উজান থেকে নেমে আসা পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন ফসলের খেত।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন পদ্মা চরের মানুষ।
স্থানীয়দের বরাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, চলতি আগস্ট মাসের প্রথম থেকে পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করে। তবে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির হার বেড়ে যাওয়ায় নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে বিপদসীমার উপরে পদ্মার পানি, তীব্র ভাঙন
সদর উপজেলার নারায়ণপুর, আলাতুলি, চরবাগডাঙ্গা, সুন্দরপুর, অনুপনগর ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা, দুর্লভপুর, মনাকষা, উজিরপুর, ছত্রাজিতপুর ও ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়নসহ মোট ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা জানান, আনুমানিক ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেকে ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকেই আবার গবাদিপশু নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। এছাড়া ফসলের মাঠ ডুবে যাওয়ায় চিন্তিত কৃষকেরা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, পদ্মা ও মহানন্দা নদীর পানি এখনও বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ১৯ হাজার ৯০০ পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে বন্যা উপদ্রুত এলাকায় মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অদিপ্তরের উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ পর্যন্ত সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় নিম্নাঞ্চলের ২ হাজার ৩৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে আমন, আউস, হলুদ, বোরোই, সবজি প্রভৃতি।
আরও পড়ুন: বন্যার আশঙ্কা: কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান জানান, পানি বৃদ্ধির হার কমতে শুরু করেছে। শুক্রবার সকালে পদ্মার পানি বিপদ সীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ১২ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পায়নি। তাই বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই বলে আশা করেন তিনি।