রাজনীতি
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত: জোটে ভোট দিলেও নিজ দলের মার্কায় ভোট দিতে হবে
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) একক প্রার্থীর ক্ষেত্রে ‘না’ ভোটের বিধান ফের চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া জোটগতভাবে নির্বাচন করলেও ভোটারকে নিজ দলের প্রতীকে ভোট দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে কমিশনের মুলতবি সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। বিকেলে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সংবাদমাধ্যমকে সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরেন।
তিনি জানান, সব আসনে ‘না’ ভোটের বিধান থাকবে না, তবে একক প্রার্থী থাকলে ‘না’ ভোট থাকবে এবং সেই প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। জোট থাকলেও ভোটারকে নিজ দলের প্রতীকে ভোট দিতে হবে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় এবার সশস্ত্র বাহিনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের নিয়ন্ত্রণে কমিশনের আরও ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া ইভিএম ব্যবহারের বিধান আরপিও থেকে বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার শাস্তি স্পষ্ট করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে ইসিকে জানাতে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পড়ুন: খসড়া অর্ডিন্যান্স: কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গভর্নর নিয়োগ দেবে রাষ্ট্রপতি, বাড়বে মেয়াদ
২০০৮ সালে নির্বাচনগুলোতে ‘না’ ভোটের বিধান ছিল সব আসনে। পরে নবম সংসদে এটি বাতিল হয়। এবার ‘না’ ভোটের বিধান সব আসনে না থাকলেও একক প্রার্থী থাকলে তাকে ‘না’ ভোটের সঙ্গে লড়াই করতে হবে, যা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ বন্ধ করবে।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “একক প্রার্থী থাকলে তিনি বিনা ভোটে নির্বাচিত হবেন না। তাকে ‘না’ ভোটের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। যদি পুনরায় ‘না’ ভোট বিজয়ী হয়, তখন ওই প্রার্থী নির্বাচিত হবেন।”
চূড়ান্ত সংস্কার প্রস্তাবটি আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সরকারের অনুমোদন পেলে এটি সংশোধন অধ্যাদেশের মাধ্যমে জারি হবে এবং প্রয়োজন হলে ঐকমত্য কমিটির সুপারিশ যুক্ত করা হবে।
১৪০ দিন আগে
হালনাগাদ ভোটার তালিকা: মোট ভোটার ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। হালনাগাদ তালিকা প্রকাশের পর দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনে। তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছেন ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ২১৬ জন।
রবিবার (১০ আগস্ট) ‘হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া’ প্রকাশ করা হয়। এদিন দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য জানান।
সিনিয়র সচিব জানান, আজ সারা দেশের নির্বাচন অফিসগুলোতে একযোগে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী এ বছরের ২ মার্চ ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছিল ইসি। তখন ভোটারের সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ২১৬ জনকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে মৃত ও কর্তনকৃত ভোটার হিসেবে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জনকে বিদ্যমান তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এই হিসাবে নতুন অন্তর্ভুক্তি ও বাদ দেওয়া মিলিয়ে মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনে।
সচিব বলেন, আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তারাও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। নবীন ভোটারদের এক বছর অপেক্ষা না করানোর জন্য নতুন আইনে এই সুযোগ রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ বছর ইসি মোট তিন দফায় ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে— ২ মার্চ, ৩১ আগস্ট এবং ৩১ অক্টোবর। শেষ দফার তালিকা প্রকাশের পর চূড়ান্ত ভোটারের সংখ্যা জানা যাবে।
কারও তথ্যে ভুল থাকলে সংশোধনের জন্য ১২ দিনের সুযোগ থাকবে। যোগ্য ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্তি, মৃত্যুজনিত বা অন্তর্ভুক্তি হওয়ার অযোগ্য ব্যক্তির নাম বাদ দেওয়া, ভোটার স্থানান্তর এবং কোনো ত্রুটি সংশোধনের জন্য ২১ আগস্ট পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।
২৪ আগস্টের মধ্যে এসব আবেদন নিষ্পত্তি হবে। এরপর অন্যান্য কাজ শেষে চলতি মাসের ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
১৪১ দিন আগে
নাটোরে ক্রীড়া উপদেষ্টার অনুষ্ঠান বয়কট করল বিএনপি
নাটোরে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর পরও জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অনুষ্ঠান বয়কট করেছে দলটি।
শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে শহরের কানাইখালি মিনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানে প্রবেশের সময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ তোলেন জেলা বিএনপির নেতারা। ঘটনার পরপরই তারা অনুষ্ঠান বর্জন করে চলে যান।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ অভিযোগ করে বলেন, ডিবি পুলিশের ওসি হাসিবুল্লাহ হাসিব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলীয় শীর্ষ নেতাদের প্রতি অসৌজন্যমূলক ও রূঢ় আচরণ করেছেন।
তিনি বলেন, `ফ্যাসিবাদের রাহু থেকে পুলিশের অনেক কর্মকর্তা এখনও বের হতে পারেননি।‘
আসাদ ঘটনাটি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
জেলা প্রশাসকের আমন্ত্রণে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজের নেতৃত্বে সদস্য সচিবসহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল কানাইখালি মিনি স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান।
কিন্তু উদ্বোধনের সময় বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব নিজেদের পরিচয় দেওয়ার পরও ডিবি পুলিশের ওসি তাদের প্রবেশে বাধা দেন এবং সেখান থেকে সরিয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) ইফতেখায়ের আলম বলেন, “উপদেষ্টার নিরাপত্তার দায়িত্ব ডিবি পুলিশের ওপর ছিলো। তবে কাউকে অসম্মান করা সমীচীন নয়।” তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।
১৪২ দিন আগে
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: সিইসি
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, কাজেই নির্বাচন কমিশন সে লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচনের কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বিভাগওয়ারি প্রশাসন, নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) বিকালে রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ভোটের সময় কোনো একটি কেন্দ্রে গণ্ডগোল হলেই ওই আসনের নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না। যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে, তাদেরকে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হবে না। গত নির্বাচনে যারা প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে সমস্যা সৃষ্টি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।
তিনি বলেন, নির্বাচনী সিস্টেমের ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। মানুষকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসাটাই বড় চ্যালেঞ্জ।
নাসির উদ্দিন বলেন, এখনই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে না। তফসিল ঘোষণার দুই মাস আগে তারিখ জানানো হবে। তবে স্বল্প সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।
এর আগে সকালে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রংপুর অঞ্চলসহ রংপুর অঞ্চলের সকল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা করেন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশন, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও প্রশাসন মিলে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব—এই বিষয়েই আমরা কাজ করছি। তাই আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করাটাই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ।
পড়ুন: নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি: সিইসি নাসির
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। আমরা চাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হোক, যাতে শান্তিপূর্ণ ও নির্ভয়ে মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে। মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাওয়া ভুলে গেছে। নির্বাচনের দিন অনেকেই ভোট দিতে কেন্দ্রে যায় না, বাসায় আরাম-আয়েস করে। অনেকেই মনে করে, ভোট দিতে গিয়ে কী হবে? কেউ না কেউ তো আমার ভোটটা দিয়ে দিবে। এই ধরনের মনোভাব তৈরি হয়েছে।
‘এই মনোভাব দূর করাই নির্বাচন কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি। এজন্য সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। আর এই সচেতনতা তৈরিতে সাংবাদিকদের ভূমিকা রয়েছে। আমরা সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চাই এবং পরামর্শ চাই।’
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, অস্ত্রের চেয়ে এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এআই-এর ব্যবহার। এআই হচ্ছে বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার। এটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি না, সাংবাদিকরা আমাদের পক্ষ। যারা প্রফেশনাল সাংবাদিক, তারা আমাদের হয়ে কাজ করবেন, স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য কাজ করবেন—এই প্রত্যাশা আমাদের আছে।
