সারাদেশের ন্যায় সিলেটে আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনার টিকাদান শুরু হবে। এছাড়া নগরের ২৭টি ওয়ার্ডেও আলাদা আলাদা কেন্দ্র করে টিকাদান শুরু হবে।
সিলেটের সিভিল সার্জনের কার্যলয় সূত্র জানায়, জেলায় ১০০ ইউনিয়নে ১০০ টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে। টিকা কেন্দ্রগুলো যাছাই বাছাইয়ের কাজ চলছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিজ নিজ উপজেলাভুক্ত ইউনিয়নগুলোর টিকাদান কেন্দ্রের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই তালিকা যাছাই বাছাই করছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। এছাড়া টিকা দান কর্মীদের প্রশিক্ষণের কাজ চলছে।
এদিকে, সিলেট সিটি করপেোরেশনের (সিসিক) ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ৮১টি টিকাদান কেন্দ্র করা হবে। প্রতি ওয়ার্ডে হবে ৩টি কেন্দ্র। তবে এখন পর্যন্ত টিকা কেন্দ্র চূড়ান্ত হয়নি। মঙ্গলবারের মধ্যে টিকাদান কেন্দ্র চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সিসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
সিটি করপোরেশনেও টিকাদান কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণে সহায়তা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ। সোমবার নগর ভবনে ৪২ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা প্রদানের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: কেসিসি এলাকায় ৭ আগস্ট থেকে টিকা দেয়া শুরু
টিকা প্রদানের জন্য সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীর পাশপাশি স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগি সংস্থার সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, জেলার ১০০টি ইউনিয়নে ১০০টি টিকাদান কেন্দ্র হবে। এখনও কেন্দ্রগুলো ফাইনাল হয়নি। যাছাই বাছাইয়ের কাজ চলছে। প্রতি কেন্দ্রে একজন টিকাদানকারী ও ৩-৪ জন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাঠ কর্মী, কমিউনিউটি হাসপাতালের কর্মীরা এই কাজ করবেন। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের সহায়তা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ কাজ শুরু হয়েছে। অনলাইনে তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এছাড়া দু’একদিনের মধ্যে স্ব স্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
ডা জন্মেজয় বলেন, এখন আমরা প্রতি বুথে দিনে সর্বোচ্চ ২০০ টিকা দিয়ে থাকি। ইউনিয়ন কেন্দ্রগুলোতেও এই হিসেবে টিকা প্রদানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে তা নির্ভর করবে কি পরিমাণ টিকা আমরা পাচ্ছি তার উপর।
টিকা কেন্দ্রগুলোতে স্পট রেজিস্ট্রেশন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে টিকা দেয়া হবে।
টিকা দান কেন্দ্র ও ভ্যাকসিন প্রাপ্তির বিষয়টি ৫ আগস্টের মধ্যে চূড়ান্ত হবে বলে জানান তিনি। টিকার মান রক্ষার আইসবক্সে করে কেন্দ্রগুলোতে টিকা নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান এই চিকিৎসক।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, আমরা নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩টি করে কেন্দ্র করবো। কোনো ওয়ার্ডে ৩টি কেন্দ্র করা সম্ভব না হলে একটি কেন্দ্রে দুটি বুথ করবো। ওয়ার্ড কাউন্সিলররা স্থানীয় ব্যক্তিদের পরামর্শক্রমে কেন্দ্র ঠিক করছেন। মঙ্গলবারের মধ্যে কেন্দ্র চুড়ান্ত করে আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো।
টিকা প্রদানের জন্য আমাদের ১৬০-১৭০ জন কর্মী প্রয়োজন। তাদের বাছাই করে আমরা প্রশিক্ষণ শুরু করেছি। সোমবারও নগর ভবনে ৪২ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে বাকিদের দেয়া হবে। এনজিওদেরও সহযোগিতা নিচ্ছি আমরা।
আরও পড়ুন: সিলেটে করোনার টিকা নিবন্ধন সাময়িক বন্ধ
জাহিদ বলেন, আমরা প্রতি বুথে দিনে সর্বোচ্চ ২৫০ টিকা প্রদান করে থাকি। ওয়ার্ড পর্যায়ের বুথগুলোতেও এই হারে টিকা দেয়া হবে।
বর্মানে সিলেট নগরীর দুটি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। কেন্দ্র দুটি হচ্ছে ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল ও পুলিশ লাইনস হাসপাতাল। এদুটি কেন্দ্রে প্রতিদিন ১২শ থেকে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ টিকা নিচ্ছেন।