বৃহস্পতিবার খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদ সম্মেলনে কর্মবিরতি স্থগিতের এ ঘোষণা দেয়া হয়।
এসময় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, ‘রোগীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ৭২ ঘণ্টার জন্য স্থগিত করা হয়েছে। ডা. রকিব হত্যা মামলার অন্যান্য আসামিকেও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ও সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে পরবর্তীতে আলোচনাক্রমে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
এ সময় অন্যান্য চিকিৎসক নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। বিএমএর আহ্বানে বুধবার বিকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছিলেন খুলনার চিকিৎসকরা।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির জানান, বুধবার রাতে ডা. রকিব হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি জমির, আবুল আলী, গোলাম মোস্তফা ও খাদিজাকে ঢাকার গাজীপুরের টঙ্গী এবং খুলনার রূপসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত চার আসামির তিনজন রয়েছে।
নিহত চিকিৎসক মো. আব্দুর রকিব খান
গ্রেপ্তার হওয়া জমির মৃত শিউলী বেগমের ভাই, আবুল আলী শিউলির স্বামী, খাদিজা শিউলির ভাবী ও গোলাম মোস্তফা শিউলির চাচা।
মঙ্গলবার রাতে আবদুর রহিম নামের আরও একজনকে আটক করা হয়। পরে তাকে ডা. রকিব হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বুধবার দুপুরে নিহত চিকিৎসকের ছোট ভাই খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যার ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়।
এর আগে ডা. রকিব খানের হত্যায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিতে মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যেই খুলনায় সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করেন চিকিৎসকরা। বুধবার বিকাল থেকে শুরু হওয়া এ কর্মবিরতির কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েন।
উল্লেখ্য, নগরীর মোহাম্মদ নগরীর পল্লবী সড়কের বাসিন্দা আবুল আলীর স্ত্রী শিউলী বেগমকে ১৪ জুন সিজারের জন্য রাইসা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ওই দিন বিকাল ৫টায় অপারেশন হয়। বাচ্চা ও মা প্রথমে সুস্থ ছিলেন। পরে রোগীর রক্তক্ষরণ হলে ১৫ জুন সকালে শিউলী বেগমকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে ১৫ জুন রাতে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা ১৫ জুন রাত পৌনে ৯টার দিকে রাইসা ক্লিনিকে গিয়ে ডা. রকিবকে মারধর করে। এক পর্যায়ে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন রকিব। পরে তাকে প্রথমে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে ১৬ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ডা. রকিব খান।