চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দীনের ভার্চুয়াল আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করেন।
আসামি বাবুল আক্তারের আইনজীবী মুহাম্মদ আজমুল হুদা বলেন, ‘বাবুল আক্তারের জামিনের জন্য আজ (মঙ্গলবার) আমরা প্রথমবার জামিনের আবেদন করেছিলাম। নিয়ম অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রট কোর্টে করতে হয়েছে। কিন্তু ৩০২ ধারার মামলায় জামিন দেয়ার এখতিয়ার এই আদালতের নেই। বিধি অনুযায়ী জামিন নামঞ্জুর হয়েছে। পরবর্তীতে বাবুল আক্তারের জামিনের জন্য আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে।
স্ত্রী খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ওই বছরের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেন।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। এরপর আস্তে আস্তে জট খুলতে থাকে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টিকারী চাঞ্চল্যকর এই মামলার।
গত ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই।
একইদিন (১২ মে) দুপুরে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া।
ওইদিন বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে জবানবন্দি দেননি তিনি। বাবুল আক্তারকে বর্তমানে ফেনী জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: পলাতক ৩ আসামির বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা