বাংলাদেশ
নির্বাচনে আস্থার সংকট দূর করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা প্রয়োজন: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকার, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে আরও বলিষ্ঠ ও স্বচ্ছ ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, ‘নাগরিকদের মনে এখনো যে শঙ্কা ও ভীতি রয়েছে, তা দূর করা না গেলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।’
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে খুলনায় এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ আয়োজিত আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভাটি নগরীর হোটেল সিটি ইনে অনুষ্ঠিত হয়।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের পরিচালনায় খুলনার জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, ছাত্র, নারী নেতৃত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দুই শতাধিক মানুষ এই সভায় অংশ গ্রহণ করেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, চলমান সংস্কার, বিচার, ও নির্বাচনি প্রক্রিয়ার আলোচনা ও বিতর্কে পিছিয়ে পড়া বা সুবিধাবঞ্চিত জনগণের চাহিদা ও আশা তুলে ধরতে এবং তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম একটি নাগরিক ইশতেহার তৈরির কার্যক্রম শুরু করেছে, যা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তাদের ইশতেহারে বিশেষভাবে সন্নিবেশিত করতে অনুরোধ জানানো হবে।
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, ‘জনগণ আস্থা না পেলে নির্বাচন গণতান্ত্রিক রূপ পায় না। তাই মুক্ত আলোচনা, স্বচ্ছতা ও সততার ভিত্তিতে আস্থা পুনরুদ্ধার আজ সময়ের দাবি। দেশ নির্বাচনমুখী হয়ে উঠছে, নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু আমরা কেমন নির্বাচন পাব—সেই প্রশ্ন জনগণের মনে রয়ে গেছে।’
খুলনা অঞ্চলের উন্নয়ন প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত এ অঞ্চলের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ, বাস্তবসম্মত ও জবাবদিহিমূলক আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি জানান, পদ্মা সেতুর পর যে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল, বাস্তবে তার প্রভাব দৃশ্যমান হয়নি—জমির দাম বাড়লেও শ্রমিকের মজুরি বাড়েনি। কৃষিভিত্তিক ও চিংড়িনির্ভর শিল্পসহ পর্যটন খাতেও বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন প্রজন্মকে শিল্পে আকৃষ্ট করতে অঞ্চলভিত্তিক শিল্পায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, সুন্দরবন ও সাংস্কৃতিক সম্পদকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠা সম্ভব।
মোংলা বন্দরকেন্দ্রিক সংস্কারের ক্ষেত্রে তিনি সতর্ক করে বলেন, “সংস্কার প্রয়োজন, বিদেশি বিনিয়োগও দরকার; কিন্তু অসচ্ছতা ও তাড়াহুড়োর কারণে সঠিক সংস্কারও ব্যর্থ হতে পারে। সংস্কারের টেকসই নিশ্চিত করতে জনমানুষের সঙ্গে আলোচনাভিত্তিক স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বন্দর ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন রপ্তানি ও আমদানিমুখী অর্থনীতির জন্য অত্যাবশ্যক হলেও অস্বচ্ছ তাড়াহুড়ো ভবিষ্যতে সুফলকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তাই অর্থনৈতিক সংস্কারে স্বচ্ছতা, গণআলোচনা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
তিনি জনগণ, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকে খুলনা অঞ্চলের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানান।
সভায় সমাপনী বক্তব্য দেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের খুলনা মহানগর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খুলনা মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, এনসিপির ডা. আব্দুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
৩৮ দিন আগে
বিনিয়োগ ও নীতিগত স্থিতিশীলতা না এলে জ্বালানি সংকটে পড়বে বাংলাদেশ: বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে স্থিতিশীল করতে এখনই পদক্ষেপ না নিলে পরবর্তী সরকার এই খাত নিয়ে ব্যাপক সংকটে পড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতা ও শিল্প বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীতে ‘পাওয়ারিং প্রসপারিটি: ক্রিয়েটিং অ্যা স্টেবল অ্যান্ড ব্যাংকেবল এনার্জি ফিউচার ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা এ সতর্কবার্তা দেন। পলিসি এক্সচেঞ্জ এবং ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে।
দেশে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণে বিদেশি বিনোয়োগ বাধাগ্রস্ত হয় বলে বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সমস্যা সমাধানের উপায় হিসেবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে টেকসই অর্থায়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ও দ্বিপক্ষীয় পরিকল্পনা প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
