গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার রওশনবাগ বাজারে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শফিউল শেখ (৫৭) উপজেলার কৃষ্ণপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত বাছের আলী শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
স্থানীয়রা জানান, নিহত শফিউল শেখের ছেলে সাদেকুল ইসলাম শেখ একজন মাদকাসক্ত। মাদক সেবনের কারণে তিনি এখন মানসিক রোগে ভুগছেন।
তারা জানান, ওই দিন বিকালে শফিউলের পালা গরু বাজারে বিক্রি করতে চাইলে তিনি ছেলে সাদেকুলকে বাধা দেন। এ নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। এরপর রাত ৯টার দিকে শফিউল রওশনবাগ বাজার করছিলেন। এ সময় হঠাৎ সাদেকুল ছুরি নিয়ে পেছন থেকে তার পিঠে উপযর্পরি আঘাত করে এবং বুকে ছুরি বসিয়ে দেন। এ সময় ছেলের ছুরিকাঘাতে শফিউল রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে তালাকপ্রাপ্ত স্বামীর হাতে গৃহবধূ খুন
পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, 'খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাইবান্ধা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় একই পরিবারের ৪ জনকে খুনের মামলায় চার্জশিট দাখিল
এদিকে, তুচ্ছ কারণেও হরহামেশা খুনের ঘটনা ঘটছে। আর্থিক লেনদেন ও সম্পর্কের বিরোধেও কেউ হয়ে উঠছে ভয়ংকর খুনি।
অপরাধ পরিস্থিতি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পারিবারিক সহিংসতা ও সংঘবদ্ধ অপরাধে হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে করোনাকালে নৃশংসতার ঘটনা বেড়েছে। চোর, ছিনতাইকারী, ডাকাতসহ পেশাদার অপরাধীরাও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ধর্ষণ-নিপীড়ন নিয়ে আন্দোলনের আগে-পরে গত এক মাসে সারা দেশে শতাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
আরও পড়ুন: পলাশবাড়িতে বড় ভাইয়ের অস্ত্রের আঘাতে ছোট ভাই ‘খুন’
এছাড়া ছিনতাই, চুরি, বিদেশিদের প্রতারণা, ফেসবুকে প্রতারণা, জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
অপরাধ, সমাজ ও মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় ঘরবন্দি থাকার পর আর্থিকসহ জীবনের বিভিন্ন ধরনের হতাশা-সংকটে মানুষের হিংস্রতা বাড়ছে। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সংঘবদ্ধ অপরাধীরাও সুযোগ খুঁজছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জনসম্পৃক্ততা এবং সামাজিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
তবে পুলিশের সংখ্যাগত অপরাধ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্চ-এপ্রিল মাসে অপরাধ কমে পরবর্তী সময়ে বাড়লেও তা বিগত সময়ের তুলনায় কমই আছে। পারিবারিক সহিংসতার বিষয়টিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।