হত্যা মামলা
হবিগঞ্জে হত্যা মামলায় ১৬ বছর পর ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
হবিগঞ্জে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জের ধরে দিনমজুর ছাবু মিয়াকে হত্যার ঘটনায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ-২ এ কে এম কামাল উদ্দিন এই দণ্ড দেন। ১৬ বছর পর এই হত্যাকাণ্ডের রায় দেন আদালত।
আসামিরা হলেন— মাধবপুর উপজেলার বার চান্দুরা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে এমরান মিয়া, মারাজ মিয়ার ছেলে সোলেমান, মৃত হরমুজ আলীর ছেলে জাহেদ মিয়া ও মুরাদপুর গ্রামের মৌলা মিয়া ছেলে আবুল। তারা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সাজা দেওয়ার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অপর আসামি মারাজ মিয়ার মৃত্যু হওয়ায় অব্যাহতি পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: কিশোরীকে ‘ধর্ষণের পর হত্যা, নানা-নানীকে কুপিয়ে জখম
আদালত সূত্র জানায়, মাধবপুরের বার চান্দুরা গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে দিনমজুর ছাবু মিয়াকে ২০০৯ সালের ১৩ এপ্রিল বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে আসামিরা খুন করেন। এরপর গ্রামের একটি জঙ্গলে লাশ ফেলে রাখে। পরদিন তার স্বজনরা লাশ খুঁজে পায়। এ ব্যাপারে ছাবু মিয়ার ভাই হাফিজ মিয়া ৩ জনকে আসামি করে একটি এজাহার দায়ের করেন।
মাধবপুর থানার এসআই আলমগীর তদন্ত শেষে ওই বছরের ২১ মে তারিখে ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। ১৩ জনের সাক্ষী শেষে বিচারকিআজ (বুধবার) রায় দেন।
৭ দিন আগে
ব্যাংক বুথের নিরাপত্তা কর্মীকে হত্যা মামলায় এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ব্যাংকের বুথের নিরাপত্তা কর্মীকে হত্যার ঘটনায় আব্দুল মতিন (৫৫) নামে এক বৃদ্ধকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাসহ অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু শামীম আজাদ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. কাইউম খান বলেন, ‘১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেছেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আব্দুল মতিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ এলাকার মৃত হাসমত উল্লাহর ছেলে। তিনি ভূঁইগড়ের আনোয়ার বেগমের বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। সেই সঙ্গে নিহত আলী হোসেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুর এলাকার মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে। তিনি ফতুল্লার ভূঁইগড় বাজারের ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথের নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।’
আরও পড়ুন: নৌকায় কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির বলেন, ‘২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আলী হোসেন বুথে ডিউটিকালীন সময়ে আব্দুল মতিন তার মাথায় কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এরপর আলী হোসেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
এ ঘটনায় তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন। সেই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষে আদালত রায় ঘোষণা করেছন।’
৭ দিন আগে
নড়াইলে হত্যা মামলায় আসামির যাবজ্জীবন
নড়াইলের নড়াগাতি থানার কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের আইচপাড়া গ্রামের আব্দুল আহাদ মল্লিক হত্যা মামলায় ইলিয়াস সরদার নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানাসহ অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এ রায় দিয়েছেন।
নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাজাপ্রাপ্ত ইলিয়াস সরদার খুলনা জেলার তেরখাদা থানার পারখালি গ্রামের সবুর সরদার এর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে ২০১২ সালের ১৭ আগস্ট রাতে কালিয়া উপজেলার বড়নাল মাদরাসার কাছে এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা নড়াগাতি থানার আইচপাড়া গ্রামের আব্দুল আহাদ মল্লিককে কুপিয়ে জখম করে। এ নিয়ে মামলার পর আসামিদের জেল-জরিমানা হয়। এ ঘটনায় বিগত ২০১৮ সালের ৪ জুলাই আপিল করে জামিনে বাড়িতে আসে আসামিরা। পরে এদিন রাতে ইলিয়াছ সরদার আব্দুল আহাদ মল্লিককে ফোন করে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে ঘুম থেকে ডেকে কথা বলার জন্য বাড়ির বাইরে নিয়ে যায়। এরপরে তিনি বাড়িতে না ফিরলে পরেরদিন ৫ জুলাই সকালে গ্রামের একটি পাটখেতে স্বজনরা ও থানা পুলিশ তার লাশ শনাক্ত করেন।
আরও পড়ুন: নৌকায় কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
এসময় লাশটির শরীরে ধারালো অস্ত্রের কোপ ও গলায় রশি পেচানো অবস্থায় দেখা যায়।
এ ঘটনার দুইদিন পর ৭ জুলাই নিহতের ভাই আবুল বাসার মল্লিক বাদী হয়ে আইচপাড়া গ্রামের জুয়েল মল্লিক, সোহেল মল্লিক, সাজেল মল্লিক, টুয়েল মল্লিক ও পাশ্ববর্তী খুলনা জেলার তেরখাদা থানার পারখালি গ্রামের ইলিয়াস সরদারসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ ও ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করেন।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার আদালত ইলিয়াছ সরকারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জরিমানা করেন। বাকি আসামিদের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছেন।
৭ দিন আগে
আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আগামী ১৫ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একই সঙ্গে এ মামলায় সাবেক এসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে সকালে এই চারজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
আরও পড়ুন: আবু সাঈদের অসুস্থ বাবাকে ঢাকা সিএমএইচে স্থানান্তর
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম, আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
পরে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে, তদন্ত শেষ পর্যায়ে। এ হত্যা মামলায় আটক চারজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত শেষ করতে আরও দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে তদন্ত সংস্থাকে।
এর আগে আজ সকালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
গত ২ মার্চ আবু সাইদ হত্যার ঘটনায় চারজনকে হাজির করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়ে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে প্রসিকিউশন জানিয়েছে, এই ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন সাবেক এএসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়। আর বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা এমরান চৌধুরী আকাশসহ আরও অনেকে ইন্ধন জুগিয়েছিলেন। অন্য মামলায় গ্রেফতার থাকা ওই আসামিদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য আবেদন জানার প্রসিকিউশন।
৮ দিন আগে
কুষ্টিয়ায় আ.লীগ নেতা হত্যা মামলায় ৯ জনের যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়ার মিরপুরে আওয়ামী লীগের নেতা ও পল্লী চিকিৎসক লুৎফর রহমান সাবুকে হত্যার দায়ে ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সুমিয়া খানম এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পরপরই তাদের পুলিশি পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামিরা হলেন— কুষ্টিয়ার মিরপুরের উপজেলা আমবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জাসদের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মিলন। আমবাড়িয়া এলাকার জসিম উদ্দিন বুড়ো, এখলাস আলী, মুরাদ আলী, মাহাবুল হোসেন, রাশেদুল আলী, ওয়াসিম আলী, রফিকুল ইসলাম ও হেলাল উদ্দিন শিলু।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খন্দকার সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘পল্লী চিকিৎসক সাবুকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, লুৎফর রহমান সাবু ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে চড়ে মিরপুরের আমবাড়িয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। পথিমধ্যে আমবাড়িয়ার কাছে পৌঁছালে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামিরা সাবুর মোটরসাইকেল গতিরোধ করে ও এলোপাতাড়িভাবে রামদা দিয়ে তার মাথা, পিঠ, মুখ, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত সাবুর ছোট ভাই হাবিবুর রহমান হাবিব বাদী হয়ে মিরপুর থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত দিনে এ মামলার ৯ জন আসামিকে যাবজ্জীবন ও একজনকে খালাস দেন।
নিহত লুৎফর রহমান সাবু মিরপুরের আমবাড়িয়া গ্রামের মৃত অজিত মোল্লার ছেলে। তিনি মিরপুর উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগদান করেন।
২৪ দিন আগে
