রবিবার বেলা ২টা ৫০ মিনিটে স্প্যানটি সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের ৩১ ও ৩২ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হয়। এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি বসানো হয় ২২তম স্প্যান।
সেতু বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, রবিবার সকাল ৯টার দিকে মাওয়ার কুমারভোগের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে প্রায় তিন হাজার টন ওজনের স্প্যানটি নিয়ে রওনা হয় ভাসমান একটি জাহাজ। সকাল সোয়া ১০টার দিকে ৩১ নম্বর খুঁটির কাছে পৌঁছায় জাহাজটি। এরপর যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে স্প্যানটি খুঁটির ওপরে নিয়ে আসা হয়। আর বেলা ২টা ৫০ মিনিটে স্প্যান বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়।
এদিকে আরও একটি পিলারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে ৩৭টি পিলার সম্পন্ন হলো। বাকি ৫টি পিলার এপ্রিলের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে। ৪২টি পিলারের ওপর বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। যার ২২টি ইতোমধ্যে বসে গেছে। আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সবগুলো স্প্যান পিলারের ওপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, ৩১ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর ২৩তম স্প্যান বসানোর কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন সকাল থেকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে স্প্যান বসানো সম্ভব হয়নি। প্রতিমাসেই তিনটি স্প্যান বসানোর কথা থাকলেও জানুয়ারিতে স্প্যান উঠেছে দুটি। তবে ফেব্রুয়ারিতে এর সংখ্যা বাড়বে।
পদ্মা সেতুর খুঁটির ওপর যে স্প্যানগুলো বসানো হয়েছে, সেই স্প্যানের ওপর (নিচের অংশে) ইতোমধ্যে এক কিলোমিটারের বেশি রেল স্ল্যাব বসে গেছে। আর স্প্যানের ওপর প্রায় ৪০০ মিটার রোডওয়ে স্ল্যাব বা রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ পর্যন্ত মূল সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৮৫.০৫ শতাংশ। আর সেতুর সার্বিক অগ্রগতি ৭৬.০৫ শতাংশ।
আব্দুল কাদের আরও জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে পদ্মা সেতু নির্মাণে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। কারণ পদ্মা সেতুতে প্রায় ১১০০ চীনা নাগরিক কর্মরত রয়েছেন। এদের মধ্যে চীনা নববর্ষের ছুটিতে নিজ দেশে গিয়ে আটকা পড়েছেন প্রায় ২০০ চীনা নাগরিক।
তিনি আরও বলেন, ‘করোনা ভাইরাস নিয়ে আমরা আতংকিত নই। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চীনা কর্মকর্তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা আলাদা। যারা তাদের সার্ভ করেন, তারা যেন সব সময় সেফটি ড্রেস (মাক্স ও গ্লাভস) পরিধান করে থাকেন, সেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এছাড়া চীনা কর্মীদের আলাদা ক্যাম্প রয়েছে। অন্যদের সাথে যেন অতিরিক্ত মেলামেশা না করেন, সে বিষয়গুলোও দেখা হচ্ছে। চীন থেকে ইতোমধ্যে ৩২ জন চীনা নাগরিক এসেছেন। তাদেরকে প্রকল্প এলাকায় আলাদা করে রাখা হয়েছে।’
‘ওই সকল চীনা নাগরিক বিশেষ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন এবং তারা সবাই সুস্থ আছেন,’ বলেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের।