ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেছেন, পেটের ক্ষুধা নিয়ে অন্য পেশায় যুক্ত না হয়ে আপনারা বইয়ের পেশায় যুক্ত থেকেছেন। এটি কিন্তু মানসিক শক্তি না থাকলে করতে পারতেন না। বহু প্রকাশক আছেন যারা সব খরচের পর একজন দিনমজুরের সমান আয় করতে পারেন না।
শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির ৪২তম বার্ষিক সাধারণ সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মোস্তফা জব্বার আরও বলেন, এটি কেবলমাত্র ব্যবসা নয়। এটি অন্তরের সঙ্গে যুক্ত এবং এ পেশায় আত্মার সঙ্গে সর্ম্পক না থাকলে কেউ বইয়ের ব্যবসা করেনা। এখানে যারা আছেন তাদের এই ব্যবসার প্রতি আলাদা ভালোবাসা আছে। তা না হলে অন্যকোন ব্যবসা করতে পারতেন। পান দোকানদারি কিংবা চা বিক্রি করলেও এরচেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় থাকা যেতে পারে। তাই আমি মনে করি এখানে যারা যুক্ত আছেন তারা আসাধারণ কাজ করছেন। তাই এ পেশায় থাকাও এক ধরনের গর্বের।
আরও পড়ুন: মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান বাড়ানোর আহ্বান মোস্তফা জব্বারের
তিনি বলেন, আমি ১৯৮৭ সালের ২৮শে এপ্রিল প্রথম কম্পিউটারের বোতাম স্পর্শ করেছিলাম। আমি কিন্তু কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র না এবং বুয়েটে কোন কারিগরি বিদ্যা অর্জন করিনি। আমার এখন অস্বস্তিটা কেটে গেছে। এক সময় লোকজন মনে করতো আমি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এবং সেজন্য কম্পিউটার নিয়ে কাজ করতে পারি। পরে যখন জেনেছে আমি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ছাত্র; তখন অবাক হয়েছে, কেউ কেউ আবার ব্যঙ্গ-বিদ্রুপও করে বলেছে- বাংলায় পড়ে কিভাবে কম্পিউটার জানি। আমি এখন আর সেই অস্বস্তিতে ভুগি না। কারণ বাংলা পড়ে যদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়, তাহলে আমি বাংলা পড়ে কেন প্রকাশক কিংবা বাংলা হরফ বানাতে পারবো না। আমার কৃতিত্বটা ওখানেই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সমিতির সহ-সভাপতি কায়সার-ই-আলম প্রধান, শ্যামল পাল, মির্জা আলী আশরাফ কাশেম, ওয়াহিদুজ্জামান সরকার জামাল, মাজহারুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটন ও উপদেষ্টা ওসমান গনি। অনুষ্ঠানে ‘বাপুস: স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে দৃঢ়প্রত্যয়ী’ শীর্ষক লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল।
লিখিত বক্তব্যে শ্যামল পাল বলেন, স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে শরিক হতে বাপুস-এর যে অঙ্গীকার, তা বাস্তবায়ন করতে হলে চলতি প্রতিযোগিতামূলক সমাজে প্রধান দুই চালিকাশক্তি হিসেবে প্রকাশক এবং বিক্রেতাদের টিকে থাকার কোনো বিকল্প নেই। কেননা এই টিকে থাকার ওপরই নির্ভর করে পাঠ্য, পাঠসহায়ক, সৃজনশীল এবং মননশীল বইয়ের প্রকাশনা এবং তার বিকিকিনির বাজারব্যবস্থাকে কার্যকরভাবে সচল রাখা। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সমস্যাগ্রস্ত প্রকাশক ও বিক্রেতাদের বাপুস-এর সদস্যকল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতার পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যা মূলত প্রত্যক্ষ প্রভাবক হিসেবে লক্ষ্যস্থিত শিক্ষার্থী এবং পাঠকদের উপকৃত করবে।
বার্ষিক সাধারণ সভায় বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির পরিচালকগণ, দেশের ৬৪ জেলা ও উপজেলা শাখাসমূহের নেতৃবৃন্দ ও বিপুল পুস্তক ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে ফাইভ-জি চালু হবে: মোস্তফা জব্বার