পিরোজপুরে হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় মিজান নামে এক যুবককে হত্যার দায়ে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানাসহ অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোক্তাগীর আলম এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— ছালাম হাওলাদার, মো. আলমগীর, আব্দুল মালেক, মো. ফিরোজ মোল্লা ও আইউব আলী। মিজান ভান্ডারিয়া উপজেলার উত্তর শিয়ালকাঠী গ্রামের বাসিন্দা।
রায়ের সময় আদালতে দুইজন উপস্থিত ছিলেন। বাকি ৩ জন পলাতক রয়েছেন। বিচারক এই মামলায় অন্য ৭ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ১১ বছর আগে ৭ বছরের শিশু ধর্ষণ, যুবকের যাবজ্জীবন
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি ওয়াহিদ হাসান বাবু বলেন, ‘২০০৫ সালের ৩ নভেম্বর রাতে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার উত্তর শিয়ালকাঠী গ্রামের কাপালির হাট বাজারে মামলার বাদী মো. রাকিবুল ইসলামের সাইকেলে পার্সের দোকানে ডাকাতি করে। এসময় তিনি দোকানে ঘুমাচ্ছিলেন। ঘুম থেকে উঠে ডাকাতির বিষয়টি বুঝতে পেয়ে চিৎকার দিলে আসামিরা সে সময় পালিয়ে যেতে থাকে ও যাবার সময় কয়েক রাউন্ড গুলি করে। সেই গুলিতে স্থানীয় মিজান নামের এক ব্যাক্তি গুলিবিদ্ধ হয়।
পরে স্থানীয়রা মিজানকে উদ্ধার করে প্রথমে ভান্ডারিয়া হাসপাতাল ও পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিলে সেখানে মিজান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। পরে এ ঘটনায় দোকানদার রাকিবুল বাদী হয়ে ভান্ডারিয়া থানায় অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করে।
পরে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ মামলাটি তদন্ত করে ১২ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। দীর্ঘদিন পর এ মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিচারক ৫ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৭ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন।
৩১ দিন আগে
সাবেক বিচারপতি মানিকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
গুলশান থানার একটি হত্যা মামলায় আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৫ মার্চ) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটের পরিদর্শক আমিনুল ইসলামের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত সাবেক বিচারপতি মানিকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তবে, এ সময় আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
আরও পড়ুন: সাবেক বিচারপতি খায়রুল হকের বিচার চাইলেন ঢাকা জেলা যুবদল সভাপতি মুরাদ
শুনানিতে ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘এই আসামি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী। সরকারের পতনের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনগণ তাকে আটকে দেয়। তিনি কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, যারা টাকার বিনিময়ে তাকে দেশত্যাগে সহযোগিতা করবে বলেছিল, তারা টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। তাকে হাফপ্যান্ট পড়া ও কলাপাতার ওপর শুয়ে থাকা অবস্থায় জঙ্গলে পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি বিভিন্ন সময়ে টকশোতে গিয়ে মারামারি করতেন। ফ্যাসিস্টের পক্ষে সাফাই গাইতেন। আন্দোলনের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন। তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’ শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই গুলশান থানাধীন প্রগতি স্বরণী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শিক্ষার্থী মো. আবু যর শেখ।
পরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ জুলাই মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে গত বছরের ১৬ নভেম্বর গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা মামলায় জামিন পেলেও কারামুক্তি মিলছে না সাবেক বিচারপতি মানিকের
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২৪ আগস্ট সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতে পালানোর সময় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে একাধিক হত্যা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
৪৩ দিন আগে
চাঞ্চল্যকর লক্ষণ পাল হত্যা মামলায় ৭ জনের যাবজ্জীবন
