ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে অ্যালার্ট-২ জারি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এটি বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর মোখার কারণে চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত জারির পর বন্দর কর্তৃপক্ষ শুক্রবার (১২ মে) বিকালে নিজস্ব এ অ্যালার্ট জারি করে।
এ ব্যাপারে বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক সংকেত ঘোষণা করলে অ্যালার্ট জারি করা হয়। এটা বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, বেড়েছে ঘূর্ণন
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে সাগরে অবস্থানকরা লাইটার জাহাজগুলোকে সদরঘাট থেকে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকার দিকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
জেটি ও বহির্নোঙরে থাকা জাহাজগুলোকে ইঞ্জিন চালু রাখতে বলা হয়েছে যাতে তাৎক্ষণিক মুভমেন্ট করতে পারে।
এছাড়া বন্দরের নিজস্ব জাহাজগুলোকে নিরাপদে থেকে ডাবল মুরিং করতে বলা হয়েছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা রবিবার (১৪ মে) দুপুর নাগাদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮ দশমিক দুই ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
এটি শুক্রবার (১২ মে) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার পাঁচ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এছাড়া এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: এখনো শান্ত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত যে গতিতে ঘূর্ণিঝড় মোখা এগোচ্ছে, তাতে রবিবার দুপুর নাগাদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল ও মিয়ানমারের উত্তর-উপকূল দিয়ে এটি অতিক্রম করতে পারে।
এছাড়া উপকূলে আঘাত হানার চার থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে মোখা শক্তি হারাবে।
এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিদ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।