শেরপুরের শ্রীবরদীর ঝগড়ারচর বাজারে লকডাউন কার্যকরে যাওয়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- শ্রীবরদীর বারারচর এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে শহীদ মিয়া (৩০) এবং ঝগড়ারচর বাজারের ব্যবসায়ী রেজ্জাক সরকারের ছেলে মিজানুর রহমান (৩২)।
শ্রীবরদী থানা পুলিশ ৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার ভোরে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বিকেলে আদালতে সোপর্দ করলে বিচারিক হাকিম তাদের জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: শেরপুরে চিকিৎসক-নার্স সংকট, চিকিৎসাসেবা ব্যাহত
এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝগড়ারচর বাজারে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। লোকজনের আনাগোনাও তেমন দেখা যায়নি। বাজারে আনসার সদস্য মোতায়েন দেখা যায়।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস ওই দু’জনকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তারা দু’জনই ঝগড়ারচর বাজারে লকডাউন কার্যকরে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে চলমান লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল আমিন ও সানাউল মোর্শেদের নেতৃত্বে শ্রীবরদী উপজেলার ঝগড়ারচর বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিচালনা করেন। সেসময় লকডাউন অমান্য করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার অভিযোগে স্থানীয় ৪ ব্যবসায়ীকে আর্থিক জরিমানা করায় বাজারের ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।
একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা ভ্রাম্যমান আদালতের টিমকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে দুই বিজিবি ও দুই পুলিশ সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চার সদস্য আহত হন।
ওই ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সিএ (গোপনীয় সহকারি) মো. কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান ও হামলার অভিযোগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় তলিয়ে গেছে কুড়িগ্রাম, শেরপুর ও সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল
তবে ঝগড়ারচর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমাছ আলী বলেন, ‘কাপড় ব্যবসায়ী লিটনকে মারধোর করার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন এবং তাতেই বুধবার দুপুরে অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটেছে।’
শ্রীবরদীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা আক্তার বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে কাউকে মারধোর করা হয়নি। বরং প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত সহনশীলতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। ওই ঘটনায় কেবল স্থানীয় ব্যবসায়ীরাই নয়, কতিপয় দুস্কৃতিকারীও জড়িত রয়েছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’