সোমবার বিকালে দুইদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ জামিন মঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফতাবুজ্জামান।
কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জামিন পাওয়া কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা হলেন- তিতাসের ফতুল্লা অঞ্চলের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপক মাহমুদুর রহমান রাব্বি, সহকারী প্রকৌশলী এসএম হাসান শাহরিয়ার, সহকারী প্রকৌশলী মানিক মিয়া, সিনিয়র সুপারভাইজার মো. মুনিবুর রহমান চৌধুরী, সিনিয়র উন্নয়নকারী মো. আইউব আলী, হেলপার মো. হানিফ মিয়া ও কর্মচারী মো. ইসমাইল প্রধান।
এর আগে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ফতুল্লা অঞ্চলের বহিস্কৃত চার কর্মকর্তাসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে আদালতে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানি শেষে আটজনের দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
সূত্র জানায়, তল্লায় মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের জেরে তিতাস গ্যাসের চার প্রকৌশলীসহ আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার ও তাদের রিমান্ডে নেয়াকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠছে গ্যাস সরবরাহকারী এ প্রতিষ্ঠানটি। সিবিএ তো বটেই, তিতাসের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও আন্দোলনে নামছেন- এমন খবরে রবিবার সকালে প্রতিষ্ঠানটিতে ছুটে যান জ্বালানি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আনিসুর রহমান ও পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান এবিএম আবদুল ফাত্তাহ। একইদিন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সাথে সচিবালয়ে দেখা করেছেন তিতাসের সিবিএ নেতারা।
তারা গ্রেপ্তারকৃতদের সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে তাদের মুক্তির জন্য তিনদিন সময় বেঁধে দিয়েছেন বলেও জানায় সূত্রটি।
সূত্রের দেয়া তথ্যমতে, প্রতিমন্ত্রী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে নেতাদের আশ্বাসও দিয়েছেন। তারও আগে তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দেন। সোমবার সকাল থেকে তিতাসের প্রধান কার্যালয়ের তিন তলায় এমডির দপ্তরের বিভিন্ন অফিস থেকে প্রকৌশলীরা এসে জড়ো হতে থাকেন। সিবিএ নেতারাও সেখানে গিয়ে জড়ো হন। জ্যেষ্ঠ সচিব ও পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে বৈঠক করে গ্রেপ্তারকৃতদের জামিনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিতাসের এক কর্মকর্তা বলেন, জ্বালানি সচিব বৈঠকে জানিয়েছেন গ্রেপ্তার হওয়া প্রত্যেকের জামিনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনগত জটিলতার কারণে বিষয়টি নিষ্পত্তিতে সময় লাগতে পারে জানিয়ে সোমবার নাগাদ তাদের জামিন হয়ে যাবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩৭ জন দগ্ধ হয়। তাদের মধ্যে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের আইসিইউতে আশঙ্কাজনক রয়েছেন দুইজন। এ ঘটনায় গত ৫ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত আসামি করে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।