এআইয়ের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষকে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, এটি মোকাবেলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এসময় নাগরিকদের উদ্দেশ্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোট দেওয়া যেমন নাগরিক দায়িত্ব, তেমনি ঈমানি দায়িত্বও বটে।
১৪২ দিন আগে
গত ৫ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক পরিসরে পরিবর্তন দেখছেন মঈন খান
এক বছর আগের ৫ আগস্ট ও এবার ৫ আগস্টের রাজনৈতিক বিশ্লেষণে স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে, যা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তিত বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান।
শনিবার (৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানব গবেষণা ও বিশ্লেষণ ফাউন্ডেশন (এইচইউআরএফ) আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লব: গণতন্ত্রের অগ্রগতি’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ড. মঈন খান বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ১৯৭৮ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে টিকে রয়েছে।
মুঘল সাম্রাজ্যের উদাহরণ ও পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের প্রতি বৈষম্যের ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও পাকিস্তানকে পরাজিত করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে, দেশে এখনও সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি, পাকিস্তানেও না।
শাসকদলের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে সতর্ক করে মঈন খান বলেন, আজকের শাসকরা আগামীকালের নিপীড়ক হয়ে উঠবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে দায়বদ্ধতা থাকতে হয় এবং জাতির সামাজিক ও রাজনৈতিক সত্য আবিষ্কারে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
পড়ুন: নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি: সিইসি নাসির
গত এক বছরের রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে এবং শাসন কাঠামো আবারও গভীর রাজনৈতিক বৈষম্যের ছাপ দেখিয়েছে— যা মুঘল ও পাকিস্তানের শাসনের মতোই ছিল এবং ২০২৪ সালে আবারও পুনরুত্থিত হয়েছে।
বিএনপির নেতা একদলীয় রাজনীতির বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, যখন একটি দল সংসদের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ আসন দখল করে তখন শাসন ব্যবস্থায় সংকট সৃষ্টি হয়, যা অতীতে দেখা গেছে।
তিনি হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে হাজার হাজার মানুষের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আমরা আজ তাদের আত্মত্যাগের কারণে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছি।’
মুক্ত, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের ডাক দিয়ে ডা. মঈন খান বলেন, সব প্রধান রাজনৈতিক শক্তির অংশগ্রহণ ছাড়া সংসদে গণতন্ত্র কার্যকর করা সম্ভব নয়।
তিনি দাবি করেন, ১৯৭৮ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৫০ লাখের বেশি বিএনপি নেতা, কর্মী ও গ্রামীণ ছাত্র রাজনৈতিক মামলার মোকাবিলা করেছে।
ঢাকা কলেজের অধ্যাপক আনোয়ার মাহমুদ মূল বক্তৃতা দেন। এইচইউআরএফের আহ্বায়ক আহমেদ হুসাইন আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন এবং আহত জুলাই যোদ্ধা ফাহিম হোসেন জুলাই বিপ্লবের অভিজ্ঞতা জানান।
১৪২ দিন আগে
নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি: সিইসি নাসির
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও স্বল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
শনিবার (৯ আগস্ট) রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনী ব্যবস্থায় জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন এখন বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ এই ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারিয়েছে। তাদের আবার ভোটকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা বড় কাজ হবে।
তিনি জানান, শিগগিরই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ‘তফসিল ঘোষণার দুই মাস আগে ভোটের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে,’ যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সিইসি ও ইসি নিয়োগে হবে বাছাই কমিটি: আলী রীয়াজ
নাসির উদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ইসি কোনো দল বা গোষ্ঠীর পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করবে না।
‘আমরা দেশের ১৮ কোটি মানুষের পক্ষ থেকে কাজ করব। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, যা ইসি প্রতিহত করার চেষ্টা করছে,’ বলেন তিনি।
