ঠাকুরগাঁও জেলায় দিন দিন করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী উপজেলা বালিয়াডাঙ্গীতে সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। এ কারণে আগের চেয়ে বিজিবি টহল বাড়ানো হয়েছে।
জেলায় শনিবার একদিনে ১৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার জানান, এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ (পিসিআর টেস্ট) দিনাজপুর; সিডিসি (জিন এক্সপার্ট টেস্ট) ; সদর হাসপাতাল ও উপজেলা হাসপাতাল সমূহ (এন্টিজেন টেস্ট), ঠাকুরগাঁও হতে শনিবার রাতে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও জেলায় নতুন ১৭ জন করোনা সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। শনিবার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নিবাসী ৭০ বছর বয়সী এক নারী করোনার চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে মারা যান।
আরও পড়ুন: আইইডিসিআর সমীক্ষা: নমুনার ৮০ শতাংশই ভারতীয় করোনা শনাক্ত
তিনি জানান, পূর্বের রিপোর্টসহ ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বমোট করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ১,৭৪২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১,৫৭৫ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন এবং এপর্যন্ত মৃত্যু ৩৮ জন।
সিভিল সার্জন আরও জানান, কয়েকদিনের সংক্রমণ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এই জেলায় সংক্রমণ বাড়ছে। করোনা পরীক্ষা করে গত জানুয়ারিতে ৭ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ, মার্চে ১৫ দশমিক ০৭ শতাংশ, এপ্রিলে ১৪ দশমিক ০৮ শতাংশ ও মে মাসে ১৩ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়েছে। জুন মাসের প্রথম ৫ দিনে ৩০ শতাংশেরও বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে।
ভারতীয় ধরন সম্পর্কে সিভিল সার্জন জানান, ভারত থেকে যারা আসবেন তাদের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেলে শুধু তাদেরই নমুনা ঢাকা আইইডিসিআরে পাঠানো হবে। ঠাকুরগাঁওয়ে ভারতফেরত রোগী পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: দেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু
তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় ঠাকুরগাঁওয়ে সক্ষমতা আগের চেয়ে বেড়েছে। সদর হাসপাতালে ৫০ শয্যার করোনা ইউনিট রয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সেও আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখন সদর হাসপাতালে, বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে ও সকল উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনা টেস্ট করা হয়।
তবে করোনা চিকিৎসায় এখনো অনেক ঘাটতি রয়েছে। সদর হাসপাতালের আইসিইউ ব্যবস্থা নেই। এই ইউনিটে ভেন্টিলেটর থাকলেও দক্ষ জনবল নেই। একটি অক্সিজেন প্লান্ট চালু রয়েছে। অক্সিজেনের সরবরাহে যাতে ঘাটতি না হয় সেজন্য আরো একটি অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। এটির কাজ প্রায় শেষের দিকে। খুব শিগগিরই চালু হবে এই দ্বিতীয় অক্সিজেন প্লান্ট।
জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, ঠাকুরগাঁও জেলায় গত কয়েকদিন থেকে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত বাড়ছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী উপজেলা বালিয়াডাঙ্গীতে সবচেয়ে বেশি। গোপনে সীমান্ত পারাপার ও চোরাকারবারীদের কারণে এই সংক্রমণ বেশি হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি জানান, বিজিবি সীমান্তে আগের চেয়ে টহল বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: রামেক হাসপাতালে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু!