তারা হলেন-কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের ত্রিপদ রায়ের ছেলে নির্মল চন্দ্র রায় (২৮) ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের পূর্ব দালালপাড়া তিস্তা টোলপ্লাজা এলাকার তৈয়ব আলীর ছেলে আতিকুল ইসলাম (২৫)।
পুলিশ জানায়, লালমনিরহাট তিস্তা টোলপ্লাজা পুলিশ চেকপোস্টে দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) নুর আলমকে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের পশ্চিম দেবোত্তর এলাকার এক কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা জানায়। তাৎক্ষণিক ওই পুলিশ অফিসার দুই যুবককে আটক করে এবং ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরও পড়ুন: এমসি কলেজে গণধর্ষণ: অভিযোগ গঠনের শুনানি ১৭ জানুয়ারি
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোরী জানায়, তাকে ডেকে নিয়ে নির্মল ও তার বন্ধু আতিকুল ধর্ষণ করে।
লালমনিরহাটের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, ‘ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি এবং ওই কিশোরীর পরিবারের লোকজনকে ডেকেছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
পুরো দেশের চিত্র
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, সদস্য সমাপ্ত ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯৭৫ নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে, যার মধ্যে ২০৮ জনকে গণধর্ষণ করা হয়। এর মধ্যে ধর্ষণের পরে ৪৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং অন্য ১২ জন আত্মহত্যা করেছে।
এছাড়াও, মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনটি বলছে যে ১৬১ জন নারীকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ১২ জন আত্মহত্যা করেছেন।
আরও পড়ুন: কম্বল দেয়ার কথা বলে প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার
পুরুষ বলাৎকারকে ধর্ষণের অপরাধভুক্ত করে দণ্ডবিধির ধারা সংশোধন চেয়ে রিট
আসক আরও বলছে, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় তিনজন নারী ও নয়জন পুরুষকে হত্যা করা হয়। এছাড়া ৬২৭টি শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং ২০ জন ছেলেকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে এবং ২১ জন নারী অ্যাসিড আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে গত ১৭ নভেম্বর জাতীয় সংসদে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০২০’ পাস হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ৯ (১) ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এখন ওই ধারায় ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ‘ধর্ষণের পর হত্যার’ অভিযোগ
ও লেভেল শিক্ষার্থীকে ‘ধর্ষণ ও হত্যা’: মামলায় আসামির স্বীকারোক্তি
এর আগে, দেশে সম্প্রতি ধর্ষণের ক্রমবর্ধমান ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদের অধিবেশন না থাকায় গত ১৩ অক্টোবর ঘৃণ্য এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে এ সংক্রান্ত আইনের (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন) একটি সংশোধনী প্রস্তাব অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছিল।
বিশেষ করে সিলেট এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে দেশজুড়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন এবং ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবির মধ্যেই সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছিল।