রাজনীতি
তৃণমূলের সমর্থন যোগাতে ৪ মার্চ থানা পর্যায়ে মিছিল করবে বিএনপি
চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠন ও সমমনা দলগুলো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে ৪ মার্চ (আগামী শনিবার) তাদের বিভাগীয় শহরের আওতাধীন সকল থানায় মিছিল করবে।
শনিবার(২৫ ফেব্রুয়ারি) দেশের সব জেলায় তাদের পদযাত্রা শুরুর পরপরই প্রধান বিরোধী দল নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে - যা একই ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ।
এ কর্মসূচিতে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, প্রতিবাদ করা হবে এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে কোনো শর্ত ছাড়াই মুক্তি দিতে , মূলত তার বিরুদ্ধে করা 'মিথ্যা' মামলা প্রত্যাহার করতে সরকারকে চাপ দেয়া এবং দলের ১০ দফা দাবি অবিলম্বে মেনে নেয়ার জন্য এই কর্মসূচি পালন করা হবে।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারকে না সরালে বিপদে পড়বে বাংলাদেশের জনগণ: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে সরকারকে তাদের ১০ দফা দাবি মেনে নিতে এবং পদত্যাগে বাধ্য করতে দলীয় নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে দলের আন্দোলনকে সফল করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলা পর্যায়ের কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলের সিনিয়র নেতারা অংশ নেন।
৯টি জেলায় সংঘর্ষ ও অবরোধের মধ্যে ১০ দফা দাবি আদায়ে বিএনপি শনিবার দেশের সব জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে।
ঝালকাঠি, নীলফামারী ও নেত্রকোনায় তাদের পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করতে গেলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া পটুয়াখালীতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কুমিল্লায় মিছিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি চালায় বলে তারা জানান।
পুলিশের বাধায় বাগেরহাট ও রাজবাড়ীতে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করতে পারেনি বিএনপি এবং গাজীপুর ও মাগুরায় পুলিশের বাধায় দলীয় নেতাকর্মীরা কর্মসূচি স্থগিত করেছে।
আরও পড়ুন: ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
এছাড়া মিছিল শুরুর আগে নাটোরে দলের কার্যালয়ের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণে দলটির পদযাত্রা কর্মসূচি বানচাল করা হয়।
মির্জা ফখরুল তার বিবৃতিতে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, চলমান আন্দোলনকে ভয় পেয়ে সরকার বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ মিছিল কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
বিভিন্ন জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ‘ক্যাডারদের’ হামলায় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো সরকার পতনের জন্য একযোগে আন্দোলন শুরু করে, অথবা অন্তত আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সর্ব-গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় বিধান উপলব্ধি করে।
এছাড়া গত ২৮ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর পাঁচটি এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।
দলটি তাদের ১০ দফা দাবি জানাতে সারাদেশের সব ইউনিয়ন ও বিভাগীয় শহরে একই ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে বিএনপির পদযাত্রা থেকে ২৫ নেতাকর্মী আটক
জনগণের কাছে দলীয় নেতাদের যেতে বললেন শেখ হাসিনা
আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে আরও শক্তিশালী করতে স্থানীয় দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কে এম শাখাওয়াত মুন বলেন, শেখ হাসিনা দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের গত ১৪ বছরে অর্জিত সাফল্যের কথা তুলে ধরতে বলেছেন।
তিনি বলেন, জনগণের দ্বারে দ্বারে নেতা-কর্মীদের যেতে হবে এবং ২০০৯ সাল থেকে সারাদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তা তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে।
আরও পড়ুন: জঙ্গিবাদ, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সতর্কতা বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
বিদেশিদের সমর্থনে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ আর নেই: প্রধানমন্ত্রী
বাগেরহাটে বিএনপির পদযাত্রা থেকে ২৫ নেতাকর্মী আটক
বাগেরহাটে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে কেন্দ্রীয় নেতাসহ ২৫ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার সকালে শহরে পদযাত্রা বের করলে তাদের আটক করা হয়।
কর্মসূচিতে প্রথমে পুলিশ বাধা দেন এবং পদযাত্রা শেষ করে নেতাকর্মীরা ফিরে যাওয়ার সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় এবং জেলা পর্যায়ের ২৫ জন নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। তবে বিএপির দাবি আটকের সংখ্যা ৪০ জনের বেশি।