ভোটাধিকার প্রয়োগে সবাইকে আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ভোট দেওয়া শুধু নাগরিক দায়িত্ব নয়, এটি নৈতিক দায়িত্বও।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছভাবে আয়োজনের জন্য ইসি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান সিইসি।
১৪২ দিন আগে
জাবিতে আহ্বায়ক কমিটি বর্ধিতসহ অনুষদ ও হল কমিটি দিল ছাত্রদল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রমকে গতিশীল ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আহ্বায়ক কমিটির বর্ধিত করাসহ মোট ১৭টি হল এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের নতুন কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।শুক্রবার (৮ আগষ্ট) বিকালে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭০ সদস্যবিশিষ্ট বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সংগঠনটির জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর ও সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিকের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অনুষদ ও হল কমিটিগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়।জাবি শাখা ছাত্রদলের বরাতে জানা যায়, নতুন বর্ধিত আহ্বায়ক কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসাবে ৭৫ জন এবং সদস্য হিসাবে ২৯৫ জন জায়গা পেয়েছেন। এছাড়াও নতুন বর্ধিত কমিটি মোতাবেক ৬টি ছাত্রী হল হলো– নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল, প্রীতিলতা হল, ১৩ নম্বর ছাত্রী হল, ফজিলতুন্নেসা হল, রোকেয়া হল ও বীর প্রতীক তারামন বিবি হল। ১১টি ছাত্র হল হলো– আল-বেরুনী হল, শহীদ সালাম বরকত হল, আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল, মাওলানা ভাসানী হল, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল, ১০ নম্বর ছাত্র হল, ২১ নম্বর ছাত্র হল, শহীদ রফিক-জব্বার হল, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হল, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ও মীর মোশাররফ হোসেন হল। এছাড়া ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের জন্যও দুই সদস্যবিশিষ্ট আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পড়ুন: সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে জাবি ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর এবং সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনীক নবগঠিত কমিটির নেতাদের দায়িত্ব পালনে সততা, শৃঙ্খলা ও সাংগঠনিক ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এসব কমিটির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল আরও শক্তিশালী ও শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে জাবি শাখা ছাত্রদলের নেতারা আশা প্রকাশ করেন।উল্লেখ্য, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
১৪৩ দিন আগে
প্রতীক নয়, ব্যক্তিকে ভোট দিত মানুষ: হাফিজউদ্দিন
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা প্রবর্তনের বিরোধিতা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে প্রতীক নয়, ব্যক্তিকে ভোট দিতে অভ্যস্ত।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
হাফিজউদ্দিন বলেন, ‘ভোটাররা এমন একজনকে নির্বাচিত করতে চায় যার উপর তারা বিশ্বাস করতে পারে... এমন একজন যিনি তাদের সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়াবেন। এমনি প্রেক্ষাপটে প্রতীক-কেন্দ্রিক পিআর নির্বাচন নিয়ে আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক।’
নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দল বর্তমান সরকার এবং কমিশনের অধীনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত।
তিনি আশা করেন আসন্ন নির্বাচন হাসিনা আমলের ‘দুঃশাসন’র অবসান ঘটাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি উদাহরণ স্থাপন করা উচিত।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে হাফিজউদ্দিন নির্বাচন বিলম্বিত করতে দলটির বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তারা বিএনপির মিত্র ছিল। এখন নির্বাচনের আগে, তারা যে বিষয়গুলো উত্থাপন করছে— তা আশ্চর্যজনক।’
পড়ুন: সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করা যাবে না: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াত দাবি করেছে যে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার উপর জোর দেওয়া হয়নি। যারা ইতিহাস মনে রাখে—তারা জানে যে এই একই জামায়াত ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করেছিল। পরে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল।’
