বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের সহযোগিতায় যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকা থেকে জাহিদকে গ্রেপ্তার করে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। পরে রাতেই তাকে সিরাজগঞ্জে নিয়ে আসা হয়।
গ্রেপ্তার জাহিদুল সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সাহেদনগর (ব্যাপারী পাড়া) মহল্লার টিক্কা ব্যাপারীর ছেলে।
শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ সদর থানা চত্বরে পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম (বিপিএম) এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, জিজ্ঞাসাবাদে জাহিদ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্যমতে সাহেদ নগর ব্যাপারী পাড়ার একটি ডোবা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে কাউন্সিলর হত্যায় ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগের রাতে আসামিরা গোপন বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয় পরাজিত হলেই কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালানো হবে এবং সেই প্রস্তুতি নিয়েই ভোটকেন্দ্রে যায় আসামিরা। বার বার পরাজিত হওয়ায় অপর প্রার্থী ও মামলার প্রধান আসামি শাহাদৎ হোসেন বুদ্দিন এবং তার সমর্থকরা এ পরিকল্পনা করে বলে জানায় সে।
পুলিশ সুপার জানান, জাহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে কাউন্সিলর প্রার্থী শাহাদৎ হোসেন বুদ্দিনের সমর্থক হিসেবে নির্বাচনের তিন দিন আগে ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জে আসে। দুদিন প্রচারণায় অংশ নেয়ার পর নির্বাচনের আগের দিন অন্যান্য আসামিরা পরিকল্পনা করে এবং তার হাতে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি দেয়া হয়। এছাড়াও অপর এক আসামির বাড়িতে রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র মজুদ রাখা হয়। ফলাফল ঘোষণার সময় প্রার্থী শাহাদৎ হোসেন বুদ্দিনসহ ছুরি নিয়ে শহিদগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে উপস্থিত হয় জাহিদুল। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তরিকুল ইসলাম খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তরিকুলের পেটে ছুরিকাঘাত করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। এরপর ছুরিটি নিজ বাড়িতে লুকিয়ে রেখে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার ধলপুরে চলে যায় সে।
আরও পড়ুন: পৌর নির্বাচন: সিরাজগঞ্জে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী নিহত
তিনি বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের বিভিন্ন টিমের কাজ অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি অল্পদিনের মধ্যেই ভালো কিছু করতে পারব। বিজয়ী কাউন্সিলর তরিকুল ইসলাম খানের হত্যাকারী কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।’
এ সময় সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধ আক্তার, প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সিরাজগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৫ ভোটে বিজয়ী হওয়ার ফলাফল ঘোষণার পর প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হন তরিকুল ইসলাম খান। এ ঘটনার পরদিন রবিবার রাতে নিহতের ছেলে ইকরামুল হাসান হৃদয় বাদী হয়ে পরাজিত প্রার্থী ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন বুদ্দিনসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪০/৫০ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর ২৭ নম্বর আসামি স্বপন ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার ও চার দিন পর মূল হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।