ইন্ডেপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক মো. তামিম বলেন, বাস্তবভিত্তিক ও চাহিদাভিত্তিক পরিকল্পনার অভাব পরবর্তী সরকারকে তীব্র জ্বালানি সংকটের মধ্যে ফেলতে পারে। বর্তমান নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্প্রসারণ পরিকল্পনার সমালোচনা করে তিনি একে ‘ভিত্তিহীন আমলাতান্ত্রিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা’ বলে মন্তব্য করেন। এ সময় বাপেক্সের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক কোম্পানির মাধ্যমে গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যাপারে পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ুন সিক, বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু, জামায়াতে ইসলামের শুরা সদস্য ড. মোবারক হোসেন, বিএনপির উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, এমসিসিআই সভাপতি কামরান রহমান, বিডার মহাপরিচালক মো. আরিফ হোসেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক, ইবিএল, আইডিসিওএল এবং কনফিডেন্স পাওয়ার রংপুর লিমিটেডের প্রতিনিধিরা।
এ সময় বক্তারা বলেন, বিদ্যুতের সক্ষমতা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট থেকে ২৮ হাজার ৩৫৯ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। তবে অবকাঠামোগত দুর্বলতার জন্য ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ সক্ষমতার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে বলে সতর্ক করেন তারা।
ইএমএ পাওয়ার ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক আবু চৌধুরী বলেন, বিনিয়োগ কমে গেলে সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে।
বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০২৯ সালে ৩৫ হাজার মেগাওয়াটে পৌঁছাবে। কিন্তু কিছু প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া, গ্যাস স্বল্পতা এবং নতুন প্রকল্পের অভাবে ২০৩৫ থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে তা কমে ৩০ হাজার মেগাওয়াটে নেমে যেতে পারে।
দেশে প্রতি বছর ৬ শতাংশ হারে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে তারা আরও বলেন, ২০৩৩ সালের মধ্যেই চাহিদা সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যাবে। কারণ ২০৪০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪০ হাজার ৯০০ মেগাওয়াটে পৌঁছাবে।
তাদের মতে, বিদ্যুতের অতিরিক্ত সক্ষমতার ধারণাটি আসলে বিভ্রান্তিমূলক। কারণ ২০৩২ সালের পর প্রকৃত উৎপাদন কমে যাবে। ২০৪০ সালে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে ৩৫ হাজার ৫৫০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিপরীতে ওই সময় প্রকৃত উৎপাদন হবে ২০ হাজার ৯০১ মেগাওয়াট, অর্থাৎ ঘাটতি হবে ১৪ হাজার ৬৫০ মেগাওয়াট।
এই খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করেছেন এবং বেসরকারি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করেছেন যা মোট বিনিয়োগের ৪৮ শতাংশ।
দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রাকৃতিক গ্যাস নির্ভর। বর্তমানে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪৩ শতাংশই প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। ফলে গ্যাসের সরবরাহ কমে গেলে বিদ্যুৎ উপাদনেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মত দিয়েছেন বক্তারা।
২০৩৩ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে হ্যাভি ফুয়েল অয়েল (এইচএফও) জ্বালানির প্রধান উৎস হয়ে উঠতে পারে, যা ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হবে বলেও ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জোর দিয়ে বলেন, নীতিগত সমন্বয় না করা হলে টেকসই জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।
২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন ২০ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে তা ৩০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের মধ্যে রয়েছে— বিভিন্ন প্রক্রিয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানো, দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন আকৃষ্ট করতে গৃহীত নীতি বারবার পরিবর্তন না করে তা চালু রাখা, বিভিন্ন প্রকল্প ও নীত বাস্তবায়নের ধীরগতি ও বিলম্বের কারণ খুঁজে বের করে সেদিকে নজর দেওয়া।
অনুষ্ঠানে আর্থিক বিভাগের সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিজিএমইএ, এমসিসিআই, বিডা ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
৩৯ দিন আগে
প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে ‘ডিএসসিএসসি সনদ বিতরণ ২০২৫’ অনুষ্ঠিত
সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজের ডিএসসিএসসি কোর্স-২০২৫-এর গ্র্যাজুয়েশন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) মিরপুর সেনানিবাসে ডিএসসিএসসি কমপ্লেক্সে এই সনদ বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সামরিক শিক্ষায় উৎকর্ষতার স্তম্ভ হিসেবে ডিএসসিএসসির প্রতি নেতৃত্ব গঠনে জাতির আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্নকারী সকল অফিসারকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি তাদের এই কোর্সে অর্জিত জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সংকল্পকে জাতির অগ্রগতিতে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন। এ ছাড়াও, শীর্ষস্থানীয় সামরিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডিএসসিএসসির বিশ্বব্যাপী অর্জিত সুনামের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কমান্ড্যান্ট, মেজর জেনারেল চৌধুরী মোহাম্মদ আজিজুল হক হাজারী প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণে সাড়া দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। দীর্ঘ এক বছর কঠোর প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞান নিজ নিজ বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
ডিএসসিএসসি কোর্স ২০২৫-এর সাফল্য নিশ্চিত করতে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বাহিনী সদর দপ্তরসমূহ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং সকল অংশীজনের প্রতিও নিজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আইএসপিআরের তথ্যমতে, ডিএসসিএসসি কোর্স ২০২৫-এ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭০ জন, নৌবাহিনীর ৪৫ জন এবং বিমান বাহিনীর ৩৬ জন কর্মকর্তা গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের ৩ জন কর্মকর্তা এবং চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, জর্ডান, কেনিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, লাইবেরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মালি, নেপাল, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, সিয়েরা লিওন, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, তুরস্ক ও উগান্ডা থেকে আগত ৫৮ জন কর্মকর্তা অংশ নেন। সব মিলিয়ে এ বছর মোট ৩১১ জন প্রশিক্ষণার্থী গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। এতে বাংলাদেশ পুলিশের একজন নারী কর্মকর্তাসহ মোট ১৪ জন মহিলা কর্মকর্তা গ্র্যাজুয়েশন অর্জন করেন, যা নারীর অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষমতায়নে প্রতিষ্ঠানের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উচ্চতর দায়িত্ব ও নেতৃত্ব প্রদানের জন্য প্রস্তুত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৫,৩২৯ জন কর্মকর্তা, ২০ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং বন্ধুপ্রতিম ৪৫ দেশের ১,৪৬৫ জন বিদেশি সামরিক কর্মকর্তাসহ মোট ৬,৮১৪ জন অফিসার এখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
অনুষ্ঠানে সেনা ও নৌবাহিনী প্রধান, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা (চাকরিরত এবং অবসরপ্রাপ্ত), বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অধ্যাপক, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের মিলিটারি/ডিফেন্স অ্যাটাচি এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
৩৯ দিন আগে
উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সম্মিলিত নিরাপত্তা প্রচেষ্টার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন, যাতে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখরভাবে সম্পন্ন করা যায়।
তিনি বলেছেন, ‘এখন নির্বাচনের সময়। আমরা প্রস্তুত, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা প্রয়োজন।’
বুধবার (১৯ নভেম্বর) মিরপুর সেনানিবাসে ডিএসসিএসসি কমপ্লেক্সে সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) কোর্স ২০২৫-এর সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়াকে বড় দায়িত্ব উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি একটি বড় প্রয়াস। অভ্যুত্থান থেকে নির্বাচনের পথে যাত্রা। এটি হবে শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর, আনন্দ ও মিলনের সময়। মানুষ তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করতে পারবে।’
সংস্কারমূলক কর্মসূচির প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা অতীতে ফিরে যেতাম, সকল ত্যাগ বৃথা যেত। আমাদের স্বপ্নের দেশ গড়ে তুলতে হবে। এই ছিল সংস্কারের সংকল্প। সংস্কার একটি বিষয়, কিন্তু তা ঠিকমতো সম্পন্ন করতে হবে, যাতে আমরা আর কোনো ভুল না করি— এটিও জানা জরুরি।’
৩৯ দিন আগে
শ্রমবাজার খুললেও মালয়েশিয়ার বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব নয়: আসিফ নজরুল
বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ফের শ্রমবাজার খুললেও ১০টি শর্ত যুক্ত করেছে মালয়েশিয়া, যেগুলোকে অগ্রহণযোগ্য মনে করছে ঢাকা। এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব নয়। এগুলো পূরণ করতে গেলে আবারও সিন্ডিকেট হবে।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) হোটেল শেরাটন ঢাকায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও’র সহযোগিতায় তৈরি ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্লাটফর্মের (ওইপি) উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
অতীতে বহুবার জটিলতা এবং সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে। ২০১৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে একবার বন্ধ হওয়ার পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নতুন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে ২০২২ সালে এটি আবার চালু হয়। কিন্তু সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশসহ অন্যান্য কর্মী প্রেরণকারী দেশ (যেমন: ভারত, নেপাল, মিয়ানমার) থেকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
গত অক্টোবরের শেষের দিকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি চিঠি দিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা যৌক্তিক করার জন্য ১০টি বাধ্যতামূলক মানদণ্ড নির্ধারণ করে। তাদের দাবি, এতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
এই শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: কমপক্ষে ৫ বছর কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; বিগত ৫ বছরে কমপক্ষে ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর রেকর্ড থাকতে হবে; অন্তত ৩টি ভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গফুটের নিজস্ব স্থায়ী অফিস থাকতে হবে; নিজস্ব প্রশিক্ষণ সুবিধা থাকতে হবে; মানবপাচার, জোরপূর্বক শ্রম, মানি লন্ডারিং বা অন্য কোনো অপরাধে সংশ্লিষ্ট না থাকার রেকর্ড থাকতে হবে।
বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের সংগঠনসহ অনেকেই এই শর্তগুলোকে ‘অযৌক্তিক, অবাস্তব ও বৈষম্যমূলক’ বলে মনে করছেন।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, ‘মালয়েশিয়া থেকে যে ১০টা শর্ত দিয়েছে, কয়েকটা শর্তের ব্যাপারে আমরা শক্ত আপত্তি জানিয়েছি। আমরা রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কথা বলার পরে মালেশিয়াকে জানিয়েছি যে এসব শর্ত মিটআপ (পূরণ) করা সম্ভব না। কারণ এগুলো মিটআপ করতে গেলে এখানে আবার সিন্ডিকেট হবে। অল্প কয়েকটি রিক্রুটিং এজেন্সি সুযোগ পাবে। এটি আমরা চাই না।’
তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়া আশ্বাস দিয়েছে যে তারা এগুলো বিবেচনা করবে। শ্রমবাজার সবসময় সবার জন্য উন্মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক আলাপ অব্যাহত রাখব।’
৩৯ দিন আগে
অক্টোবরে সড়কে মৃত্যু বেড়েছে ৫.৭৫ শতাংশ: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
দেশে গত অক্টোবর মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৮৬টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ১১২৮ জন। গত সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিল ১৩.৯ জন। অক্টোবর মাসে নিহত হয়েছে ১৪.৭ জন। এই হিসেবে অক্টোবর মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ৫.৭৫ শতাংশ।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, নিহত ৪৪১ জনের মধ্যে ১৯২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩৭ জন। এই সময়ে ৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত এবং ৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৪৬টি রেল দুর্ঘটনায় ৪৩ জন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১২১টি দুর্ঘটনায় ১১২ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২৬টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৩৭ জন, বাসের যাত্রী ৩০ জন, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি আরোহী ২৪ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ৭ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী ১০৩ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-টমটম-মাহিন্দ্র) ৩৪ জন এবং রিকশা-বাইসাইকেল আরোহী ৮ জন নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৬৬টি জাতীয় মহাসড়কে, ১৪৮টি আঞ্চলিক সড়কে, ৮১টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৮৭টি শহরের সড়কে এবং ৪টি অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৯৯টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২১৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৩টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৬০টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে— ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ত্রুটিপূর্ণ সড়ক; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ-র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজিকে।
সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪০ দিন আগে
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘিরে দেশে অস্থিরতা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ঘিরে দেশে কোনো অস্থিরতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর একটা অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিজয় দিবস উপলক্ষে কোনো শঙ্কা দেখছেন কিনা, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রায় হওয়ার পরে কোনোরকম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়নি। বিজয় দিবসেও কোনো অস্থিরতার শঙ্কা নেই। কোনো কর্মসূচিতেও পরিবর্তন নেই। আগে যেভাবে সব কর্মসূচি হয়েছে, এবারও সেভাবে হবে। গতবার প্যারেড হয়নি, এবারও হবে না।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া কাউকে উঠিয়ে নেওয়া উচিত নয়, কিন্তু গতকাল রাতে ডিবি পরিচয়ে এক সাংবাদিককে তুলে নেওয়া হয়েছে। পরে আবার ফেরতও দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই জিনিসটা আমি প্রথম শুনলাম। অনুসন্ধান করার পর হয়তো আমি জানতে পারব।
