রবিবার বিকাল ৪টায় মানিকগঞ্জ জেলা শহরের পূর্বদাশরায় তার নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, চার মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বাদ মাগরিব মানিকগঞ্জ দরবার শরীফে প্রথম জানাজা ও মরহুমের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা-নালোড়া গ্রামের মসজিদ প্রাঙনে বাদ এশা দ্বিতীয় জানাজা শেষে গ্রামের কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তার মৃত্যুতে মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা শোক জানিয়েছেন।
এম এ ওয়াহেদ তারা মিঞা ১৯৫৮ সাল থেকে সাংবাদিকতা শুরু করেন। দৈনিক সংবাদ, মর্নিং নিউজ এবং পাকিস্তান বাই উইকলি পত্রিকায় কাজ করেছেন। তিনি মানিকগঞ্জ জেলার দ্বিতীয় বয়োজৈষ্ঠ সাংবাদিক ছিলেন। তার আগে খন্দকার মঞ্জুরুল হাসান শেলী সাংবাদিকতা পেশায় আসেন।
তারা মিঞা ছিলেন তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান সাংবাদিক সমিতি মানিকগঞ্জ মহকুমা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। তারা মিঞার হাত ধরেই পরবর্তীতে মোহাম্মদ আসাদ, আব্দুল মোন্নাফ খান, জালাল উদ্দিন আহমেদ, প্রজেশকান্তি রায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। মানিকগঞ্জ জেলা শহরের শহীদ রফিক সড়কে ‘মানিকগঞ্জ রেডিও হাউজ’ নামের প্রতিষ্ঠানেই সাংবাদিকরা বসতেন।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি সমাজ উন্নয়নেও বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত বেতিলা হাই স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তীতে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি অন্তর্ভুক্ত করা এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
তিনি ২০০২ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ কমিটি মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে জাতীয়ভাবে ২০১২ সালে ‘আজীবন সেবা স্বীকৃতি সম্মাননা’ প্রদান করা হয়।
১৯৪০ সালের ১৮ জুলাই মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা-নালোরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এম এ ওয়াহেদ তারা মিঞা। তিনি ১৯৫৮ সালে মানিকগঞ্জ ভিক্টোরিয়া স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৬০ সালে মানিকগঞ্জ সরকারী দেবেন্দ্র কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন।