মানবাধিকার
অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে: ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অভিবাসী কর্মীরা আমাদের সোনার সন্তান। অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বৈদেশিক আয়ের ক্ষেত্রে অভিবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স সরাসরি রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। প্রবাসী আয়ে অন্যান্য রপ্তানি খাতের মতো ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নেই। প্রবাসীরা বঞ্চনা, হয়রানি, অপমান এমনকি অপমৃত্যুরও শিকার হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ইতালীয় উপকূলে অভিবাসী নৌকা বিধ্বস্তে নিহত ৬০
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকার এফডিসিতে রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে অভিবাসী কর্মীদের মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত অভিবাসী কর্মীদের ন্যায্য অধিকার সুপ্রতিষ্ঠা হয়নি। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না। নারী শ্রমিকদের প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধে দূতাবাসগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
আরও পড়ুন: অভিবাসী কর্মীদের শ্রমশক্তিতে পুনঃএকত্রীকরণে বাংলাদেশ ও আইএলও’র চুক্তি সই
তিনি আরও বলেন, প্রবাসে কারাগারে আটক বাংলাদেশিদের মুক্তির বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করছেন। সৌদি আরবে দুইজন অভিবাসী নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও মানবাধিকার কমিশনের প্রচেষ্টায় রক্তপণ হিসেবে ৩০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, কাজ হারিয়ে যেসব অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছে তাদের সামাজিক সুরক্ষা ও রি—ইন্টিগ্রেশনের উপর আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কর্মীর প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহির মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালন
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পরিবার পরিজন, আত্মীয়—স্বজন, বন্ধুবান্ধব ছেড়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যের আমাদের অভিবাসী কর্মীরা তাদের শ্রমে ঘামে উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠিয়ে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, যে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা চলতি বছর ২৩ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন, তাদের সামাজিক মর্যাদা ও স্বীকৃতি এখনো আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। সরকারের নীতি কৌশল, প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা বৃদ্ধি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানো প্রক্রিয়া সহজ করা হলে প্রতি বছর প্রবাসী আয় থেকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৩৫ থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার দেশগুলো অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগ নিয়ে প্রায়ই নীরব থাকে: শাহরিয়ার
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আমাদের জিডিপিতে প্রবাসী আয়ের অবদান ৫ দশমিক ২ শতাংশ অথচ নেপালের জিডিপিতে প্রবাসী আয় ২৭ শতাংশ কন্ট্রিবিউট করছে। শোভন কর্মপরিবেশের অভাব, ন্যায্য মজুরি না পাওয়া, অদক্ষতা, অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় নিরাপদ অভিবাসনের বড় অন্তরায়। বিদেশ থেকে পাসপোর্ট বিহীন আউট পাস নিয়ে বিপুল সংখ্যক কর্মীরা দেশে আসার বিষয়টি উদ্বেগ তৈরি করেছে। কেন এসব কর্মীরা বিনা পাসপোর্টে আউট পাস নিয়ে দেশে ফিরে আসলো তা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা উচিৎ।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্য থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে এসওপি হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মিনি ফিল্ম ফেস্টিভেলের মাধ্যমে মানবাধিকার সপ্তাহ পালন ডাচ দূতাবাসের
রাজধানীর শিল্পকলা ফাইন আর্টস অডিটোরিয়ামে 'হিউম্যান রাইটস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল: মুভিজ দ্যাট ম্যাটার' শীর্ষক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়েছে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের আয়োজনে স্লোভাকিয়ায় সাংবাদিক হত্যার তদন্তের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত 'দ্য কিলিং অব এ জার্নালিস্ট' চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এই মিনি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল।
চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনীতে অংশ নেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড 'জলের গানের' একজন সংগীতশিল্পী।
উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুয়েরেন বলেন, 'মানবাধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে আমরা মনোযোগ দিতে চাই তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রতি বছর 'মুভিজ দ্যাট ম্যাটার্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল' আয়োজন করা।
