চাঁদপুরে প্রায় ২০০ বছর বয়সী ৭১ কেজি ওজনের একটি বিশাল কাছিম উদ্ধার করেছে চাঁদপুর সদর মডেল পুলিশ।
পরবর্তীতে এটি উপজেলা বন বিভাগের সহযোগিতায় মেঘনা নদীতে অবমুক্ত করা হয় শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকালে ।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন- কাছিমটির বয়স প্রায় ২০০ বছর হবে। একই কথা জানান, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বর্ষীয়ান লোকজনও।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে কাছিমটি চাঁদপুর শহরের তিন নদীর মোহনা মেঘনা নদীতে অবমুক্ত করেন সদর মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় সদর উপজেলা বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: উদ্ধার করা দুটি হনুমান ও ১৬টি কাছিম অবমুক্ত
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২/৩ দিন আগে জেলার হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী এলাকার জেলেদের জালে মেঘনা নদীতে ধরা পড়ে এ বিশালাকার কাছিমটি। পরে শনিবার সকালে মো. জসিম উদ্দিন নামে একজন ব্যবসায়ী এটি ক্রয় করে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসেন সদরের বালিয়া ইউনিয়নে। এই ইউনিয়নের বালিয়া বাজার এলাকার সনাতন ধর্মের ত্রিপুরা জাতির লোকজন ১৯ হাজার টাকায় এটি ক্রয় করেন জসিমের কাছ থেকে। কাছিমটিকে তারা তাদের বাড়ির বাগানে রাখলে এলাকার শত শত মানুষ দেখতে ভিড় জমান।
এক পর্যায়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে জানাজানি হলে দুপুরে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং পরবর্তীতে সদর উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেনও সেখানে যান।
ত্রিপুরা জাতির প্রধান ব্যক্তি খোকন ত্রিপুরা বলেন, ‘মূলত আমরা এটি খাওয়ার জন্য ক্রয় করেছি। এটি জবাই করে খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। পরে প্রশাসনের লোকজন আসার পরে এটি দিয়ে দিয়েছি। আমাদের বাড়ির বয়স্ক লোকদের ধারণা এটির বয়স প্রায় ২০০ বছরের বেশি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জাতির লোকজন এ ধরনের কাছিম পূর্বে থেকে খেয়ে আসছেন। তবে এগুলো আজকাল খুব কম পাওয়া যায় নদীতে।’
চাঁদপুর সদর মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান বলেন, ‘কাছিম ধরা পড়ার খবর পেয়ে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহসীন আলম আমাকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে এটি উদ্ধার করে নিয়ে আসি চাঁদপুরে এবং অবমুক্ত করার ব্যবস্থা করি।’
চাঁদপুর সদর বন বিভাগের কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ‘নদী থেকে কাছিম ধরা বিক্রি ও মাংস খাওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ। এই ধরনের কাছিম এখন খুবই কম দেখা যায়। বিশাল আকৃতির কাছিমটি জবাই করার প্রস্তুতিকালে খবর শুনে সেটি পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়। পরর্তীতে শহরের বড় স্টেশন এলাকায় ৩ নদীর মোহনা মেঘনায় ছেড়ে দিয়ে কাছিমটি অবমুক্ত করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, উপস্থিত সকলকে বলা হয়- যারা নদী থেকে কাছিম ধরবে ও বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ধরনের কোনো তথ্য পেলে পুলিশ এবং আমাদেরকে যেন জানানো হয়।