গাইবান্ধার দক্ষিণ শ্রীপুর কুরুয়াবাদা ইসলামিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার অফিস সহকারী মো. আল আমিন মিয়ার উত্ত্যক্তের কারণে প্রায় ১৭ দিন ধরে মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ রয়েছে এক ছাত্রীর। আতঙ্কে রয়েছে পরিবার।
সম্প্রতি সময়ে তাকে নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় (ফেসবুক) নানা কথা ছড়িয়ে পড়ায় মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এছাড়া আল আমিনের হুমকির কারণে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না অভিভাবক ও ওই মেয়ে।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে আবেদন করেও নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছে না তার পরিবারের লোকজন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে পিটিয়ে আহত
আবেদনে উল্লেখ আছে, যে এসএমএসটিকে কেন্দ্র করে অভিযোগ দেওয়া হয় সেটি আল আমিন মিয়ার মোবাইল ফোন থেকে মেয়েটির ফোনে আসে। তারও আগে থেকে বিভিন্ন ধরনের এসএমএস দিয়ে বিরক্ত করা হয় তাকে। ফোন করা হয় গভীর রাতেও। আল আমিনের কথা মতো চলতে বাধ্য করার জন্য শারীরিক নির্যাতনের কথাও উল্লেখ আছে অভিযোগে। বিষয়টি নিয়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে একাধিক অভিযোগও দিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। কোনো সুরাহা না পেয়ে ইউএনও অফিসে অভিযোগ দেন সঠিক বিচারের আশায়।
ভুক্তভোগী মেয়েটির মামা আমজাদ হোসেন বলেন, ভাগ্নি আমাদের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে। বর্তমান সে ওই মাদরাসায় দশম শ্রেণিতে পড়ছে। ঘটনার দিন ভাগ্নির মোবাইল ফোনটি আমাদের কাছে ছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে আল আমিনের মোবাইল নম্বর থেকে একটি এসএমএস আসে। পরে বিষয়টি নিয়ে ভাগ্নির সঙ্গে কথা বলি। তখন অফিস সহকারী তাকে উত্যক্ত করে বলে বিষয়টি তখন স্বীকার করে সে। পরে ইউএনও অফিসে অভিযোগ দেওয়ার পর অশান্তি আরও বেড়ে যায়। আপস-মিমাংসার জন্য এলাকার এবং সুন্দরগঞ্জের মাতবররা চাপ ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। আমরা গরিব মানুষ। ন্যায় বিচার পাব কি না সন্দেহ হচ্ছে।
মেয়ের বাবা আয়নাল হক বলেন, আমরা বিচারের আশায় গত ৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দিয়েছে আমার মেয়ে। এখনও বিচার পাইনি। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে হুমকি-ধমকিসহ চাপ দিচ্ছে। ঘটনার দিন থেকে মাদরাসা যাচ্ছে না মেয়েটি। বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না তাদের ভয়ে।
এ বিষয়ে অফিস সহকারী আল আমিন মিয়ার বলেন, আমার মোবাইল ফোন থেকে মেয়েটির ফোনে এসএমএসটি গিয়েছে এটা ঠিক। তবে আমি পাঠাইনি। আমার মাদরাসার নাইটগার্ড আমার মোবাইল ফোন থেকে এসএমএসটি পাঠিয়েছেন।
আল আমিনের বড়ভাই ও দক্ষিণ শ্রীপুর কুরুয়াবাদা ইসলামিয়া বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা মো. আনোয়ার হোসাইনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: নড়াইলে ছাত্রীকে শারীরিকভাবে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে শিক্ষক বরখাস্ত