গত এক মাস ধরে ফরিদপুরে জ্বর, ঠান্ডা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, যাদের অধিকাংশই শিশু। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

বৃহত্তর ফরিদপুরের অন্যতম শিশু চিকিৎসা কেন্দ্র ড. জাহেদ মেনোরিয়াল শিশু হাসপাতালে আন্ত:বিভাগ ও বর্হিবিভাগে প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক শিশু রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ফরিদপুর সদরের জেনারেল হাসপাতাল, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য বেসরকারী হাসপাতাল চিকিৎসা কেন্দ্রে আরো প্রায় দুইশ রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হঠাৎ করে শিশু রোগী বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা দেয়া কষ্টকর হয়ে পড়ছে সংশ্লিষ্টদের। 

রবিবার সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালগুলো ঘুরে এই চিত্র দেখা মেলে। কোন কোন হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে। 

আবহাওয়া পরিবর্তনে এমন চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু রোগীর সংখ্যা। ফরিদপুর সদর জেনারেল হাসপাতলে ডায়রিয়া রোগীর সিট রয়েছে ১০টি। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায় দ্বিগুনেরও বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে। সেবা দিতে সংশ্লিষ্টদের হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমন চিত্র শহরের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে। 

পড়ুন: রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবে হাসপাতালে ভর্তি শতাধিক

মাদারীপুর জেলা থেকে আসা দিনমজুর আক্তার শেখ। তার দুই শিশুর এক সপ্তাহ ধরে বমি ও পাতলা পায়খানা হচ্ছে। মাদারীপুর থেকে শিশু দুটিকে ফরিদপুরে রেফার করেছে। 

তিনি জানান, উপায়ন্ত না পেয়ে ফরিদপুর হাসপাতালে ভর্তি করেছি। রোগী অনেক, সিট পাওয়া যায় না, অনেক সময় ফ্লোরে থাকতে হচ্ছে। তবে শিশু দুটি এখন আগের চেয়ে সুস্থ আছে বলে তিনি জনান।

ফরিদপুর ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালেল আবাসিক চিকিৎসক ডা. এমদাদুল হক সামীম বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে এধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, এ হাসপাতালে আসা অধিকাংশ শিশুই ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানা, নিউমোনিয়া আক্রান্ত। আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি রোগীদের সঠিক সেবা নিশ্চিত করার।

এ প্রসঙ্গে জেলার সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান বলেছেন, এখন পর্যন্ত সব কিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে তুলনামূলক আগের চেয়ে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। কোথাও কোথাও সেবা দিতে কষ্টকর হয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, আবহাওয়ার পরিবর্তণের ফলে এর প্রভাব পড়ছে। শিশুদের পচা-বাসি খাবার দেয়া পরিহার করতে হবে, বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে, সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে।