তবে কতজনের সংশ্লিষ্টতা আছে তা নির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের রবিবার বলেন, ‘ডিএনএ রিপোর্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তার হাতে এসে পৌঁছেছে। এখন পরবর্তী প্রক্রিয়া চলছে।‘
এর আগে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে এ প্রতিবেদন না পাওয়ার কারণে চাঞ্চল্যকর মামলাটির অভিযোগপত্র দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এখন প্রতিবেদন পাওয়ায় খুব দ্রুত অভিযোগপত্র দেয়া হবে বলে জানান আশরাফ উল্যাহ।
তিনি বলেন, ‘ডিএনএ রিপোর্ট হাতে আসায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই চার্জশিট দেয়া হবে এবং বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।‘
মামলায় গ্রেপ্তার আটজনের ডিএনএ নমুনা গত ১ ও ৩ অক্টোবর সংগ্রহ করা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহের পর পাঠানো হয় ঢাকার ল্যাবে। সেখান থেকে নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন প্রথমে আদালতে এসে পৌঁছায়। পরবর্তীতে তা তদন্ত কর্মকর্তার হাতে আসে।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে নববিবাহিত স্ত্রীকে প্রাইভেটকারে করে নিয়ে বেড়াতে বের হন নগরীর দক্ষিণ সুরমার জৈনপুর এলাকার এক যুবক। সন্ধ্যার দিকে টিলাগড়ে এমসি কলেজের মূল ফটকের সামনে তাদের ঘিরে ধরেন কয়েকজন তরুণ। এক পর্যায়ে প্রাইভেটকারসহ তাদের বালুচরে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যান তরুণরা। এরপর যুবককে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে প্রাইভেটকারের মধ্যেই ধর্ষণ করেন ৫-৬ জন। সেই সাথে এ দম্পতিকে মারধর এবং তাদের কাছে থাকা টাকা ও অলংকার ছিনিয়ে নেয় ধর্ষকরা। আটকে রাখে প্রাইভেটকারও।
ছাত্রাবাস থেকে ছাড়া পেয়ে পুলিশকে ফোন করেন ভুক্তভোগী স্বামী। পরে পুলিশ গিয়ে ছাত্রাবাস থেকে প্রাইভেটকার উদ্ধার এবং নির্যাতিতা তরুণীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করে।
এ ঘটনায় রাতেই ছয়জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জনকে আসামি করে শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতার স্বামী।
মামলা দায়েরের তিন দিনের মধ্যে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে এজাহারভুক্ত আসামি সাইফুর, তারেক, রনি, অর্জুন, রবিউল ও মাসুম এবং সন্দেহভাজন আসামি রাজন ও আইনুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কোনো পদে না থাকলেও গ্রেপ্তার হওয়া সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত বলে স্থানীয় ও কলেজ সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে, ধর্ষণের রাতে এমসি কলেজ ছাত্রবাসে সাইফুর রহমানের দখলে থাকা কক্ষে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সাইফুরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করে।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ঘটনার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে ২৬ অক্টোবর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত চার আসামির ছাত্রত্ব ও সার্টিফিকেট বাতিল করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি তাদের স্থায়ীভাবে এমসি কলেজ থেকে বহিষ্কারও করা হয়। বহিষ্কৃতরা হলেন সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসান।
এর আগে, ঘটনার কয়েক দিন পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি এমসি কলেজে তদন্ত করতে আসে। তদন্ত শেষে তারা তাদের প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।