রাষ্ট্রদূত বলেন, নেদারল্যান্ডসের অন্যান্য স্থান ও বিদেশে আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে এই সপ্তাহ ডাচ সংস্থা মুভিজ দ্যাট ম্যাটারের মাধ্যমে আনা চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে স্মরণ করা হয়। সংস্থাটি এমন চলচ্চিত্র প্রদর্শন করে এবং প্রচার করে যা বিশ্বজুড়ে অধিকার ইস্যুগুলোতে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশসহ ১৪২ দেশে যুক্তরাজ্যের ভিসা সেবা দেবে ভিএফএস গ্লোবাল
এ বছর তিন দিনব্যাপী মিনি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে মোট পাঁচটি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকায় আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শন করা হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে প্রযুক্তি সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরাই মানবাধিকারের কথা বলে, প্রেসক্রিপশন দেয়: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে, চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরাই বেশি বেশি মানবাধিকারের কথা বলে, নানা প্রেসক্রিপশন দেয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। এখন দেখা যাচ্ছে, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তারা মানবাধিকার নিয়ে বেশি কথা বলা শুরু করেছে। দেশে আগুনসন্ত্রাস চালিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা এবং চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে মানুষের অধিকার হরণ করে, তারা আবার প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে মানবাধিকারের কথা বলে। এটিই আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য।
আরও পড়ুন: বিএনপিই দেশের প্রথম কিংস পার্টি: তথ্যমন্ত্রী
রবিবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রেস ক্লাবে চিটাগাং জার্নালিস্ট ফোরাম ঢাকা (সিজেএফডি) আয়োজিত জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য ও সিজেএফডি’র সাবেক দুই প্রয়াত সভাপতি এম ওয়াহিদ উল্লাহ এবং শীলব্রত বড়ুয়ার স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিশ্ব প্রেক্ষাপটেও চরম মানবাধিকার অধিকার হরণকারীদের পক্ষে যারা অবস্থান নেয়, তারা এখন মানবাধিকারের প্রেসক্রিপশন দেয়, এটিই হচ্ছে পৃথিবী ও মানবসভ্যতার জন্য দুর্ভাগ্য বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি আমাদের দেশকে অপরাজনীতির হাত থেকে রক্ষা করতে হলে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব রয়েছে। সাংবাদিক সমাজ সেই ক্ষেত্রে সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, আজকের প্রেক্ষাপটেও পালন করবে।
প্রয়াত সাংবাদিক এম ওয়াহিদ উল্লাহ ও শীলব্রত বড়ুয়া সাংবাদিক সমাজের উজ্জ্বল মুখ ছিলেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তারা গণমাধ্যমের জন্য আজীবন কাজ করে গেছেন। সাংবাদিক হিসেবে লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে পেশাগতভাবে তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তাদের কাজ করে গেছেন।
একটি রাষ্ট্রের বিকাশের জন্য ভালো সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক সময় রাষ্ট্র পথ হারিয়ে ফেলে। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকেন তারাও অনেক সময় পথ হারিয়ে ফেলে, রাষ্ট্র যাতে সঠিকখাতে প্রবাহিত হয় এবং যারা দায়িত্বে থাকেন তারা যাতে খেই হারিয়ে না ফেলে সেক্ষেত্রে একজন সাংবাদিক কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আজকে যারা সাংবাদিক সমাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা ভালো সাংবাদিক তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন।
গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে এই পেশা ও গণমাধ্যমে অনেক চ্যালেঞ্জ যুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে অনেকের গণমাধ্যমের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা, ভুঁইফোড় অনলাইনের সাংবাদিক, মোবাইল সাংবাদিক -এ ধরনের নানা বিষয় আজকে যুক্ত হয়েছে। এতে করে দেখা যাচ্ছে যে, আসলে কে সাংবাদিক আর কে সাংবাদিক নয় এই পার্থক্যের সীমারেখাটা জনগণ টানতে পারে না। এ জন্য এখানে শৃঙ্খলা আনা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এ নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে দাঁতভাঙা জবাব দেবে মানুষ: তথ্যমন্ত্রী
মানবাধিকার দিবসে দেশে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও নেতাদের সম্পৃক্ত করুন: রাষ্ট্রপতি
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও জননেতাদের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ইমাম, ধর্মীয় নেতা, শিক্ষক এবং বিভিন্ন পেশাজীবীদের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও জননেতাদের অন্তর্ভুক্ত করলে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত হবে।
আরও পড়ুন: ডেনমার্কের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
রবিবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
'সবার জন্য স্বাধীনতা, সমতা ও ন্যায়বিচার' প্রতিপাদ্য সামনে রেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাজের পরিধি সারা দেশে বিস্তৃত উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কমিশন মানবাধিকার সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও নিশ্চিতকরণে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান পদক্ষেপ হলো মানবাধিকার ইস্যু সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা।
তিনি বলেন, মানবাধিকার সচেতনতা বৃদ্ধি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিদের প্রতিকারের পথ প্রশস্ত করবে।
তিনি পারস্পরিক সংলাপ, সভা, সেমিনার, কর্মশালা, শিক্ষা ও মানবাধিকার রক্ষায় সহযোগিতা বৃদ্ধির সব কার্যক্রমে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য কমিশনকে নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার সংস্কৃতির বিকাশে কমিশনকে গবেষণা ও প্রকাশনা বৃদ্ধি, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সার্বক্ষণিক মনিটরিং বৃদ্ধি, মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
দেশের যেখানেই মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটছে সেখানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপস্থিতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, কমিশনকে নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং নিপীড়কদের শাস্তি দেওয়ার জন্য সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে এবং শোষিত ও নিপীড়িতদের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক হতে হবে।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে দুর্নীতিবিরোধী সক্রিয় প্রচেষ্টার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
রাষ্ট্রপতি সব ধরনের সংঘাতের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে এবং নির্যাতিত ও নিপীড়িত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যুদ্ধ নয়, সংলাপের মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিদ্যমান বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতিতে যেকোনো বিবেকবান ব্যক্তি বিরক্ত বোধ করবে। যুদ্ধ, জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, মহামারি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্নভাবে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, গাজায় হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, লাখ লাখ মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বিশ্বের নীরবতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, অনেক শক্তিশালী দেশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, অনেক দেশ ও সংস্থা মানবাধিকারের নামে দ্বৈত নীতিতে লিপ্ত।
মানবাধিকার ইসলামকে সর্বজনীন ও সবার জন্য সমান হিসেবে বিবেচনা করতে হবে এবং কোনো বৈষম্য বা পক্ষপাতিত্ব করা উচিত নয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, 'আমি আশা করি, বিশ্বে যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে, সব দেশ, মানবাধিকার সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীরা জাতি, ধর্ম, দলমত নির্বিশেষে প্রতিবাদে সোচ্চার হবেন।’
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য সেলিম রেজা, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ার এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করলেন পাকিস্তান, মিশর, ভ্যাটিকান সিটি ও শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত
বিএনপি নেতারা কারাগারে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার: রিজভী
বিএনপির বন্দী নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন এবং সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির জেষ্ঠ নেতা রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সন্তুষ্ট করতে বিএনপির সকল বন্দীদের সব ধরনের সাধারণ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার জন্য বর্তমান আইজি প্রিজন মৌখিকভাবে সব কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
শবিবার (৯ নভেম্বর) ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এই অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, আইজি প্রিজন কারাবন্দি বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন ও অধিকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত করে সারা দেশের কারাগারগুলোকে হিটলারের গ্যাস চেম্বার ও কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করেছেন।
তিনি বলেন, 'নির্যাতনের কারণে কারাগারে থাকা বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন বিপাকে পড়েছেন।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হচ্ছে বুধবার