পুলিশ বলছে, পদযাত্রার নামে নাশকতা ও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চলছি গোপন সূত্রে এমন খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করেছে। আটকৃতদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম এবং শাহেদ আলী রবিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: অনুকূল পরিবেশ থাকলে রাজনীতি করবেন খালেদা জিয়া: বিএনপিএদিকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাঁধা এবং নেতাকর্মীদের আটকের প্রতিবাদে শনিবার বেলা ১১টার দিকে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয়য় কমিটির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এবিএম ড. ওবায়দুল ইসলাম।সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় পুলিশ বাধা দেন এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে কেন্দ্রিয় ও জেলা পর্যায়ের ৪০ জনেরও বেশি নেতাকর্মীকে আটক করে।
সারা দেশে পদযাত্রায় বাধা এবং নেতাকর্মীদের আটকের প্রতিবাদে ৪ মার্চ সকল মহানগরের প্রতিটি থানায় পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম ড. ওবায়দুল ইসলাম। আটক বিএনপির সকল নেতার্মীর মুক্তির দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, পদযাত্রার নামে নাশকতা ও বিশৃংখলা সৃষ্টির পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে গোপন সূত্রে-এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ২০ থেকে ২৫ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকৃতদের বিষয়ে যাচাই বাছাই চলছে।আরও পড়ুন: ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
জঙ্গিবাদ, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সতর্কতা বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের অভিযান অব্যাহত রাখবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে অপশক্তির বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এই বিষয়ে আপনাদের সকলকেও সতর্ক থাকতে হবে।’
শনিবার কোটালীপাড়া উপজেলার ভাঙ্গার হাটস্থ টিটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সন্তানরা যাতে মাদক ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয় সেজন্য তিনি সকল অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে বলেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়ায় ৪৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং আরও পাঁচটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে একই স্কেলে তুলনা করার বিষয়ে প্রবল আপত্তি করে তিনি বলেন, কেউ কেউ আওয়ামী লীগকে বিএনপির সঙ্গে তুলনা করেন, আবার কেউ বলেন বড় দুই দল।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে: মার্কিন কর্মকর্তাকে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ও তার ২০ দলীয় জোট ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল এবং বাকি আসনে আওয়ামী নেতৃত্বাধীন মহাজোট জয়লাভ করেছিল।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তাহলে কিভাবে এই দুই দল এক হতে পারে?’
তিনি বলেন, বিএনপি শাসনামলে দেশ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, গ্রেনেড হামলা, ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা ও পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘তারা মানুষকে কিছুই দেয়নি, তারা শুধু জনগণের অর্থ লুট করেছে।’
তিনি বলেন, বিএনপি নিজেদের দলের গঠনতন্ত্রও মানে না।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীরা দলকে নেতৃত্ব দিতে পারে না।
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘বিএনপি একজন নেতাও কি পায় না যে অন্তত সাজাপ্রাপ্ত আসামি নন?’
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তার ছেলের নেতৃত্বে বিএনপি চলছে, দুজনেই সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
তিনি বলেন, ‘যারা নিজের দলের গঠনতন্ত্র মানে না, নিয়ম মানে না, আইন মানে না, সেই দলের সঙ্গে কীভাবে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে।’
তিনি বলেন, যারা ওই ‘বড় দুই দল’ বলেন, তারা ভুল করেন।
আরও পড়ুন: অনির্বাচিত সরকারের দুঃস্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসুন: প্রধানমন্ত্রী
জনগণকে হয়রানি না করে কর দিতে উৎসাহিত করুন: প্রধানমন্ত্রী
২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার অভিযোগ করেছেন, ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা হত্যার সঠিক তদন্ত হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি এই ঘটনার যেভাবে তদন্ত হওয়া উচিত ছিল এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধী ও মূল হোতাদের বের করে আনার জন্য যেভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া চালানো উচিত ছিল, দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি।’
এ ঘটনার ১৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে বনানী সেনা কবরস্থানে স্থাপিত স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত করেছে, কিন্তু জাতি এখনো সেই তদন্তের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পায়নি।
বিএনপি নেতা বলেন, বিদ্রোহ ও পরবর্তী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন যে একই ঘটনার সঙ্গে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা আরেকটি মামলার বিচার এখনও শেষ হয়নি।
আরও পড়ুন: বিডিআর বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা ষড়যন্ত্রের ফল: বিএনপি
তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) অনেক সৈনিক যারা নিজেকে নির্দোষ দাবি করে, তারা এখনও কারাগারে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
ফখরুল বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমি কারাগারে ছিলাম। সেখানে দেখলাম, এই মামলায় আসামি করা অনেক প্রাক্তন বিডিআর সদস্য ১৩/১৪ বছর ধরে অমানবিক জীবনযাপন করছেন। তাদের পরিবার ও ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে গেছে।’
তিনি সরকারের কাছে বিস্ফোরক মামলার বিচার সম্পন্ন করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান, যাতে যারা নির্দোষ তারা তাদের পরিবার নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।
২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে তৎকালীন বিডিআর এর একটি বিদ্রোহী দল পিলখানা সদর দপ্তরে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে।
৫ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে ঢাকার একটি আদালত এ মামলায় ১৫০ বিডিআর সদস্য ও দুই বেসামরিক নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট ১৫২ আসামির মধ্যে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করে।
পিলখানা সদর দপ্তরে সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর, সরকার বিদ্রোহ-বিধ্বস্ত আধাসামরিক বাহিনী বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাখে এবং এর লোগো ও ইউনিফর্ম পরিবর্তন করে।
ফখরুল সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে কবরস্থানে গিয়ে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং নিহত সেনা কর্মকর্তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
বিএনপির এই নেতা নিহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তাদেরকে তিনি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জাতির সম্পদ হিসেবে বর্ণনা করেন।
বিদ্রোহে নিহত তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভূঁইয়ার সঙ্গে তার স্ত্রীসহ তিনি কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন রাজনৈতিক: কাদের
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিরা এখনো চিহ্নিত হয়নি: বিএনপি
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সচিব মাহবুব আল আমিন মারা গেছেন
বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সচিব মাহবুব আল আমিন ডিউ শুক্রবার রাতে মারা গেছেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত ডিউ রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
শায়রুল বলেন, বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ডিউ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছিলেন।
আরও পড়ুন: ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা মারা গেছেন
সিলেট-২ আসনের সাবেক সাংসদ নুরুল আর নেই
সরকার সংবিধান নিয়ে তামাশা করছে: নজরুল
সরকার সংবিধান নিয়ে তামাশা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘আপনারা (সরকার) কী শুরু করেছেন? আপনারা সংবিধানের কথা বলছেন। আপনারা আসলে সংবিধান নিয়ে রসিকতা করছেন। সংবিধানে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা লেখা আছে, কিন্তু আপনারা মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা করেন। এই দুটি জিনিস কি একসঙ্গে যায়? সংবিধানে লিখেছেন যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, কিন্তু আপনারা বলছেন যে আপনারা কোনো ধর্মের প্রতি পক্ষপাতী না।’
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপ বন্ধ এবং দৈনিক দিন কালসহ বন্ধ হয়ে যাওয়া গণমাধ্যমগুলো পুনরায় চালু করার এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল 'কালো আইন' বাতিলের দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
সমাবেশে এই বিএনপি নেতা বলেন, সরকার সংবিধানকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে জনগণের আন্দোলন প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। ‘গণআন্দোলনকে দমন করা অসম্ভব। অতীতে কেউ তা করতে পারেনি। সব বাধা উপেক্ষা করে আমরা এগিয়ে যাব।’
আরও পড়ুন: অনুকূল পরিবেশ থাকলে রাজনীতি করবেন খালেদা জিয়া: বিএনপি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, তাদের দল ক্ষমতায় ফিরলে তারা ‘বর্তমান সরকার অন্যায়ভাবে যেসব সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে সেগুলো পুনরায় চালু করবে।’
যেসব টিভি চ্যানেল বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ‘মিথ্যা’ প্রতিবেদন ও অপপ্রচার চালাচ্ছে, প্রকৃত সাংবাদিকতার স্বার্থে তাদের এ ধরনের চর্চা বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।
লাখো মানুষের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণ ক্ষমতাসীন দলকে তা নষ্ট করতে দেবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের জনগণ এই সরকারকে উৎখাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। গ্রাম, এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষও একত্র হয়েছে এবং তারা কোনও দমনমূলক কর্মকাণ্ডকে ভয় পায় না।’
