শরীরে ক্ষত নিয়ে বুধবার বিকালে হাসপাতালের বিছানায় ঠাঁই হয়েছে চাঁদনীর।
শিশুটির পরিবার জানায়, আজ থেকে প্রায় নয় মাস আগে একই গ্রামের মাসুদুজ্জামান রান্টুর মেয়ে নেছার মাসিক এক হাজার টাকা বেতন ও খাওয়া-পড়ার শর্তে এক প্রকার জোর করেই ঢাকার বাসায় কাজের জন্য শিশু চাঁদনীকে সাথে করে নিয়ে যায়। কিন্তু ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কদিন পর থেকেই তারা চাঁদনীর পরিবারের সাথে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে।
আরও পড়ুন: শিশু নির্যাতন: ট্রমা বিশেষজ্ঞ সিএইচ রবিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে চাঁদনী জানায়, ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার চার দিন পর থেকেই তার উপর গৃহকত্রীর নির্যাতন শুরু হয়। থালা-বাসন মাজা, ঘর মোছা, কাপড় কাচা থেকে শুরু করে বাসার সব কাজ তাকে করতে হতো। একটু কিছু হলেই কথায় কথায় তার উপর নির্যাতন চালানো হতো। লোহার খুন্তি গরম করে ছ্যাঁকা দেয়া হতো। রাতে মারধরের পর হাত-পা বেঁধে ফ্লোরের উপর ফেলে রাখাতো।
চাঁদনীর বাবা তমিজ উদ্দিন তোজা জানান, অনেকটা জোর করেই তারা চাঁদনীকে ঢাকায় নিয়ে যায়। মাসে মাসে মেয়ের পারিশ্রমিক দেয়ার কথা থাকলেও একটা পয়সাও দেয়নি। গত নয় মাস তাদেরকে চাঁদনীর সাথে যোগাযোগ করতে দেয়নি। অবশেষে গ্রামবাসীদের চাপে বুধবার চাঁদনীকে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে শিশু নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান আসামি ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
খোকসা উপজেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার শামীম মাহমুদ জানান, পূর্ব থেকেই মেয়েটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। ধারাবাহিক নির্যাতনের কারণে শারীরিকভাবেও সে খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে।
গৃহকত্রী নেছার খাতুনের বাবা মাসুদুজ্জামান রান্টুর দাবি, শিশুটিকে কোন নির্যাতন করা হয়নি। এগুলো তাদের বিরুদ্ধে গ্রাম্য চক্রান্ত। শিশুটির শরীরে আগে থেকে ঘা, পচরা ছিল।
আরও পড়ন: ঠাকুরগাঁওয়ে ২ শিশু নির্যাতনের ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, নির্যাতনের ঘটনাটি ঢাকায় ঘটেছে। শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন: ভোলায় শিকলে বেঁধে শিশু নির্যাতনের অভিযোগে নারী আটক