এ ঘটনার পর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ নবজাতকসহ ওই মাকে উদ্ধার করে। এরপরও স্বামীর ঘরে স্থান না পেয়ে বাবার বাড়িতে ঠাঁই হয়েছে গৃহবধূ রোকসানা খাতুনের।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঘোমামারা গ্রামের বাড়ির উঠান থেকে নবজাতক ও গৃহবধূকে উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান এক নারীর
সংশ্লিষ্টরা জানান, এক বছর আগে ঘোড়ামারা গ্রামের মহব্বর আলীর ছেলে রাজা মিয়ার সাথে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের ধনিয়ারকুড়া গ্রামের লুৎফর মিয়ার মেয়ে রোকসানা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু গত আড়াই মাস আগে স্বামী রাজা মিয়া ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে বুঝতে পারেন রোকসানা কন্যা সন্তান জন্ম দিতে যাচ্ছেন। এরপর তার উপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। কখনো মারধর, আবার কখনো যৌতুক চেয়ে নির্যাতন চলে রোকসানার উপর।
গত ৮ মার্চ স্বামীর বাড়িতে প্রসব বেদনা উঠলে রোকসানাকে দ্রুত রংপুরের সালেহীন ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেদিন হাসপাতালে ডাক্তারের পরামর্শে সিজারিয়ান অস্ত্রপচারের মাধ্যমে রোকসানা জন্ম দেন একটি ফুটফুটে কন্যা শিশুর। এরপর সেখানে চারদিন থেকে বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে দুপুরে স্বামীর বাড়ি ঘোড়ামারায় ফেরেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৩ দিন অনশনের পর স্বামীর বাড়িতে স্থান পেল স্ত্রী
ফিরে দেখেন বাড়ির মূল ফটকে তালা ঝুলছে। ভেতর থেকেও কারো সাড়া পাননি তিনি। চারদিনের নবজাতকসহ সারাদিন বাড়ির উঠানে বসে ছিলেন গৃহবধূ।
পরে বিকালে রোকসানার শ্বশুর ও শাশুড়ি তাকে সাফ জানিয়ে দেন, গত তিন মাস আগে তালাক দেয়া হয়েছে তাকে। এটা শুনে উপায়ান্তু খুঁজে না পেয়ে রোকসানা সন্ধ্যার দিকে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। ততক্ষণে কোলের নবজাতকটি অনেকটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রোকসানা ও তার নবজাতকে উদ্ধার করে। পরে তার শ্বশুর বাড়ির কাউকে না পেয়ে পুলিশ তাকে সুন্দরগঞ্জের বাবার বাড়িতে পাঠায়।
আরও পড়ুন: গৃহবধূর লাশ রেখে পালিয়েছে স্বামী-শ্বশুরবাড়ির লোকজন
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, ‘পুলিশ পাঠিয়ে নবজাতকসহ রোকসানাকে উদ্ধার করে তার বাবার বাড়িতে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’