সারাদেশে চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার-অপারেশন বন্ধ করে রোগীদের দুর্ভোগে ফেলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
একই সঙ্গে রোগীদেরকে জিম্মি করে দাবি আদায়ে প্রক্রিয়া অমানবিক, অনৈতিক চরম বর্বরতার সামিল, সাংবিধানিক অধিকার খর্বের শামিল বলেও মনে করে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটির নেতারা বলেন, ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় দুই নারী চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে চিকিৎসকদের সব ধরণের প্রাইভেট চেম্বার-অপারেশন বন্ধ রেখেছে।
কিন্তু দুইজন চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের কারণে অবস্ট্রেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনেকোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) এ ধরণের অমানবিক ও অন্যায় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।
আরও পড়ুন: যাত্রী দুর্ভোগ ও সেবা না বাড়িয়ে ভাড়া বৃদ্ধি অগ্রহণযোগ্য: ক্যাব চট্টগ্রাম
চিকিৎসক হোক আর যা-ই হোক সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আইনীভাবে মোকাবিলা করা উচিত। কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে হীন ষড়যন্ত্রে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া জনগণের চিকিৎসা সেবার মতো মৌলিক অধিকার খর্ব করার শামিল।
যা শুধুমাত্র নিন্দনীয় নয় এটা চরম বর্বরতার শামিল এবং আদিমযুগে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ সে শ্লোগানে প্রত্যাবর্তনের আহ্বান।
এটা অনেকটা লাশের রাজনীতির মতো।
ক্যাব নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে লাখ লাখ রোগীকে জিম্মি করে এ ধরনের অনৈতিক, অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অমানবিক কর্মকাণ্ড পরিহার করে সকল চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার-অপারেশন বন্ধ রাখার ঘোষণা বাতিল করে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আদালতের কাছে প্রতিকার চাওয়ার পরামর্শ দিয়ে অবৈধ ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি করেন।
একই সঙ্গে গুটি কয়েক অসাধু লোকের কারণে প্রাইভেট চেম্বার-অপারেশন ও সকল চিকিৎসকের একযোগে অঘোষিত ধর্মঘট চিকিৎসকদের মহান পেশাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এবং চিকিৎসকরা আইনে ঊর্ধ্বে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলে মত প্রকাশ করে এ ধরনের আত্মঘাতি কর্মসূচি থেকে সরে আসার আহ্বান জানান।
নেতারা আরও বলেন, চিকিৎসা পেশা একটি মহান সেবাধর্মী পেশা হলেও বর্তমানে সনদবিহীন, ভুঁয়া, অসাধু চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকরা এ মহান পেশাকে কাজে লাগিয়ে দিনে দিনে কোটিপতি হবার বাসনায় লিপ্ত।
সেকারণে রোগীর সেবা, মানবতার সেবার চেয়ে অর্থই তাদের কাছে মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও সুযোগ সুবিধা থাকলেও রোগীরা সেখানে ন্যূনতম চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না।
নেতৃবন্দ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেক্টরে এ ধরণের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বেসরকারী ক্লিনিক, প্যাথলজিকাল ল্যাবসহ স্বাস্থ্য বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠানে কঠোর নজরদারির দাবি জানান।
স্বাস্থ্য সেক্টরে কমিশন প্রথা, উপহার প্রথা বাতিলসহ ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় কঠোর আইনী প্রতিকার এবং সিবিএ সংগঠনের মতো বিএমএর অযাচিত হস্তক্ষেপ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান।
বিবৃতিদাতা নেতারা হলেন- ক্যাব কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: একাধিক ফাইবার অপটিক ক্যাবল বিচ্ছিন্ন হওয়ায় নেটওয়ার্ক সমস্যা হচ্ছে: জিপি
ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ১১.০৮ শতাংশ, শহুরে দরিদ্রদের সমস্যাও প্রকট: ক্যাব