রিজভী দাবি করেন, কারাবন্দি বিএনপির নেতা-কর্মীদের কারাগারের ভেতরের কক্ষ থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আত্মীয়-স্বজনদের বন্দীদের সঙ্গে দেখা করতে, তাদের জন্য জামাকাপড় দিতে এবং ফোনে কথা বলতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর কারাগারগুলো এখন বিএনপির নেতা-কর্মীদের দ্বারা পরিপূর্ণ হওয়ায় কারাগারগুলো এখন প্রকৃত সামাজিক অপরাধীদের জায়গা নয়। সুতরাং, তিনি সেখানে ফ্যাসিবাদের নিপীড়নের সমস্ত পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন। জেলখানায় তিনি (শেখ হাসিনা) তার আদর্শে অনুপ্রাণিত কর্মকর্তা নিয়োগ করেছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা চান বিএনপি নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তারের আগে বাইরে যেমন হয়রানি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হন, কারাগারেও তারা তেমনি নির্যাতিত হন।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা ধরে রাখতেই তৈরি পোশাক খাতে বিপদ ডেকে আনছে সরকার: রিজভী
রিজভী বলেন,‘কারাগারের ভেতরে ভয়াবহ নিপীড়ন চলছে। এই নিপীড়ন নজিরবিহীন। এই নিপীড়ন ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। অতিমাত্রায় উৎসাহী কর্মকর্তারা আমাদের দলের বন্দীদের বিরুদ্ধে এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।’
তিনি বন্দীদের উপর এ ধরনের নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে বন্দীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রাক্কালে শাহবাগ থেকে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের তাড়িয়ে দেয়া এবং জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশে বাধা দেয়ার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপির জেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি আরও বলেন, ‘জোরপূর্বক গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিরা নিজেদের পক্ষে কথা বলতে পারেন না। গুম, ক্রসফায়ার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এই সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এমনভাবে টিকিয়ে রাখতে চায়, যাতে তার অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে না পারে।’
রিজভী দাবি করেন, শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ বিএনপির ১৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত তাদের দলের ২০ হাজার ৬৬৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামী ১০ ডিসেম্বর মানববন্ধন করবে বিএনপি: রিজভী
মানবাধিকার দিবসে দেশে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
আগামী ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে দেশে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী বলেন, ‘মানবাধিকার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকারের কথা বলে কোনো কোনো দেশকে দমনের চেষ্টা করা হয়। দেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, অথচ বিবৃতিজীবীরা হারিয়ে গেছে।’
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী: তথ্যমন্ত্রী
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কোনো কোনো সন্ত্রাসীর পক্ষেও বিবৃতিজীবীরা কেউ কেউ সোচ্চার হয়। কিন্তু সেই সন্ত্রাসী যে এত মানুষ মারল, সেটি নিয়ে কোনো কথাবার্তা নেই। পৃথিবীতে কিছু মানবাধিকার সংগঠন আছে যেগুলো মূলত মানবাধিকারের ব্যবসা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে সমস্ত বিশ্ববেনিয়া মানবাধিকারের কথা বলে এবং বাংলাদেশেও যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, ফিলিস্তিনে পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষসহ হাজার হাজার নারী ও শিশুকে হত্যা করা হলো, কিন্তু এ নিয়ে তাদের বা বড় বড় সংগঠনগুলোর কোনো কথা বা বিবৃতি নেই।’
তিনি বলেন, ‘অথচ তারা বরিশালে কোথায় একজন আরেকজনকে ঘুষি মারল, কোথায় কিছু মানুষ একজনকে ধাওয়া করল সেজন্যও বিবৃতি দিয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং এরপর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি এবং সেটিকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করা।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে নির্বিচারে সেনা অফিসার ও বিমান বাহিনীর অফিসারদের বিনা বিচারে হত্যা করা, নামের মিল আছে সেজন্যই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া, এমন কি ফাঁসি কার্যকর হবার পর ফাঁসির রায় হয়েছে এমন ঘটনাও আছে।’
তিনি বলেন, ‘তারপর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব করা হয়েছে। এগুলো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘কিছু বিবৃতিজীবী আছে, বিবৃতি দেওয়াই তাদের পেশা। বাংলাদেশেও কিছু আছেন। কিন্তু সবসময় যারা এ ধরনের বিবৃতি দেন, দেশে এখন যেভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, তাদের বিবৃতি এখন দেখতে পাচ্ছি না।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই বিবৃতিজীবীরা কই? জনগণ এদের খুঁজছে, আমিও খুঁজছি। আমি একটু উদ্বিগ্ন তাদের জন্য। তারা জ্বর কিংবা ডেঙ্গুতে আক্রন্ত হলো কি না তা নিয়ে মানুষ চিন্তায় আছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়ে একই হাসপাতালে একসঙ্গে ৫০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আরেকটি হাসপাতালে হামলা চালিয়ে হাসপাতালকে অকেজো করে দেওয়ার পর সেখানে আইসিইউতে থাকা সব মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। এই ধরনের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন বিশ্ববেনিয়ারা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে। আবার ইসরাইলি বাহিনী যাতে ভালোমতো বোমা বর্ষণ করতে পারে সেজন্য সহায়তাও করছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপিই দেশের প্রথম কিংস পার্টি: তথ্যমন্ত্রী
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এই মানবাধিকার লঙ্ঘনে আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমি প্রথম থেকেই এটার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছি, থাকব। আমাদের সরকার ও প্রধানমন্ত্রীও সোচ্চার আছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গিয়ে এটার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন। আরব রাষ্ট্রগুলোর সমস্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বসে এই ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করার জন্য তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কেউ হরতাল-অবরোধের ডাক দিতে পারে, সরকার পতনের ডাক দিতে পারে, সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে পারে, এটিই গণতান্ত্রিক ও বহুমাত্রিক সমাজের রীতি। কিন্তু ঘরে বসে সেই ডাক দিয়ে গাড়ির মধ্যে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, সেটি তো কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়। এগুলো একদিকে যেমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অপরদিকে মানুষের অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করা। আমি আশা করব, সাংবাদিকরা এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলবেন, কলম ধরবেন।’
‘শ্রমিক অধিকারের নামে বড়লোক এজেন্টদের মুখোশ উন্মোচন করুন’
শ্রমিক অধিকারের নামে বছরে ১২ বার বিদেশ সফরকারী দুই-একজন শ্রমিক নেতা কারো এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, দেখা গেল, আল্পনা-কল্পনা-জল্পনা আক্তাররা বছরে ১২ বার বিদেশ গেছে, ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা বিমান ভাড়া দিয়েছে। এদের কারো কারো আবার গাড়ি আছে, ঢাকা শহরে বড় বড় ফ্ল্যাট আছে।
তিনি বলেন, শ্রমিক সমাবেশে যাওয়ার সময় কিছু দূরে গাড়ি রেখে হেঁটে কিংবা রিকশায় যান, যদি শ্রমিকরা গাড়ি দেখে ফেলে। এরা কারো এজেন্ট হিসেবে যে কাজ করে সেটি আজ স্পষ্ট।
মন্ত্রী বলেন, এ সমস্ত এজেন্টের ব্যাপারেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমি সাংবাদিক সমাজের কাছে অনুরোধ জানাব তাদের মুখোশ উন্মোচন করার জন্য।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি তপন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি রুবেল খান, সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটু, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ‘আগুনসন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি তথ্যমন্ত্রীর আহ্বান
বিএনপি-জামায়াত মানবাধিকার দিবসে বিশৃঙ্খলার ষড়যন্ত্র করছে: কাদের
বিএনপি ও জামায়াত জোট মানবাধিকার দিবসে সারাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণের অংশগ্রহণ না থাকায় তারা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের হতাশা ভুলে টাইগাররা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: জি এম কাদের
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি এমন একটি দল যারা ভুল রাজনীতিতে লিপ্ত এবং জামায়াতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে বিএনপি জনগণের কাছ থেকে বিচ্যুত হচ্ছে। এক পর্যায়ে দেখা যাবে জামায়াত বিএনপির প্রধান নেতৃত্বে থাকবে। বিএনপি জামায়াতের বি-টিম হয়ে যাবে।’
বিএনপির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবারও তার আগের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ‘তারা (বিএনপি) নিজেরাই বিএনপির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছে। সাহস থাকলে তারা বেরিয়ে আসুক।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে বিরোধী দল থাকবে। তৃণমূল বিএনপি সবচেয়ে বড় জোট, সুপ্রিম পার্টিসহ আরও অনেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।’
আরও পড়ুন: ১০ ডিসেম্বর আ. লীগের সমাবেশের অনুমতি দেয়নি ইসি: ওবায়দুল কাদের
জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত নয় আওয়ামী লীগ: কাদের
বিএনপি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, বিএনপি মানবাধিকারের কথা বলতে পারে না, কারণ তারা নিজেরাই চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী। তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছেন, রক্তের উপর দাঁড়িয়ে দলকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়া ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে তারা পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল, এখনও করছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তর সম্মেলন কক্ষে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৬০তম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে আহমেদ ফিরোজ গ্রন্থিত ‘সোহরাওয়ার্দী’- গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দগ্ধ মানুষের আর্তনাদ কি বিএনপি-জামাতের কানে পৌঁছায় না: তথ্যমন্ত্রী
গ্রন্থকার, তথ্য অধিদপ্তরের সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার খালেদা বেগম এবং মো. আবদুল জলিল মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা এবং এরপর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করা। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করা হয়েছিল। সেটি জিয়াউর রহমানের হাত দিয়ে হয়েছিল। এরপর বাংলাদেশে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে ১৯৭৭ সালে নির্বিচারে সেনা ও বিমান বাহিনীর অফিসারদেরকে বিনা বিচারে হত্যা করা।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শুধু নামের মিল থাকায় মানুষকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার সময় সে চিৎকার করে বলেছে আমি সেই ব্যক্তি নই, আমি সেই ব্যক্তি নই; কিন্তু কে শোনে কার কথা। এমনও ঘটেছে, ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরে রায় হয়েছে। অল দিজ আর ডকুমেন্টেড।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের এডিসি ছিলেন যিনি, তিনি এখন কানাডায় থাকেন। তিনি নিজে বলেছেন, এই মৃত্যুদণ্ডের ফাইলগুলো জিয়াউর রহমান সকালবেলা নাস্তার সময় সই করতেন। বিদেশ যাত্রাকালে প্লেনে ওঠার আগে সিঁড়িতেও মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেছেন। এভাবে মানবাধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তাদের গ্রেনেড হামলায় ২২ জন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ দুইজন অজ্ঞাত পরিচয় নিহত এবং ৫০০ জন আহত হয়েছিল। সেই হামলার পর বিচার বিভাগীয় তদন্তের রিপোর্ট ছিল গাঁজাখুরী। আর এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বেগম খালেদা জিয়াসহ তার সংসদ সদস্যদের হাস্যরস, চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ নিয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচি বলতে চোরাগোপ্তা হামলা করে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো আর মানুষের উপর হামলা পরিচালনা করা। তারা তাদের সন্ত্রাসীদের নামিয়েছে, নেশাখোরদের টাকা দিয়ে এগুলো করাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে দিনমজুরকে সারাদিনের ৮০০-১০০০ টাকা মজুরির জায়গায় ২০০০ টাকা ধরে দিয়ে বলে এটা মেরে দিয়ে আসো। এগুলো দুষ্কৃতিকারীদের কাজ। বিএনপি-জামায়াত এ দুটি সংগঠন এখন দুষ্কৃতিকারী সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে। আমরা দুষ্কৃতিকারীদের দমন করতে বদ্ধপরিকর।’
আওয়ামী লীগের জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন এবং জাতীয় পার্টি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত ১৪ দলীয় জোটগতভাবেই আমরা নির্বাচন করব। আমাদের কাছে শরিকদের সবসময় গুরুত্ব আছে, সেজন্য জোটগতভাবে আমরা নির্বাচন করছি। আমাদের এককভাবে নির্বাচন করার শক্তি, ক্ষমতা ও সমর্থন আছে। কিন্তু শরিকদেরকে গুরুত্ব দেওয়া হয় বিধায় আমরা জোটগতভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর জাতীয় পার্টি প্রায় ৩০০ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে। তারা যেভাবে নির্বাচন যুদ্ধে নেমেছে সেজন্য তাদেরকে অভিনন্দন জানাই। জাতীয় পার্টির সঙ্গে ২০০৮ সালে আমরা জোটগতভাবে মহাজোট গঠন করেছিলাম, গতবারও তারা আমাদের সঙ্গে ছিল, এবারও সেটি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’
আরও পড়ুন: যারা ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে, তারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার অধিকার হারিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় সর্বজনীন আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
যারা ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে, তারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার অধিকার হারিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গাজায় নিরীহ নারী ও শিশুদের প্রতি যে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চলছে, একবিংশ শতাব্দীতে এসেও তা বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে।
তিনি বলেন, গাজায় এমন মানবিক বিপর্যয়েও যারা ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে, তারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার অধিকার হারিয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নামক ‘কারাগারে’ বন্দি তাদের নেতারা: তথ্যমন্ত্রী