মৌলভীবাজারে চাঞ্চল্যকর লক্ষণ পাল হত্যা মামলায় সাত আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মৌলভীবাজার জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. খাদেম উল কায়েস এই রায় ঘোষণা করেন।
বাদী পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ড. আব্দুল মতিন চৌধুরী এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মো. সানোয়ার হোসেন।
ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ১২ মার্চ এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করতে যান শ্রীমঙ্গল শহরের সেন্ট্রাল রোডের ব্যবসায়ী লক্ষণ পাল। ফেরার পথে আজাদের বাজার আসার পর আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা খুনিরা সিএনজি অটোরিকশায় ছদ্মবেশে যাত্রী সেজে তার সঙ্গে উঠে রাত ১০টার দিকে তাকে হত্যা করে লাশ রাস্তায় ফেলে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে রাজনগর থানা পুলিশ কর্ণীগ্রাম থেকে লক্ষণ পালের লাশ উদ্ধার করে থানা নিয়ে আসে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে অস্ত্র মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
এ ঘটনার পর লক্ষণ পালের ভাই স্বপন পাল বাদী হয়ে রাজনগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরবর্তীতে রাজনগর থানার পুলিশ তদন্ত করে রবীন্দ্র দেবসহ সাতজনের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারায় অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আজ (বৃহস্পতিবার) মৌলভীবাজার জেলার জ্যেষ্ঠ দায়রা জজ মো. খাদেম উল কায়েস এ রায় দেন।
আসামি রিয়াদ মিয়া, রবীন্দ্র দেব, জয়নাল আবেদীন, ইকরাম উদ্দিন, সবুজ মিয়া, জালাল মিয়া ও মাসুদ আহমদ সন্দেহাতীতভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় প্রত্যেককে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এই মামলায় রিয়াদ মিয়া ও রবীন্দ্র দেব জেলহাজতে থাকলেও সাজাপ্রাপ্ত অন্য ৫ আসামি পলাতক রয়েছেন।
৪৮ দিন আগে
আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা: হাইকোর্টের রায় যেকোনো দিন
বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট।
শুনানি শেষ করে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে বি রুমি। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ ও জামিউল হক ফয়সাল। এছাড়া এই মামলায় শুরুর দিন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানি করেছিলেন। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও আইনজীবী শিশির মনির।
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়।
গত অক্টোবর মাসে বহুল আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এ উদ্যোগ নেন।
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেন আদালত।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: নদী বাঁচাতে আবরার ফাহাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের পথ নির্দেশ করবে: নাহিদ ইসলাম
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার অপু (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মোজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুর রহমান মাজেদ (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাক্কারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামছুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং এসএম মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামি হলেন— বুয়েট ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), সদস্য আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) ও মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ)।
আরও পড়ুন: আবরার ফাহাদ হত্যার ৫ বছর, এক মায়ের অন্তহীন দুঃখ
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ।
মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর অভিযোগ পত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। এরপর বিচার শেষে রায় দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
রায়ের পর ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স ও মামলার নথি হাইকোর্টে আসে।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ৬ হাজার ৬২৭ পৃষ্ঠার ডেথ রেফারেন্স ও মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়।
