আরও পড়ুন: শীতে ঠাণ্ডা না গরম কোন পানিতে গোসল?
রাস্তায় বের হলেই কুয়াশায় গা ভিজে যাচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে কুয়াশার পরিমাণ বাড়তে থাকে। বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে। ফলে রাস্তা-ঘাট, মাঠ ভিজে যাচ্ছে কুয়াশায়। জেলায় সব থেকে কষ্টে রয়েছে দিনমুজুর, রিকশা-ভ্যানচালক, ইজিবাইক চালক, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিকসহ ছিন্নমুল মানুষ। সকালের ঠান্ডায় কাজে যোগ দিতে দুর্ভোগে পড়ছেন এসব খেটে খাওয়া মানুষেরা। ঠান্ডার কারণে হাত-পা জড়ো হয়ে আসায় কাজ করতে পারছেন না তারা। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে জেলার হাসপাতালগুলোতে শীত ও শীতজনিত রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে।
জেলা শহরের ডোকরোপাড়া এলাকায় গৃহপরিচারিকার কাজ করেন সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি জানান, সকালে খুব কুয়াশা থাকে। বাড়ি থেকে বের হওয়া যায় না। তারপরও বের হতে হয়। কাজ না করলে তো খাবার জুটবে না।
জেলা শহরের জ্বালাসী এলাকার সহিদা বলেন, রাজ মিস্ত্রীর কাজ করি। এক সপ্তাহ ধরে কোনো কাজ নেই, সকালে আসি দুপুরে ফিরে যাই। কাজ কাম না করলে খাবো কিভাবে।
আরও পড়ুন: শীতের তীব্রতা বেড়েছে নওগাঁয়
রিকশা চালক আসলাম হোসেন বলেন, দশ হাত দূরেও ঠিকমতো কোনো কিছু দেখা যায় না। রিকশায় তেমন কোনো যাত্রী উঠছে না। ভাড়া না পেলে খুব বিপদ। টাকা রোজগার না হলে সংসার চলবে কিভাবে।
জেলা শহরের ভ্যান চালক জয়নাল হক বলেন, আস্তে আস্তে শীত বাড়ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তেমন যাত্রী পাওয়া যায় না। শহরে লোকজনও কম। সবাই তো খালি কম্বল বিতরণ করে। শীত বস্ত্রেরও প্রয়োজন তার মতো অনেকেরই।
আরও পড়ুন: শীতে পা ফাটার সমস্যা দূর করবেন যেভাবে
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মনোয়ারুল ইসলাম জানান, শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে শীত ও শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ১১ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। গরম কাপড় পরিধান করা, গরম পানি পান করাসহ শিশু ও বৃদ্ধদের এ সময়টাতে যত্ন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক জীতেন্দ্রনাথ রায় জানান, রবিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার পঞ্চগড়ে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। সকালে সূর্য উঠলেও উত্তরের হিমেল বাতাসের কারণে তাপমাত্রা নিচে নেমেছে। তাপমাত্রা রেকর্ড অনুযায়ী এখানে ক্রমশ শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এখানে তাপমাত্রা আরও কমবে।
আরও পড়ুন: শীতের শুষ্কতায় উপকারী বন্ধু তেল
তিনি জানান, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি এবং ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাদ জাহান জানান, জেলায় নতুন করে আর কোনো শীতবস্ত্র বরাদ্দ আসেনি। বর্তমানে কোনো মজুদও নেই। তবে কম্বল কেনার জন্য ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। টাকা পাঁচ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে পাঠানো হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে টেন্ডারের মাধ্যমে শীতবন্ত্র কেনার প্রক্রিয়া চলছে।