হাফিজউদ্দিন অভিযোগ করেন, বেশ কয়েকটি দল ইতোমধ্যেই ধরে নিয়েছে যে, তারা জাতীয় নির্বাচনে তাদের জামানত হারাবে, যে কারণে তারা পিআর ব্যবস্থাকে সমর্থন করছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আগের সরকারের পুলিশ বাহিনীতে বড় ধরনের সংস্কার করা উচিত ছিল। কিন্তু তা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আগের সরকারের আমলে পুলিশ একটি দলীয় বাহিনীতে পরিণত হয়েছিল। এই ধরনের পুলিশ বাহিনী দিয়ে নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা কতটা বজায় রাখা যাবে—তা সন্দেহজনক।’
সাংবিধানিক সংস্কার সম্পর্কে হাফিজউদ্দিন বলেন, বর্তমান সরকারের সংবিধান সংশোধন করার কোনো ম্যান্ডেট নেই, যদিও তারা একটি রূপরেখা দিতে পারে।
‘সংস্কারগুলো একটি নির্বাচিত সরকারকে করতে হবে,’ বলেন তিনি।
নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপি যেকোনো নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবে উল্লেখ করে হাফিজউদ্দিন বলেন, ‘যদি কেউ বিশ্বাসযোগ্য ভোট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে, আমরা তা মেনে নেব। তবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।’
তবে তিনি অভিযোগ করেন, কিছু মহল এখনও নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে।
দেশের কল্যাণে কাজ করার প্রচেষ্টার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসা করে তিনি বলেন, উপদেষ্টার অনেক সহযোগী ক্ষমতার লোভে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন।
‘তারা নির্বাচনের পথে হাঁটার পরিবর্তে একচেটিয়া কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়,’ দাবি করেন হাফিজউদ্দিন।
১৪৩ দিন আগে
ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল: ইসি সানাউল্লাহ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের প্রথমার্ধেই ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।সানাউল্লাহ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এরমধ্যে আপনাদের (গণমাধ্যমকে) জানিয়েছেন, নির্বাচনের প্রায় দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে। সেক্ষেত্রে আপনি ধরতেই পারেন, তফসিল ডিসেম্বরের প্রথম অংশেই আসবে।
সভায় আলোচনার বিষয় ছিল ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ২০২৫ সালের জন্য রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণবিধির খসড়া, প্রবাসীদের জন্য বিদেশে ভোটদান এবং ডাকযোগে ভোটগ্রহণ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এতে সভাপতিত্ব করেন।
সানাউল্লাহ জানান, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে নির্বাচনী তফসিল নিয়ে আলোচনা হয়নি, তবে এ বিষয়ে খুব শিগগিরই আলাপ করা হবে।তিনি বলেন, রমজান শুরুর আগেই অর্থাৎ ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
‘আপনারা সবাই বুঝতেই পারছেন, রমজানের আগেই নির্বাচন শেষ করতে হবে। একইসঙ্গে নতুন সরকার গঠনের জন্য কিছুদিন রাখতে হবে। তাই ভোট গ্রহণ কিছুটা আগেই করতে হবে। ওই সম্ভাব্য নির্বাচনের তারিখ থেকে ৬০ দিন পেছালেই তফসিল ঘোষণার সময়কাল পেয়ে যাবেন,’ বলেন সানাউল্লাহ।
পড়ুন: উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক: স্বল্প মেয়াদে ১৬ সুপারিশ বাস্তবায়ন, বাস্তবায়নাধীন ৮৫
সভায় আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ২০২৫ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে—যাতে তারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রায় ১৮ থেকে ২০ লাখ নতুন ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন বলে জানানো হয়।
নির্বাচন কমিশনার আরও জানান, বৈঠকে ২০২৫ সালের জন্য রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণবিধির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।এর আগে, গত ১৯ জুন প্রাথমিকভাবে আচরণবিধির খসড়াটি অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন এবং ২৯ জুন জনমত নেওয়ার জন্য এটি অনলাইনে প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, ‘অনলাইনে প্রকাশের পর যার ওপর আমরা জনমত চেয়েছিলাম, সেই প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণবিধির খসড়া আজ চূড়ান্ত করা হয়েছে।’
তবে আরপিও সংশোধন নিয়ে বৈঠকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
১৪৪ দিন আগে
শোকজের জবাব: নাহিদের সম্মতিতেই কক্সবাজার গিয়েছেন হাসনাত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ কারণ দর্শানোর নোটিশের (শোকজ) জবাবে জানিয়েছেন, দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সম্মতি দেওয়ার পরেই তিনি কক্সবাজার গিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন বরাবর দেওয়া শোকজ নোটিশের জবাবে হাসনাত লেখেন, ৪ আগস্ট রাতে প্রথমে তিনি নাহিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাকে না পেয়ে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে কক্সবাজার ভ্রমণ প্রসঙ্গে জানান এবং অনুরোধ করেন নাহিদকে জানাতে।
