নিহত ফয়সাল হোমনা উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় জিডি এবং পরে মামলার সূত্র ধরে তদন্তের পর ঘাতককে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘাতকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জেলার হোমনা উপজেলার সাফলেজি গ্রামের আমিরুল ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের নীচতলা থেকে ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ফয়সাল গ্রামের ফুল মিয়ার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে দীর্ঘদিন যাবত প্রেম নিবেদনসহ উত্ত্যক্ত করে আসছিল। ফয়সাল লেখাপড়া ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত করেছে। এ কারণে ওই পরিবার তাকে মেনে নেয়নি। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মাঝে বেশকিছুদিন যাবত মতবিরোধ চলে আসছিল।
এদিকে, গত ৫ জুন ফয়সাল নিখোঁজ হওয়ার পর বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। এ বিষয় গত ৭ জুন হোমনা থানায় নিখোঁজের বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরে ১৩ জুন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের নির্দেশে হোমনা থানার পাশাপাশি মামলাটি ছায়া তদন্তে নামে ডিবির এলআইসি টিম।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানী ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে ঘাতক শামীমকে গ্রেপ্তারের পরই বেরিয়ে আসে যুবককে হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অভিযানে অংশ নেয়া জেলা ডিবির পরিদর্শক ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলাটির তদারকির দায়িত্বভার পাওয়ার পর আমরা খোঁজ নিয়ে ওই যুবকের সাথে একই গ্রামের একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারি। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপানে ছিল মেয়ের ভাই শামীম। বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার চকবাজার এলাকা তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হোমনা উপজেলার সাপলেজি গ্রামের আমিরুল ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনের নীচতলা থেকে সন্ধ্যায় মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।’
হোমনা-মেঘনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল করিম জানান, গত ৫ জুন ফয়সালকে কৌশলে নির্মাণাধীন ওই ভবনে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। পরে মাটি চাপা দিয়ে সে আত্মগোপনে চলে যায়।
তিনি বলেন, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক শামীম জানায় ফয়সাল প্রায় সময় তার বোনকে উত্ত্যক্ত করত। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হত্যা করেছে।
‘হত্যাকাণ্ডের সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কি-না তা আমরা খতিয়ে দেখছি,’ বলেন তিনি।