লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে বিডিআর গেট এলাকার কাছে দুই ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। লালমনিরহাট রেল বিভাগের ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারইন্টেডেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুনকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিলম্বে লালমনিরহাট স্টেশনে পৌঁছে যাত্রী নামিয়ে দেয়। এরপর সেটি ওয়ার্ক শেডের দিকে পরিষ্কারের জন্য অগ্রসর হচ্ছিল। ঠিক সেই সময় বিপরীত দিক থেকে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী ৬৬ নম্বর কমিউটার ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশের চেষ্টা করে। একই লাইনে থাকা অবস্থায় ট্রেন দুটি মুখোমুখি চলে এলে কমিউটার ট্রেনটি লালমনি এক্সপ্রেসের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে এক্সপ্রেস ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয় এবং রেললাইন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ঘটনায় ৬ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর গতকাল রাত ৮টার পরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। দুর্ঘটনায় লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনের অন্তত ৮ যাত্রী আহত হন।
আহত যাত্রীদের মধ্যে আকলিমা বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘ট্রেনটি স্টেশনে ঢোকার আগ মুহূর্তে বিকট শব্দ হলো। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমি ও আমার মেয়ে সিট থেকে পড়ে যাই। মাথা ও হাতে আঘাত পেয়েছি।’
বিডিআর গেট এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী রশিদুল ইসলাম জানান, ‘প্রতিদিনের মতো এক্সপ্রেস ট্রেনটি লোকশেডে ঢোকার আগ মুহূর্তে আচমকা কমিউটার ট্রেনটি এসে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়।’
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার ও নিরাপত্তা কাজে সহায়তা করেন।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে দুটি বগি লাইনচ্যুত
রেলওয়ের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা আরএমবি বেনজির আহমেদ বলেন, ‘বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং উদ্ধার কাজ দ্রুত চালানো হয়েছে।’
রেলওয়ের লোকো দপ্তরের ডিএমই সাজিদ হাসান নির্ঝর বলেন, ‘ঘটনায় কারও গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আবু হেনা মোস্তফা আলম বলেন, ‘চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন। দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’