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমি আশা করব ফিলিস্তিনিদের এ আর্তনাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ সবখানে পৌঁছাবে এবং অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। আমাদের সরকার ও প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ছিলেন, আছেন ও থাকবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। তিনি ফিলিস্তিনের প্রতি আমাদের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আমি তাকে জানিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনের পক্ষে বলেছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে এ সমস্যা সমাধান হবে। আমরা ‘টু স্টেট’ পলিসিকে সমর্থন করি। ফিলিস্তিনে পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া এ সমস্যার সমাধান নেই।
ফিলিস্তিনে চলমান সংকট নিরসনে আরব বিশ্বের নেতাদের ভূমিকা নিয়ে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত হতাশা ব্যক্ত করেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চার হাজার কিলোমিটার দূরে থেকেও যেভাবে প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেজন্য রাষ্ট্রদূত তার প্রশংসা করেছেন।
বাংলাদেশের পার্লামেন্টের সংসদ নেতা হিসেবে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশেষ আলোচনার আয়োজন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷
একইসঙ্গে গাজায় যে হত্যাযজ্ঞ চলছে তার প্রতিবাদ করেছেন তিনি৷
আরও পড়ুন: দগ্ধ মানুষের আর্তনাদ কি বিএনপি-জামাতের কানে পৌঁছায় না: তথ্যমন্ত্রী
জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় সর্বজনীন আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
বাংলাদেশে মানবাধিকার নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূতের মন্তব্য 'মিথ্যা ও বানোয়াট': পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
জাতিসংঘের তিন বিশেষ দূতের (এসআর) উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মনে হচ্ছে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে 'মিথ্যা ও বানোয়াট' তথ্য দিয়ে সরকারকে ‘কলঙ্কিত করার ইচ্ছায় তারা প্রভাবিত’ হয়েছেন।
ওএইচসিএইচআর-এর ১৪ নভেম্বরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের একতরফা পর্যবেক্ষণ বিশেষ করে তাদের সঙ্গে সরকারের সক্রিয় সম্পৃক্ততার প্রেক্ষাপটে অসৎ ও উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জাতিসংঘের তিন বিশেষ দূতের (এসআর) পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তু নিয়ে প্রশ্ন তুলতে সরকারকে বাধ্য করেছে।’
বিশেষ দূত তিনজন হলেন- মতামত ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রচার ও সুরক্ষায় বিশেষ দূত আইরিন খান, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংঘের স্বাধীনতার অধিকার সম্পর্কিত বিশেষ দূত ক্লিমেন্ট ন্যালেটসোসিভোল এবং মানবাধিকার রক্ষাকারীদের পরিস্থিতি সম্পর্কিত বিশেষ দূত মেরি ললর।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, দূতদের মন্তব্য এবং তাদের সম্ভাব্য উদ্দেশ্য সম্বলিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির সময়টি কৌতূহলপূর্ণ।
বাংলাদেশের জবাবে বলা হয়, বাংলাদেশের ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউয়ের (ইউপিআর) আগের দিন অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর দেশের মানবাধিকার নিয়ে তারা তাদের মন্তব্য তুলে ধরেন। যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ তাদের সুপারিশ করার সময় মানবাধিকার উপভোগের অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ আইনি, নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের প্রশংসা করেছে।
বিশেষ দূতদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগে মূলত বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিশেষ করে বর্তমান শ্রমিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক সহিংসতা এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, আদিলুর রহমান খান ও রোজিনা ইসলামের মতো অন্যান্য ব্যক্তিগত মামলা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম দেশ যেখানে আইনের শাসন বিদ্যমান। সে অনুযায়ী, তিনটি মামলা স্বাধীন বিচার বিভাগের আইন আদালতে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে, সরকারের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন: কোয়াত্রার সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠকে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে না: মোমেন
বিশেষ করে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষেত্রে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, তার বিরুদ্ধে মামলাটি তার মালিকানাধীন একটি কোম্পানির শ্রমিকদের তাদের মুনাফার ন্যায্য অংশ থেকে বঞ্চিত করার বিষয়ে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘সুতরাং এটি বিস্ময়কর যে বিশেষ দূতরা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলছে যখন সরকার প্রকৃতপক্ষে শ্রম ও মানবাধিকার রক্ষা করছে।’
তা ছাড়া, ইউপিআর অধিবেশনে, দেশে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষায় সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার সময়, বিশেষ দূতদের উত্থাপিত বেশিরভাগ বিষয় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল স্পষ্ট করেছে।
মানবাধিকার এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিলকে আশ্বস্ত করে বলেছে, বিভিন্ন দেশের সুপারিশ বাস্তবায়নে তারা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘সরকার বুঝতে পারছে না ইউপিআরের সময় দেওয়া সুপারিশগুলো তুলে ধরতে সরকারকে কোনো সময় না দিয়ে এত তাড়াহুড়ো করে বিশেষ দূতদের এই জাতীয় মন্তব্য প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা কী।’
সরকার বিশেষ দূতদের আচরণকে তাদের নিজ নিজ ম্যান্ডেটের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও উপযুক্ত নয় বলে মনে করে। তারা মানবাধিকার কাউন্সিলের বিশেষ পদ্ধতির অংশ যা স্বাধীনভাবে কাজ করে।
এছাড়াও এতে আশা করা হয় তারা তাদের মানবাধিকার লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নে সরকারকে সমর্থন করার জন্য মানবাধিকার সম্পর্কে প্রতিবেদন ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য তাদের স্বীকৃতি বা গ্রহণযোগ্যতাকে ব্যবহার করবে।
বাংলাদেশ সরকার আশা করে, বিশেষ দূতদের আচরণবিধি অনুযায়ী তাদের আদেশ পালনে নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ থাকবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, দুঃখজনকভাবে বিশেষ দূতদের ক্ষেত্রে এটি ঘটেনি, যারা এই ধরনের নেতিবাচক পর্যবেক্ষণ নিয়ে এসেছিল। মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতিতে বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক ইচ্ছা ও প্রচেষ্টাকে পুরোপুরি অস্বীকার করেছে তারা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব দলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান ওয়াশিংটনের
২০২৩ সালের নভেম্বরে ইউপিআর সম্পর্কিত ওয়ার্কিং গ্রুপের সদ্য সমাপ্ত অধিবেশনে ইউপিআর পরীক্ষার আওতায় ছিল মাত্র চৌদ্দটি দেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘মজার বিষয় হলো, বিশেষ দূতরা কেবল বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে তারা অগণিত উন্নতির বিষয়ে নীরব ছিল কারণ এই পরীক্ষার রিভিউতে অংশগ্রহণকারী বেশিরভাগ দূতরা প্রশংসা করেছে।’
‘এটি করে তারা বিশেষ দূত হিসেবে তাদের জাতিসংঘের পরিচয়কে অসম্মান করেছে। তারা মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের মিডিয়া সেন্টারের অপব্যবহার করে তাদের ব্যক্তিগত ও পক্ষপাতদুষ্ট মতামত প্রচার করে বৃহত্তর শ্রোতাদের কাছে পৌঁছেছে,’ বলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সরকার ইউপিআরের সময় জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সুপারিশকে গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে স্বাগত জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইউপিআর-এর পরপরই একই বিষয়ে নেতিবাচক মূল্যায়ন করে বিশেষ দূতরা সদস্য দেশগুলোর সুপারিশ এবং পর্যবেক্ষণকে এক প্রকার অসম্মান করেছে।
আরও পড়ুন: শ্রম অধিকার রক্ষায় সরকার ও শ্রমিকদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে যুক্ত তা তুলে ধরেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী: মুখপাত্র মিলার
তারা ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি নিরাপদ, উন্মুক্ত ও অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের ওপর জরুরি এবং গুরুত্ব আরোপের জন্য মানবাধিকার কাউন্সিল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের’ প্রতি আহ্বান জানান। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ওপর উচ্চতর নৈতিক অবস্থান নেওয়া এবং ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রতিবেদন গ্রহণে প্রভাবিত করার চেষ্টাও করেন তারা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের আহ্বান তাদের কর্তব্যের আহ্বানের চেয়ে অনেক বেশি। এই তিন বিশেষ দূতের মধ্যে একজন বাংলাদেশের এবং সম্প্রতি তিনি সমালোচনামূলক পর্যবেক্ষণে অভূতপূর্ব উৎসাহ দেখিয়েছেন। তিনি অন্যান্য দেশের বিষয়ে আপেক্ষিক নীরবতা বজায় রেখেছেন। এত আংশিক, পক্ষপাতদুষ্ট, বিষয়ভিত্তিক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে মনোনিবেশ করার ফলে বিশেষ দূতরা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে।’
বাংলাদেশ সরকার একটি সুষ্ঠু মানবাধিকার ব্যবস্থার জন্য বিশেষ পদ্ধতির স্বীকৃতিপ্রাপ্তদের ভূমিকার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে,‘যদিও তারা আশা করে যে বিশেষ দূতরা তাদের স্বীকৃতির প্রতি বিশ্বস্ত থাকবেন, তবে এটি আশা করে যে মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় তাদের আদেশগুলো নিরপেক্ষভাবে পূরণ করতে সহায়তা করবে এবং তাদের বিষয়ভিত্তিক ঘোষণার প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ব্যবহৃত না হওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকবে।’
আরও পড়ুন: মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার দেশগুলো অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগ নিয়ে প্রায়ই নীরব থাকে: শাহরিয়ার