থাকে, এটি খেয়াল রাখতে হবে।
হরমোন বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব খিদে পেলে ভাজা বা প্রসেসড ফুডের আসক্তি বেড়ে যায়। কাজেই খিদে চেপে রাখবেন না। অল্প খিদে পেলেই স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নেবেন কিছুটা।
চুইঙ্গাম মুখে রাখলে মিষ্টি এবং নোনতা খাবারের আসক্তি কিছুটা কমে বলছে গবেষণা। তবে তা যেন সুগার–ফ্রি হয়। না হলে ক্যালোরি বেড়ে গিয়ে সমস্যা আসবে। শরীরে জলের ঘাটতি না হলে খাই খাই ভাব একটু কমই হয়। কাজেই দিনে কম করে আড়াই–তিন লিটার পানি পান করুন। অল্প করে, বারে বারে।
ঘুম কম হলে ভাজা বা মিষ্টি খাবারের প্রতি আসক্তি বাড়তে পারে। কাজেই ভালো করে ঘুমোনোর চেষ্টা করুন। কখনও যদি কম ঘুমের ক্লান্তি গ্রাস করে চিনি ছাড়া কালো চা বা কফি খান দু–এক কাপ।
মানসিক চাপ বাড়লে গ্লুকোজসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা হয়। তবে তার স্থায়িত্ব থাকে ৩–৫ মিনিট। সে সময় আড্ডায়-কাজে কাটিয়ে দিতে পারলে বিপদ কমে যায়।
কোনটার বদলে কোনটা
কোন খাবারের বদলে কোনটা খাবেন তা জানা খুব জরুরি। যেমন ধরুন, চিনির বদলে সুগার সাবস্টিটিউট খেয়ে ভাবলেন হাই ক্যালোরির ধাক্কা সামলেছেন, আসলে হল ঠিক এর উল্টো। চিনির গ্লুকোজ মস্তিষ্কের উদ্দীপনা নিয়ে আসে বলেই মিষ্টি খেয়ে তৃপ্তি হয়। কিন্তু সুগার সাবস্টিটিউটে তো গ্লুকোজ নেই, ফলে তা খাওয়ার পরও অতৃপ্ত থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা।
মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে সারাদিন ধরে তাড়া করল। সেই তাড়নায় উল্টো-পাল্টা ক্যালোরি শরীরে ঢুকল অনেক। সে জন্যই যারা চিনি ছাড়া চা–কফি খেতে পারেন না, তাদের সুগার সাবস্টিটিউটের বদলে অল্প করে চিনি দিয়ে খেতে বলা হয়। খুব মোটা মানুষ বা ডায়াবেটিকদেরও। এতে দিনভর মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে কম থাকে।
এমনভাবে চলতে হয় যাতে খাওয়ার ইচ্ছা মেটে, ক্ষতিও হয় না শরীরের।
যেমন–
চিপ্সের বদলে খান স্বাস্থ্যকর কাজু, চিনেবাদাম বা আখরোট। তাতে মন না ভরলে অল্প করে পপকর্ন খেতে পারেন।
চকলেট আসক্তি মাত্রা ছাড়ালে ম্যাগনেসিয়াম-সমৃদ্ধ অ্যামন্ড খেয়ে দেখুন। কাজ না হলে মিল্ক চকলেটের বদলে খান ৭০ শতাংশ কোকাসমৃদ্ধ ডার্ক চকলেট।
ক্যান্ডি বা পেস্ট্রির বদলে খান ফল। কিসমিস বা খেজুর খেলেও কাজ হবে।
ঠান্ডা পানীয়ের তৃষ্ণা মেটাতে তার সাথে জিরো ক্যালোরি অর্ধেক অর্ধেক মিশিয়ে খান। ক্যালোরি কিছুটা কম ঢুকবে, মস্তিষ্কও তৃপ্ত থাকবে। ফলের রস মিশিয়ে স্পার্কলিং ওয়াটার খাওয়া যেতে পারে।
(সূত্র: আনন্দবাজার)