রংপুর মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রুহি নামে এক তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় প্রেমিক মিথুন ওরফে আকাশকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া দায়িত্ব অবহেলার দায়ে দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রুহির সঙ্গে রংপুর নগরীর ৯নং ওয়ার্ডের বাহারকাছনা রাম গোবিন্দমোড় এলাকার আকাশের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের মার্চে মেয়েটি ঝিনাইদহ থেকে আকাশের সঙ্গে দেখা করতে আসে। এসময় স্থানীয়রা তাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিয়ে যায়। পরে তাকে তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এরপর গত শনিবার (২২ জানুয়ারি) আবারও মেয়েটি আকাশের সঙ্গে দেখা করতে আসে। একপর্যায়ে আকাশের মুঠোফোন বন্ধ পেয়ে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে থাকে মেয়েটি। শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ৯৯৯ এ খবর পেয়ে হারাগাছ থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে থাকা অবস্থায় রবিবার দুপুরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে রুহি। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: রংপুরে ‘পুলিশি নির্যাতনে’ মৃত্যু: ৩ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন হাইকোর্টের
এঘটনায় সোমবার বিকালে রুহির বাবা সেকেন্দার আলী বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে কথিত প্রেমিক আকাশের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় রংপুরের গঙ্গাচড়া থেকে কথিত প্রেমিক মিথুন ওরফে আকাশকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার আকাশ গঙ্গাচড়ার ধামুর এলাকার এবাদত হোসেনের ছেলে।
নিহত রুহি (১৯) ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ড থানার হরিয়ারঘাট গ্রামের সেকেন্দার আলীর মেয়ে।
এদিকে, থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় ইতোমধ্যে দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) হোসেন আলী জানান, রুহির বাবা সেকেন্দার আলী আকাশকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মেয়েটির মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আকাশকে শনাক্ত করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় তাকে গঙ্গাচড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: রংপুরে ‘পুলিশি নির্যাতনে’ মৃত্যু: তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ
অপরদিকে, ওই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় রংপুর নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মেনহাজুল আলম ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) মাহবুব-উল-আলম।