নজরুল ইসলাম খান শাসক দলকে ছদ্মবেশে চায়ের স্টলে গিয়ে বা বাসে চড়ে সরকার, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও নেতাদের সম্পর্কে জনগণ কী বলে তা শোনার পরামর্শ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারকে না সরালে বিপদে পড়বে বাংলাদেশের জনগণ: ফখরুল
আ. লীগ যখনই ক্ষমতায় গেছে তখনই অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে: মির্জা আব্বাস
অনুকূল পরিবেশ থাকলে রাজনীতি করবেন খালেদা জিয়া: বিএনপি
দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নিয়ে আইনমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি বলেছেন, ‘অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে অবশ্যই রাজনীতি করবেন। তারা (সরকার) বিভিন্ন সময়ে (খালেদার রাজনীতি করার সুযোগ নিয়ে) বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছে। তারা বিষয়টি নিয়ে একটি ধোঁয়ার পর্দা তৈরি করছে।’
বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে টুকু এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী একবার হুমকি দিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি করলে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হবে। এখন তার আইনমন্ত্রী বলছেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই। আপনারা (সাংবাদিকরা) বলুন আমরা কোনটা মেনে নেব।
আরও পড়ুন: জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণে সংবিধান সংশোধন করতে হবে: ফখরুল
খালেদা জিয়াকে নিয়ে মন্ত্রীরা কী বলছেন তাতে তারা আগ্রহী নন বলেও জানান এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি একটি তুচ্ছ বিষয়। বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি করেছেন, রাজনীতির ময়দান থেকে নেতা হয়েছেন, তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন... অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে বেগম খালেদা জিয়া অবশ্যই রাজনীতি করবেন।’
তিনি আরও বলেন, খালেদার রাজনীতি করার অধিকার নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করায় সরকার কী বোঝাতে চায় তা মানুষ বুঝতে পারছে না। তিনি বলেন, ‘বিএনপি এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মন্তব্য নিয়ে কম চিন্তিত।’
এর আগে রবিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন রাজনীতিতে অংশ নিতে পারেন, কিন্তু দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাকে আগামী সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
তিনি রাজনীতি করলে সরকার হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘তিনি রাজনীতি করবেন কি করবেন না, এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়’।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: আ. লীগ যখনই ক্ষমতায় গেছে তখনই অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে: মির্জা আব্বাস
তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার স্বাস্থ্য খারাপের কথা বিবেচনা করে মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাজা স্থগিত করেছেন।
ক্যাম্পাসে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কর্মসূচি দিতে হবে
বৈঠকে টুকু জানান, ছাত্রলীগ কর্তৃক শিক্ষা খাতে ক্রমবর্ধমান নৈরাজ্যের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। শিক্ষাব্যবস্থা যেভাবে ভেঙে পড়ছে এবং প্রতিটি ক্যাম্পাসে আমাদের মেয়েদের টার্গেট ও নিপীড়িত করা হচ্ছে তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
তাদের একযোগে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামীতে ক্যাম্পাসে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানান বিএনপি নেতা। ‘আমরা শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা এবং যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা নিয়েও আলোচনা করেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা হাসনাত কাইয়ুম বলেন, আমরা আমাদের যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা করেছি। আশা করছি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই যৌথ ঘোষণা দিতে পারব।
এ সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক প্রমুখ।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারকে না সরালে বিপদে পড়বে বাংলাদেশের জনগণ: ফখরুল
সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদার রাজনীতি করার সুযোগ নেই: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথসভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খালেদার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাম্প্রতিক মন্তব্যের সঙ্গে তার বক্তব্য সাংঘর্ষিক।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে এই যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: দেশে অরাজকতা সৃষ্টির দিকে এগোচ্ছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
কাদের বলেন, বিএনপি আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। ‘তারা এখন পরাজিত এবং অন্ধকার দেখছে।’
বিএনপির কর্মকাণ্ডে ভণ্ডামি করার অভিযোগ তুলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু কর্মকাণ্ডে উল্টোটা দেখায়।
শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে নগরীর ওসমানী মেমোরিয়াল হলে আয়োজিত অপর এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, বিএনপির সন্ত্রাস সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞান রয়েছে কারণ তারা রক্তপাত ও মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার জন্য দায়ী, কিন্তু এখন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারাও এখন দেশে গণতন্ত্রের সমর্থনে সোচ্চার।
তিনি আরও বলেন, ‘তার দৃষ্টিতে এটি তাদের অতীত কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে একটি ভণ্ডামিপূর্ণ অবস্থান। বিএনপি গণতন্ত্র বা মানবাধিকারের জন্য বিশ্বাসযোগ্য সমর্থনকারী নয়।’
রাজনীতিতে মেধাবী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত না হলে অযোগ্য ব্যক্তিরা আইন প্রণেতা ও মন্ত্রী হবেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন কাদের।
তিনি আরও বলেন, যারা সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি করে, তারাই সবচেয়ে বেশি নৈতিকতার কথা বলে।
আরও পড়ুন: বিএনপি দেশে ‘জঙ্গি গোষ্ঠীর’ পৃষ্ঠপোষক: কাদের
আ.লীগ সরকারকে না সরালে বিপদে পড়বে বাংলাদেশের জনগণ: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো না হলে দেশের মানুষের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় থাকা বর্তমান অনির্বাচিত শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি, যারা আমাদের সব স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়ে ক্ষমতায় আছে। আমরা যদি তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে না পারি, তাহলে বাংলাদেশের মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।’
বৃহস্পতিবার গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে রংপুর বিভাগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের এ ধরনের বৈঠকে ডাকার মূল উদ্দেশ্য হলো আন্দোলন জোরদার করে বর্তমান শাসনের পতন নিশ্চিত করতে তাদের উজ্জীবিত করা।
আরও পড়ুন: মতিঝিল, উত্তরায় বিএনপি ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর শাখার মিছিল
বিএনপি নেতা বলেন, বর্তমান আন্দোলনে জনগণ কীভাবে আরও সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারে এবং কীভাবে গণঅভ্যুত্থান ঘটতে পারে সেই রাক্ষস সরকারকে অপসারণ করে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারে সে বিষয়ে তারা তৃণমূল নেতাদের মতামত নেবেন।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের একটি কথা মনে রাখতে হবে, আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা পেয়েছি এবং বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি। সেই নেত্রী এখন জেলে। আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। চলমান আন্দোলনে রাজপথে ১৭ নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।’
ফখরুল বলেন, সরকারের নির্যাতন-নিপীড়ন সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ‘দেশকে রক্ষা করা, জনগণকে রক্ষা করা, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে। ‘আমরা এই দানব সরকারকে পরাজিত করব এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।’
তিনি বলেন, তাদের দল ইতোমধ্যে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য ১০ দফা দাবি এবং রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ২৭-দফা প্রস্তাব দিয়েছে। ‘আন্দোলনের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে এই বিষয়গুলো তাদের কাছে প্রচার করতে হবে।’
জনসমর্থন বাড়াতে এবং বর্তমান আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে বর্তমান ও সাবেক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করেছে।
ফখরুল বলেন, সরকার গণতন্ত্রের পথচলা নির্বাচন ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করেছে।
আরও পড়ুন: আ. লীগ যখনই ক্ষমতায় গেছে তখনই অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে: মির্জা আব্বাস
সরকার বিরোধীদের দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শুধু সরকারের দুর্নীতির কারণেই বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিএনপি’র তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দলের মর্যাদা ও কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে দলের শীর্ষ নেতারা রংপুর বিভাগের প্রায় ২৫০ সাবেক ও বর্তমান দলীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন।
তারেক লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন এবং নেতাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং চলমান আন্দোলনের বিষয়ে তাদের মতামত নেন।
দলটি ২৭ ফেব্রুয়ারি খুলনা বিভাগের বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও একই ধরনের বৈঠক করবে, ২৮ ফেব্রুয়ারি সিলেট, ১ মার্চ বরিশাল, ২ মার্চ ঢাকা, ফরিদপুর ও কুমিল্লা, ৫ মার্চ চট্টগ্রাম, ১৩ মার্চ চট্টগ্রাম। ১৪ মার্চ রাজশাহী, ১৫ মার্চ রাজশাহী এবং ১৬ মার্চ ময়মনসিংহ।
দলীয় সূত্র জানায়, ১০টি মতবিনিময় সভায় অংশ নেয়ার জন্য সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে বর্তমান প্রায় চার হাজার বিএনপি নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন