ব্যবসা
এনবিআরকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর আহ্বান এফবিসিসিআই’র
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো চিঠিতে ফেডারেশন বলেছে, নতুন আয়কর আইন ২০২৩- এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আয়কর সার্কুলার প্রকাশে দেরি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা রিটার্ন দাখিলে প্রস্তুত নন।
আরও পড়ুন: এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন করলেন সালমান এফ রহমান
তাই রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো প্রয়োজন।
চিঠিতে বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে অনেক করদাতা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
আরও কয়েকটি ব্যবসায়িক চেম্বার কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য এনবিআরকে অনুরোধ করেছে।
রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা আরও দুই মাস বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশন।
আরও পড়ুন: অর্থনীতির স্বার্থে সহিংসতা পরিহার করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি এফবিসিসিআই'র আহ্বান
পাটের সোনালি অতীত ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে এফবিসিসিআই: মাহবুবুল আলম
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বাড়াতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি উন্নয়নের তাগিদ ব্যবসায়ীদের
বন্দরে উন্নত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির না থাকায় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে একজন ব্যবসায়ীকে একই পণ্য বারবার পরীক্ষা করতে হচ্ছে।
এর ফলে সময় ও খরচ উভয়ই বেড়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত। তাই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বাড়াতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি উন্নয়নের তাগিদ দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক ‘ইস্যুজ অব ক্রস-বর্ডার ট্রেড: ইম্পর্টেন্স অব রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইন সাপ্লাই চেইন অব অ্যাগ্রো প্রোডাক্টস’-শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে ইউনাইটেড স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) ফান্ডেড বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন (বিটিএফ) প্রকল্প।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যশস্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। কৃষিকে সাব-সিস্টেম থেকে বাণিজ্যিকীকরণ করতে কৃষি মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। কৃষিখাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে আমরা আধুনিক ও লাভজনক কৃষি উৎপাদনের দিকে মনোনিবেশ করেছি।’
বিগত বছরগুলোতে কৃষিখাতের উন্নয়নের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কৃষিখাতের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী অবকাঠামো দিয়েছেন, দেশও উন্নত হবে। কিন্তু একদল আছে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে যাচ্ছে। দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা দরকার।’
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, বন্দর থেকে পণ্য খালাসের জটিলতা কমাতে রাজধানীর পূর্বাচলে কৃষি মন্ত্রনালয়ের জন্য জায়গা বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, যেখানে পণ্য টেস্টিং করে সরাসরি কার্গোতে পাঠানো হবে।
ফলে ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ অপচয়; দুটিই কমে আসবে। খুব শিগগিরই এর কাজ শুরু হবে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
এর আগে সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বিগত বছরে কৃষিতে বিপ্লব সাধিত হয়েছে। আন্তঃবাণিজ্য সমস্যা কমাতে সরকার কাজ করছে। আন্তঃবাণিজ্য সহজ করতে সরকারে সঙ্গে শিগগিরই আলোচনা করব আমরা।’
তিনি বলেন, ‘টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনাই আমাদের মুল লক্ষ্য। আমরা যখন উন্নত দেশে উন্নীত হবো, টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা দরকার হবে আমাদের। আর এ জন্য নীতিমালা প্রণয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: অর্থনীতির স্বার্থে সহিংসতা পরিহার করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি এফবিসিসিআই'র আহ্বান
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের ৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি এখন প্রায় অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। কৃষিভিত্তিক শিল্পের বিকাশ ক্রমশ বৃদ্ধির মাধ্যমে জিডিপিতে শিল্পের অবদান বাড়ছে এ খাতে আমাদের অর্জনও অনেক। বাংলাদেশ এখন ২২টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০ এ রয়েছে। ফলে এ খাতে সর্বাধিক মূল্য সংযোজনের সুযোগ আছে। তৈরি পোশাক শিল্পের পরেই রপ্তানি বহুমুখীকরণের অন্যতম খাত হিসেবে প্রধানমন্ত্রী প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের ওপর গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি প্রণোদনার ও সুযোগ বৃদ্ধি করছেন এ খাতে।’
সেমিনারে যৌথভাবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ এবং ইউএসডিএ ফান্ডেড বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন প্রজেক্টের (বিটিএফ) সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর এ এ এম আমিনুল এহসান খান। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় আন্তঃবাণিজ্য চুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেন তারা।
সেমিনারে সমাপনী বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী।
ব্যবসায়ীরা শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষেই রয়েছে বলে জানান তিনি।
ইউএসডিএ ফান্ডেড বাংলাদেশ ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন প্রজেক্টের (বিটিএফ) প্রকল্প পরিচালক মাইকেল জে পার, এফবিসিসিআই’র পরিচালকবৃন্দ, প্যানেল উপদেষ্টাবৃন্দসহ বিভিন্ন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন করলেন সালমান এফ রহমান
আসিয়ান, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাংলাদেশ হতে পারে: এফবিসিসিআই
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পুরোদমে উৎপাদন কার্যক্রম চলছে: বিজিএমইএ সভাপতি
দেশের সব এলাকার পোশাক কারখানায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পুরোদমে উৎপাদন কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান।
বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নে প্রস্তুত বিজিএমইএ: ফারুক হাসান