এরপরই আসামিরা দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে ফৌজদারি আপিল ও জেল আপিল করেন। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে তা অনুমোদনের জন্য মামলার যাবতীয় কার্যক্রম উচ্চ আদালতে পাঠাতে হয়। দণ্ডিত আসামিরা উচ্চ আদালতে ফৌজদারি আপিল এবং জেল আপিল করতে পারেন।
এরপর ডেথরেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানি হয়।
আরও পড়ুন: বুয়েটছাত্র আবরারের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
৫১ দিন আগে
হত্যা মামলায় ৩০ বছর জেল খাটার পর নির্দোষ প্রমাণিত
ত্রিশ বছর ধরে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন তিনি, কিন্তু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ওই ব্যক্তির কথায় কেউ কর্ণপাত করেনি। ফলে জেলের চার দেওয়ালেই কাটাতে হয়েছে তার জীবনের তিনটি দশক। তবে ত্রিশ বছর পরে হলেও বিচারকের মুখ থেকে তিনি শুনেছেন, ‘আপনি নির্দোষ। দণ্ডাদেশ বাতিল করা হলো।’
বলছিলাম যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের গর্ডন কর্ডেইরো নামে এক ব্যক্তির কথা। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) অবশেষে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাকে নির্দোষ প্রমাণ করে রায় দিয়েছে হনুলুলুর একটি আদালত।
এদিন রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন কর্ডেইরো। নিজের কানকেই তিনি যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। রায় ঘোষণার এই দিনটিকে তিনি ‘ফ্রিডম ফ্রাইডে’ বলে আখ্যা দেন।
১৯৯৪ সালে মালাউই দ্বীপে টিমোথি ব্লেইসডেল হত্যা মামলায় জেল খাটছিলেন কর্ডেইরো। মাদক কারবার চলাকালে ডাকাতির ঘটনা ঘটলে খুন হন ব্লেইসডেল। ওই মামলার প্রাথমিক সন্দেহভাজন ছিলেন কর্ডেইরো।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাকের পেছন থেকে ১ লাখ ডিম চুরি
হত্যা মামলার প্রথম শুনানিতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে জুরি বোর্ড। মাত্র একজন বিচারক তাকে দোষী সাব্যস্ত করার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন; কিন্তু পরে তাকে খুন, ডাকাতি ও হত্যা চেষ্টার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এই মামলার শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছিলেন কর্ডেইরো। দণ্ডাদেশ পাওয়ার পরও তিনি নিজের দাবিতে অটল ছিলেন।
মুক্তির পর তাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চেষ্টা করা সবাইকে ধন্যবাদ দিয়েছেন কর্ডেইরো। ছাড়া পাওয়ার পর প্রাথমিক অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘অবশেষে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারব।’
এর আগে, শুনানি চলাকালে নতুন ডিএনএ নমুনা পাওয়া গেলে হাওয়াই ইনোসেন্স প্রজেক্ট তার মুক্তির জন্য দাবি জানায়।
হাওয়াই ইনোসেন্স প্রজেক্টের সহকারী নির্বাহী কেনেথ লসন বলেন, এটি অত্যন্ত আবেগঘন একটি মুহূর্ত ছিল।
‘তিনি কেঁদেছেন, তার সঙ্গে আমরাও সবাই কেঁদেছি। কর্ডেইরো বিশ্বাস করতেন যে একদিন সত্যিটা বের হবে... কিন্তু দুটি বিচার প্রক্রিয়া পার করার পর বিচার ব্যবস্থার প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি ন্যায়বিচারই পেলেন।’
কর্ডেইরোর আইনজীবীর অভিযোগ, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। মামলার জন্য পুলিশ ‘৪ কয়েদির’ বয়ানের ওপর ভরসা করেছেন।
তার দাবি, ওই চার সাক্ষ্যকে সাজা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে মার্ডার-ফর-হায়ার, অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে কর্ডেইরো ওই হত্যা করেছেন—এমন বানোয়াট বয়ান দেয়। ফলে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
তবে শুক্রবারের রায়ে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য ব্যবহার করার কোনো প্রমাণ পায়নি বলে জানিয়েছে আদালত।
কেনিথ জানান, ঘটনার দিন কর্ডেইরোর ঘটনাস্থলে না থাকার যথেষ্ট প্রমাণ থাকা স্বত্ত্বেও তা মানা হয়নি। সম্প্রতি নিহত ব্লেইসডেলের শরীরের পাওয়া ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সেই নমুনার সঙ্গে কর্ডেইরোর ডিএনএ মেলেনি, বরং অজ্ঞাত একটি ডিএনএ নমুনা পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তি পান কর্ডেইরো।
পুলিশের গাফিলতির কারণে একজন নিরাপরাধ ব্যক্তি বছরের পর বছর জেল খেটেছেন। তার পুরো পরিবার এতগুলো বছর ধরে অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করেছেন বলে বিচারাদেশের পর অভিযোগ করেন তার আইনজীবী।
৫৪ দিন আগে