প্রায় ৩০ মিনিট পর নাসীরুদ্দীন জানান, নাহিদ হাসনাতকে কক্সবাজার যাওয়ার সম্মতি দিয়েছে। পরবর্তীতে তার সঙ্গে এনসিপির বাকি নেতারা যুক্ত হোন বলে জানান হাসনাত।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তির দিনে কক্সবাজার সফরে যাওয়ার কারণ জানিয়ে হাসনাত লেখেন, ‘সরকারের উচিত ছিল এমন একটি ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা, যা সেই মানুষগুলোর আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিনিধিত্ব করবে। কিন্তু আমি এবং অনেকেই ব্যথিত হই, যখন দেখি যে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের সময় সেই মানুষদের কথা সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছে, যারা অভ্যুত্থানের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন। শহীদ পরিবার, আহত এবং নেতৃত্বদানকারীদের অনেকেই মতামত প্রদানের সুযোগ পাননি এমনকি অন্তর্ভুক্তির ন্যূনতম সম্মানটুকুও পাননি।’
‘আমার এ সফর ছিল অসম্পূর্ণ জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রতি আমার নীরব প্রতিবাদ।’ লেখেন হাসনাত।
তিনি বলেন, 'ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়ায় এমন কিছু উপাদান দেখি, যা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যেমন— ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে সংবিধান সংস্কারের জন্য জনগণ পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপর দায়িত্ব অর্পণের অভিপ্রায় প্রকাশ করেছে। এই দাবিটি অসত্য এবং সংবিধানে মৌলিক পরিবর্তন আনার পথে একটি বড় অন্তরায়।'
পড়ুন: শোকজের জবাব দিয়েছেন এনসিপি নেতারা, সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পরে
শোকজের জবাবে হাসনাত বলেন, 'আমরা শুরু থেকেই দাবি করে আসছি গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে, যা রাষ্ট্রের কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তন আনবে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ঘটাবে। উপরন্তু, ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় জানতে পারি যে আমাদের আন্দোলনের আহত এবং নেতৃত্বদানকারী অনেক ভাইবোনকে এই অনুষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি আমার কাছে শুধু রাজনৈতিক নয়, নৈতিক ব্যর্থতা বলেই মনে হয়েছে।'
হাসনাত বলেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে এই অনুষ্ঠানে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। যেখানে ঐক্যের পরিবর্তে বিভাজনকে, শহীদ ও আহতদের পরিবর্তে কিছু মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীর কথা এবং মতামতকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, সেখানে উপস্থিত থাকার কোনো ইচ্ছা বা প্রয়োজন আমি বোধ করিনি। কাজেই, এরপরের দিন ঢাকার বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। উদ্দেশ্য ছিল এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টিতে পূর্বে গৃহীত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো বোঝার চেষ্টা করা এবং পরবর্তী করণীয় নিয়ে চিন্তা করা।'
কক্সবাজার ভ্রমণ প্রসঙ্গে হাসনাত বলেন, কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার পর যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিমানবন্দর থেকে এনসিপি নেতাদের প্রতিটি পদক্ষেপের ছবি ও ভিডিও করে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা মিডিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিছু মিডিয়া সেখানে ক্রাইম মুভির মিউজিক জুড়ে ইচ্ছেমতো মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর অভিযোগসহ সেইসব উপস্থাপন করেছে।
ক্ষোভ ঝেড়ে হাসনাত বলেন, ‘কিছু মিডিয়া ও গোয়েন্দা সংস্থার যোগসাজশে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপকে অপরাধপ্রবণ এবং সন্দেহজনক হিসেবে উপস্থাপন করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। এমনকি গুজব ছড়ানো হয়েছে, যে আমরা পিটার হাসের সঙ্গে গোপন বৈঠকে যাচ্ছি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করতে। অথচ তিনি তখন বাংলাদেশেই ছিলেন না।
‘রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এই প্রবণতা, যেখানে কাউকে টার্গেট করে রাষ্ট্রদ্রোহী বানিয়ে ফেলা যায়, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চলতে পারে না। গোয়েন্দা সংস্থা ও মিডিয়ার এই সম্মিলিত ডিমোনাইজেশন টেকনিক আজকে আমাদের টার্গেট করেছে। ভবিষ্যতে অন্য যে কাউকে করতে পারে। সবচেয়ে আশঙ্কাজনক ব্যাপার হলো, গোয়েন্দা সংস্থা এবং কিছু মিডিয়া এই একই প্যাটার্নে হাসিনার আমলেও বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাদের নামে প্রোপাগান্ডা ক্যাম্পেইন পরিচালনা করত। নতুন বাংলাদেশেও গোয়েন্দা সংস্থা এবং কিছু মিডিয়ার এই পুরনো অপরাধপ্রবণতা আমাকে একইসঙ্গে অবাক এবং ক্ষুব্ধ করে।’ বলেন হাসনাত।
৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে যান এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ। পরদিন দলের পক্ষ থেকে তাদের শোকজ করা হয়।ৎ
১৪৪ দিন আগে