গ্রামের লোকজন তাকে বৃক্ষশিশু নামে ডাকে। হাত পায়ের তালুর ঘাগুলো গোলাকার ও লম্বাকৃতির। নখগুলো বড় হয়ে সামনের দিকে কুঁকড়ে গেছে। মাথাতে কালো শুকনো ঘা। ঠোঁটেও ছোট ছোট ঘা। রিপনের (১৩) শরীরে অজ্ঞাত রোগ বাসা বেঁধেছে।
রিপনের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের কেউটগাঁও গ্রামে। তার বাবার নাম মহেন্দ্র দাস রাম। সে কেউটগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। জন্মের চার মাসের মাথায় অজ্ঞাত জটিল রোগে আক্রান্ত হয় সে।
আরও পড়ুন: হাত-পা বিহীন এসএসসি পরীক্ষার্থী সালাহ উদ্দিনের স্বপ্ন বড়
এর আগে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য রিপনকে ঢাকায় নেয়া হয়। সেখানে কয়েকটি অপারেশন ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর কিছুটা ভালো হলে তাকে বাড়িতে ফিরে আনা হয়। এরপর আর কোন চিকিৎসা হয়নি বলে রিপনের বাবা জানিয়েছেন।
রিপন বলে, ‘আমার হাতে-পায়ে অনেক ব্যথা। আমি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারি না। আমি সুস্থ হতে চাই। মা-বাবা আর দুই বোন ছাড়া আমার কেউ পছন্দ করে না। স্কুলে কেউ আমার কাছে আসতে চায় না। ঠিকমতো খাইতে পারি না। চামচ দিয়া ভাত খাই।’
রিপনের মা গোলাপী রানী রায় জানান, ২০০৭ সালে জন্মের চার মাসের মাথায় রিপনের মাথা, হাত ও পায়ের তালুতে ঘামাচির মতো দেখা দেয়। তবে ঘামাচিতে কোনো রস দেখা যায়নি। চার-পাঁচ মাস পর ঘামাচিগুলো বড় আকার ধারণ করে। তিন-চার মাস পর সেগুলো কালো হয়ে যায়। ধীরে ধীরে হাত-পায়ের তালুগুলো জালের মতো ফাটতে থাকে। এরপর থেকেই আস্তে আস্তে ঘাগুলো বড় হতে থাকে।
আরও পড়ুন: বাস্তবে জীবিত হলেও জাতীয় পরিচয়পত্রে তারা মৃত!
রিপনের বাবা মহেন্দ্র দাস বলেন, ‘আমি সামান্য জুতা সেলাইয়ের কাজ করি। এই সামান্য উপার্জনে পাঁচ সদস্যের পরিবার চলছে। আমার পক্ষে তার চিকিৎসা ব্যয় অসম্ভব। সহযোগিতা পেলে আমার ছেলের চিকিৎসার সুযোগ হতো।’
দৌলতপুর ইউপির চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা যত দূর সম্ভব সহযোগিতা করছি।’ বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।