এভাবে তুলে নেওয়াটা অপরাধ কিনা, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা আমি দেখব।’
৪০ দিন আগে
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ১৭০ বাংলাদেশি
লিবিয়ায় অনিয়মিতভাবে অবস্থানরত ও দেশে ফিরতে আগ্রহী ১৭০ জন বাংলাদেশিকে লিবিয়া সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় দেশে ফেরত আনা হয়েছে।
সমন্বয়ে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে স্থানীয় সময় ৬টা ১০ মিনিটে বুরাক এয়ারের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে তারা ঢাকায় পৌঁছান।
ফেরত আসা বেশিরভাগ বাংলাদেশি মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপ যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন বলে জানা যায়। তাদের অনেকেই সেখানে বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ঢাকায় পৌঁছালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আইওএমের কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিজেদের দুর্ভোগ ও অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার অনুরোধ জানান।
আইওএম তাদের প্রত্যেককে পথখরচ, খাদ্যসামগ্রী ও প্রাথমিক চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে। লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক অবস্থায় থাকা বাংলাদেশিদের নিরাপদে দেশে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা যৌথভাবে কাজ করছে।
৪১ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোলটস উপদেষ্টার অফিসকক্ষে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে শেখ হাসিনার রায়-পরবর্তী জনপ্রতিক্রিয়া, জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ ও এ উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি, বন্দি প্রত্যর্পণ, সাইবার ক্রাইম ও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ দুদেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, জার্মানি ও বাংলাদেশ পরীক্ষিত বন্ধু। অদূর ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
নির্বাচনের তারিখ ও সময় এবং সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আশা করি, নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর নির্দিষ্ট দিন ও তারিখ নির্ধারণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের যে তারিখই নির্ধারণ করুক, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
শেখ হাসিনার রায় পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ছোটখাটো দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটাতে চাইলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
অপরাধের মাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, অপরাধ বাড়ছে না। এটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে।
তিনি বলেন, মানুষ এখন স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারছে, যা বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে করতে পারেনি।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক) খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন আনিয়া কেরস্টেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৪১ দিন আগে
শাজাহানপুরে বাসা থেকে গৃহপরিচারিকার মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীর শাজাহানপুরের মালিবাগ বাজার রেলগেট-সংলগ্ন একটি বাসার নিচতলার কক্ষ থেকে মমতাজ বেগম (৫৩) নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মমতাজ বেগম গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে আজ সকালের দিকে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত মমতাজ বেগম লালমনিরহাট সদরের সাতপাটকি মহেন্দ্রনগর গ্রামের মৃত জুবেদ আলীর মেয়ে। মালিবাগ রেলগেট বাজার এলাকার একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন তিনি।
শাজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান জানান, খবর পেয়ে মালিবাগ বাজার রেলগেট-সংলগ্ন ৪২৫/এ নম্বর বাসার নিচতলার একটি কক্ষ থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এসআই জানান, স্থানীয় প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া রুবিনা আক্তার ও কুলসুমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মমতাজ বেগম গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। গত ২-৩ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে তিনি ঘরেই ছিলেন। পরে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
তিনি আরও বলেন, গৃহপরিচারিকার মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। এটি বিষক্রিয়ায় মৃত্যু কি না, বা যৌন নিপীড়ন বা ধর্ষণের ঘটনা আছে কি না—এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
৪১ দিন আগে