যশোরে মাথায় গুলি করে মেহের আলী নামে এক প্রবাসীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। স্বজনদের দাবি, চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক কোন্দলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
শুক্রবার (১০ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার চূড়ামনকাটি ইউনিয়নের বাদিয়াটোলা পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মেহের আলী (৪৪) ওই গ্রামের আব্দুল মালেক মণ্ডলের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, তিনি গত ২৬ জুলাই কুয়েত থেকে দেশে ফিরেছেন। সেখানে তিনি হাদিয়ায় একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। বিদেশে যাওয়ার আগে মেহের আলী স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ নেতাকে গুলি করে হত্যা
নিহতের স্বজনেরা জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় খাওয়া-দাওয়া শেষে বাড়ির কলাপসিবল গেটে তালা মারতে যান মেহের আলী। এ সময় আগে থেকে অপেক্ষা করা দুর্বৃত্তরা গেটের সামনে এসেই মাথায় গুলি করে পালিয়ে যান। গুলির শব্দ শুনেই স্বজনরা দ্রুত উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছোট ভাই আবু আব্দুল্লাহ বলেন, ‘অনেক বছর ধরে মেহের আলীসহ তিন ভাই বিদেশে থাকি। বিদেশ যাওয়ার আগে ভাই বিএনপির রাজনীতি করতেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্ন সময়ে জেল খাটিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ভাইয়ের কাছে নেতা-কর্মীরা চাঁদাও দাবি করতেন। কিন্তু ভাই দিতে চাইতেন না। তাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। এর মধ্যে দীর্ঘদিন পর গত ২৬ জুলাই আমার ভাই দেশে ফিরেছে। আমি ফিরেছি মাসখানেক আগে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত সোমবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এই দলের নেতাদের সঙ্গে ভাইয়ের কথা-কাটাকাটি হওয়ার কথা শুনেছি। এসব রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছি। এই হত্যা পূর্বপরিকল্পিত। ধারণা করা হচ্ছে হত্যাকারীরা বাড়ির গেটের সামনে লুকিয়ে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল।’
আবু আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের পাঁচ বছর ও দেড় বছর বয়সি দুই শিশুসন্তান রয়েছে। তাদের কী হবে, তারা যে বাবা হারিয়েছে। আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। আমার ভাইরে কেন মারল?’
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক খন্দকার রেজয়ান উদ দারাইম জানান, গুলিবিদ্ধ মেহের আলীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনেন স্বজনেরা। তার মাথার ডান পাশে গুলি লেগেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। অভিযান চলছে।’
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা, আটক ৩