বিরোধী দল বিএনপির ডাকা বিভাগীয় সমাবেশের ঠিক একদিন আগে শুক্রবার বরিশালে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
শুক্রবার দুদিনের পরিবহন ধর্মঘটে বরিশাল নগরী কার্যত সারাদেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাস, লঞ্চ, স্পিডবোট, মাইক্রোবাস এমনকি তিন চাকার অটোরিকশারও দেখা মিলছে না সড়কে।
মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধের দাবিতে বাস মালিকরা ধর্মঘটের ডাক দিলেও তিন চাকার বাহনের চালকরা কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের অবাধ চলাচলের অনুমতি চেয়েছে।
বিএনপির সরকার বিরোধী বিভাগীয় সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট ইদানিং সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা খুলনা, ময়মনসিংহ ও রংপুরের সমাবেশে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: বরিশালে সমাবেশে যোগ দিতে দুই দিন আগেই এসেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা
জ্বালানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বিধান পুনরুদ্ধারসহ দলের অন্যান্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে পরিবহন ধর্মঘটের কোনও যোগসূত্র অস্বীকার করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে অনির্দিষ্ট কারণে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত মাইক্রোবাস চলাচল বন্ধ আছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা মাইক্রোবাস মালিক সমিতির সদস্য মো. ফরিদ।
বুধবার সন্ধ্যায় স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে লঞ্চ চালানোর সময় বিএনপির অভিযোগের মধ্যে ৫ নভেম্বরের সমাবেশের আগে সরকারের নির্দেশে লঞ্চ মালিকরা আকস্মিক ধর্মঘটে যান।
যাত্রীরা জানান, এমনকি ভাড়ায় চালিত প্রাইভেট কারও চলাচল করতে রাজি হচ্ছে না।
গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে লঞ্চ ও বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেককে।
এদিকে সবধরনের পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দলের বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
নথুল্লাবাদে বরিশালের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করে উপচে পড়া ভিড় দেখতে পায় ইউএনবি। কারণ শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া পরিবহন ধর্মঘটের ভয়ে এক দিন পূর্বেই গন্তব্যে যাওয়ার জন্য কয়েকশ’ যাত্রী সেখানে পৌঁছায়।
সুবর্ণ পাল নামের এক যাত্রী বলেন, ‘শুক্রবার ঢাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা
ছিল। কিন্তু শুক্রবারের পরিবহন ধর্মঘটের কথা মাথায় রেখে আমি একদিন আগে এখানে এসেছি।’
পটুয়াখালীর যুবদল কর্মী সাদিকুর রহমান বলেন, ‘পরিবহন ধর্মঘটের কারণে দুই দিন আগে এখানে এসেছি। আর কোনও জায়গা না পেয়ে আত্মীয়ের বাসায় থাকছি।’
চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরে সমাবেশের পর বরিশালে হবে বিএনপির ৫ম বিভাগীয় সমাবেশ।
আরও পড়ুন: ভোলা-বরিশাল রুটে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