গত ২৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের ক্যাশ অফিসে টাকা হিসাবের সময় চুরির বিষয়টি ধরা পড়ে। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের রেলের ইতিহাসে এ এক নজিরবিহীন কাণ্ড।
দুই স্তরে নিরাপত্তার তালা ভেঙে সিন্দুক থেকে তিনটি স্টেশনের টিকিট বিক্রি বাবদ প্রাপ্ত টাকা খোয়া গেলেও ট্রেনটিতে দায়িত্ব পালনকারীদের কেউই এ সম্পর্কে জানেন না বলে দাবি করেছেন। ক্যাশ সেইফের ভেতরে স্টেশন থেকে দেয়া টাকার ব্যাগ ও টাকা আদায়ের রশিদ অক্ষত পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: কোরিয়া থেকে ১৫০টি মিটারগেজ কোচ কিনছে রেলওয়ে
চুরির এ ঘটনা তদন্ত করতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পূর্বঞ্চল রেলওয়ে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকা-নোয়াখালী রুটের মাইজদী, মাইজদী কোর্ট স্টেশন ও নাথেরপেটুয়া স্টেশনে টিকিট বিক্রির ৯২ হাজার টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। গত ২৯ ডিসেম্বর নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট বিক্রির এসব টাকা ওই দিনের সমতট এক্সপ্রেস ট্রেনে পাঠানো হয়। ট্রেনের গার্ড শামসুল আলমের নিরাপত্তা হেফাজতে ১৬৯ নম্বর ক্যাশ সেইফটি পাঠানো হয় লাকসাম স্টেশনে। এ ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্যকে রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেই ট্রেনে কোনো নিরাপত্তা সদস্য ছিল না।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশু পরিবহন করবে রেলওয়ে
লাকসাম স্টেশনের মাস্টার শাহাবুদ্দিনকে ক্যাশ সেইফটি অক্ষত অবস্থায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন শামসুল আলম। তবে শাহাবুদ্দিন বলছেন, একটি সিল ছেঁড়া থাকার কথা তাকে জানানো হয়েছিল। তখন তিনি আরেকটি সুরক্ষা সিল দিয়েছিলেন।
দায়িত্ব অবহেলার কারণে অথবা চোরের সাথে যোগসাজশ ছাড়া ট্রেনের গার্ডরুম থেকে টাকা চুরির কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: রেলওয়েকে সারা দেশে পণ্য পরিবহন করতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
সূত্র জানায়, নোয়াখালী থেকে আসা সমতট এক্সপ্রেসের ১৬৯ নম্বর ক্যাশ সেইফে ছয়টি স্টেশনের টাকা ছিল। তার মধ্যে তিনটি স্টেশনের ব্যাগ ও রশিদ অক্ষত থাকলেও টাকা পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং গার্ডের দায়িত্বে অবহেলার কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। ক্যাশ সেইফটি গার্ডের কক্ষে থাকার কথা থাকলেও তা নেয়া হয়েছিল মালামালের বগি লাগেজ ভ্যানে।
বিষয়টি অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী বলেন, কমিটির তদন্তে কারও গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ৪০টি ইঞ্জিন কেনার চুক্তি সই
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এর সাথে যিনি জড়িত বা যার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে তাকে টাকাগুলো ফেরত দিতে হবে।’