দেশব্যাপী করোনার গণ টিকাদান কার্যক্রম শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়েও এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উপজেলার সবকটি (চারটি) ইউনিয়নে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে টিকাদান।
আরও পড়ুনঃ সারাদেশে গণটিকা কার্যক্রম শুরু
সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত উপজেলার উজানচর ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় মানুষের ভিড়। প্রথম দিকে শৃঙ্খলা ছাড়াই নারী-পুরুষের জটলা তৈরি হয়। পরে স্থানীয়দের পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার তদারকিতে নারী, পুরুষ পৃথকভাবে লাইন ধরে দাঁড়ান। একটি লাইনে শুধু নারীরা ছিলেন। পুরুষ সংখ্যা বেশি হওয়ায় দুটি লাইন করা হয়। তবে নিবন্ধন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। সার্ভার জটিলতার কারণে অনেকেই নিবন্ধন করতে পারছিলেন না। তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়। তবে টিকা নেয়ার পর বিশ্রামের জন্য ছিল না কোন বিশেষ ব্যবস্থা।
টিকার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিভাগকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সহযোগিতা করছেন গোয়ালন্দ ব্লাড ডোনার ক্লাবের সদস্যরা।
আরও পড়ুনঃ কুমিল্লায় গণ টিকাদান শুরু
বকারটিলা থেকে আসা প্রবীন নাগরিক আলমাছ সরদার বলেন, প্রায় দুই ঘন্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখন পর্যন্ত টিকার কার্ড সংগ্রহ করতে পারিনি। কিন্তু কতক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে থাকা যায়। আমার মতো এরকম অনেকে লাইনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছেন।
টিকা নিতে সাহেব আলী এসেছেন স্ত্রী আম্বিয়া খাতুনকে নিয়ে। কিন্তু নিবন্ধন করতে না পারায় টিকা নিতে পারছিলেন না। সাহেব আলী বলেন, তিন দিন ধরে এস ঘুরে যাচ্ছি। বার বার বলছে সার্ভার জটিলতার কারণে নিবন্ধন করা যাচ্ছে না।
ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা সুলতান উদ্দিন বলেন, সার্ভার সমস্যার কারণে আমরা অনেকের নিবন্ধন করতে পারছি না। আজ শনিবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মাত্র ৫-৬ জনের মতো নিবন্ধন করতে পেরেছি।
আরও পড়ুনঃ সিলেটে ৭ আগস্ট থেকে গণটিকাদান শুরু
উজানচরের নলিয়া পাড়া থেকে টিকা নিতে আসা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থী মো. সৌরভ বলেন, বর্তমানে ছুটিতে বাড়ি আছি। যেহেতু বয়স ২৫ বছর পার হয়ে গেছে, তাই বাবাকে সাথে করে টিকা নিতে এসেছি। অহেতুক টিকা না নিয়ে এক ধরনের ঝুঁকির মধ্যে থাকা।
টিকা প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সহকারী মো. রুবেল শেখ জানান, আমরা ৩০০ ভায়াল ডোজ হাতে পেয়েছি। আমরা ৬০০ জনকে টিকা প্রদান করতে পারব। এক্ষেত্রে বেলা ৩টা পর্যন্ত টিকা দেয়ার কথা থাকলেও সকাল ৯টার পর থেকে শুরু করে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৩২০ জনের মতো টিকা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে। তবে ৬০০ জনকে দিকে যতক্ষণ পর্যন্ত সময় লাগে ততক্ষণ পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করবেন বলে তিনি জানান।
গোয়ালন্দ ব্লাড ডোনার ক্লাবের পাঁচ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করছেন। দলের সমন্বয়কারী এনামুল হক রাহাত বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে যারা নিবন্ধন করতে পারেননি তাদের জাতীয় ভোটার আইডি কার্ডের ভিত্তিতে হাতে কলমে নিবন্ধ করে টিকা গ্রহণে সহযোগিতা করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসিফ মাহমুদ বলেন, উপজেলার সবকটি (চারটি) ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে ৩০০ ভায়ালের মাধ্যমে ৬০০ জনকে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সার্ভার জটিলতার কারনে নিবন্ধন কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা ভোটার আইডি কার্ডের ভিত্তিতে হাতে লিখেই নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করে টিকা গ্রহণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।