কুষ্টিয়ায় হাত-পা বেঁধে চারতলা বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে রুবেল হোসেন নামে এক কলেজছাত্রকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের কোর্টপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রশি দিয়ে হাত-পা ও কাপড় দিয়ে মুখ বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুবেলের মৃত্যু হয়।
নিহত কলেজছাত্র রুবেল হোসেন (২২) কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।
রুবেল কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাওয়ার ডিপার্টমেন্টের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র। শহরের কোর্টপাড়া এলাকায় একটি চারতলা ভবনের তৃতীয় তলায় ছাত্রাবাসে থাকতেন তিনি।
ওই ছাত্রাবাসের ছাত্র আনিসুর রহমান জানান, ‘রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে চিৎকারের শব্দ শুনে নিচে নেমে এসে দেখি হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় রুবেল পড়ে আছে। তখন স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
আনিসুর আরও বলেন, ‘বিকাল থেকে রুবেলকে চিন্তিত থাকতে দেখেছি। সন্ধ্যার পরে একসঙ্গে ছাত্রাবাসের খরচের হিসাব করেছি। তবে এই ঘটনা কীভাবে কেন ঘটলো তা জানি না।’
প্রত্যক্ষদর্শী কামরুল হাসান শুভ জানান, হাত-পা ও মুখ বেঁধে মারধর করে রুবেলকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার দুই হাত, দুই পা সাদা রশি ও মুখ লাল কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। ঘটনার পর পুলিশের সঙ্গে ভবনের তিনতলায় গেলে ওই রুমের বারান্দায় একই রঙের রশি টানানো দেখা যায়।
এটি হত্যাকাণ্ড দাবি করেন শুভ। তবে কে বা কারা হত্যা করেছে তা জানেন না তিনি।
মাহিম নামের স্থানীয় এক যুবক জানান, ছাত্রাবাসের ছাত্ররা এ বিষয়ে কিছু জানে না বলে জানায়। ভবনটির ছাদ বন্ধ থাকে। বাড়ির মালিক ছাড়া ছাদের চাবি ছাত্রাবাসের এক ছেলের কাছে থাকে। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কিছু জানতে পারবে।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই ছাত্রাবাসে গিয়ে পুলিশকে রুবেলের সঙ্গে একই রুমে থাকা হৃদয় ও রাইসুলসহ অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায়।
বিষয়টি তদন্ত করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।
কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, ‘আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাত ১১টার দিকে রুবেলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’