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার কোনো কারখানায় শ্রম অসেন্তোষের সংবাদ পায়নি। সব কারখানায় পুরোদমে উৎপাদন চলছে। আশুলিয়া এলাকার বন্ধ পোশাক কারখানাগুলোর শ্রমিকরা কাজে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করায় বুধবার আশুলিয়ার পোশাক কারখানাগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, মিরপুরের বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে ১৪ নভেম্বর ও ১৫ নভেম্বর আলোচনা হয়েছে। দুই দিনের আলোচনায় শ্রমিকরা কারখানায় কাজে ফিরতে চান। বৃহস্পতিবার থেকে মিরপুরের এবং অন্যান্য সব জায়গার বন্ধ হওয়া পোশাক কারখাগুলো খুলে দেওয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে ফারুক হাসান বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক উদ্যোক্তা আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর প্রতি অনুরোধ, পোশাক কারখানাসহ সব ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানকে নিরাপত্তা দিন। এলাকায় সুষ্ঠূ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও শান্তিপূর্ন পরিবেশ নিশ্চিত করুন, সর্বোপরি, জানমালের নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নিন।
একই সঙ্গে শ্রমিক, কর্মচারী ও মালিকরা যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে সতর্ক থেকে কাজ করার অনুরোধ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: দায়িত্বশীল ক্রয় পদ্ধতিতে মার্কিন অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতা চাইলেন বিজিএমইএ সভাপতি
ভাঙচুর বন্ধ না হলে জীবন ও সম্পদের সুরক্ষায় মালিকেরা কারখানা বন্ধ রাখতে পারবে: বিজিএমইএ
অর্থনীতির স্বার্থে সহিংসতা পরিহার করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি এফবিসিসিআই'র আহ্বান
অর্থনীতির স্বার্থে সহিংসতা পরিহার করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআই
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) গুলশান কার্যালয়ে বিরাজমান বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতা, অর্থনীতিবিদ এবং এফবিসিসিআই এর সাবেক নেতাদের নিয়ে একটি মতবিনিময় এই আহ্বান জানানো হয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা, ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতি, বিলাসী পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংক ঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, এলসিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বিগত কয়েক বছর যাবৎ দেশে অত্যন্ত স্থিতিশীল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ বিরাজ করছে যা ব্যবসা, বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর সহিংস কর্মকাণ্ডের ফলে দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়ছে। একই সঙ্গে, তৈরি পোশাক খাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।
দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা জাতীয় অর্থনীতিকে শঙ্কার দিকে ঠেলে দিচ্ছে উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতি দেশের সাপ্লাই চেইনকে ভীষণভাবে বিঘ্নিত করছে। যার প্রভাব পণ্যের উৎপাদন, বাজার মূল্য এবং রপ্তানি ও সেবা খাতের উপরও পড়ছে। এসময় রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে সব ধরণের সহিংস কর্মকাণ্ড পরিহারের আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিক ও কর্মচারীদের চাহিদা অনুযায়ী মজুরি কমিশন গঠন এবং শ্রমিক-মালিক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে মজুরি পুন:নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ। তা সত্ত্বেও তৈরি পোশাক খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। প্রকৃত শ্রমিকরা কোনভাবেই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: আসিয়ান, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাংলাদেশ হতে পারে: এফবিসিসিআই
ডলার সংকট সমাধান এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বর্তমান সহিংস রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সারাদেশের সকল চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশনকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসায়ী সংহতি সমাবেশ আয়োজনের জন্য এফবিসিসিআইকে পরামর্শ দেন।
এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম অর্থনীতির এই সংকটের মুহূর্তে রাজনৈতিক সহিংস কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাব্যক্তিদের বির্তকিত মন্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানান তিনি।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় আরও জোরদার করতে এফবিসিসিআইকে কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়াও বিদ্যমান সহিংস কর্মসূচির বিরুদ্ধে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এফবিসিসিআইকে আহ্বান জানান তিনি।
সভায় এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ডলারের উপর চাপ কমাতে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের আরও সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রয়োজনে আগামী ৬ মাস থেকে এক বছর সময়ে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসী পণ্য আমদানির হার আরও কমিয়ে আনতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কাট-ছাটের কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন করলেন সালমান এফ রহমান
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, প্রকৃত শ্রমিকরা কখনো নিজ কারখানায় আগুন দিতে পারে না। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তৈরি পোশাক খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে সাবেক মূখ্য সচিব ও এফবিসিসিআই এর প্যানেল উপদেষ্টা মো. আব্দুল করিম, সিপিডির গবেষণা পরিচালক ও প্যানেল উপদেষ্টা খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই এর প্যানেল উপদেষ্টা ড. মাসরুর রিয়াজ, আব্দুল মুক্তাদির, এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহ-সভাপতি খায়রুল হুদা চপল, শমী কায়সার, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, বিকেএমইএ’র এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলুল হক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ,বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, নাসিব সভাপতি মির্জা নুরুল গণি শোভন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম, এফবিসিসিআই’র পরিচালকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পাটের সোনালি অতীত ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে এফবিসিসিআই: মাহবুবুল আলম
আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে অর্ধেক দামে ডাল-তেল, আলু-পেঁয়াজ বিক্রি করবে টিসিবি
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ভেক্তাদের স্বস্তি দিতে ফ্যামিলি কার্ডের বাইরেও রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৪টি পণ্য টিসিবির ট্রাকে বিক্রি করা হবে।
সেগুলো হচ্ছে- মসুর ডাল, সয়াবিন তেল, আলু ও পেঁয়াজ। এসব পণ্য বর্তমান বাজারমূল্যের চেয়ে প্রায় অর্ধেক দামে মিলবে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব।
আরও পড়ুন: আগামী জানুয়ারির মধ্যে টিসিবির স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্য সচিব বলেন, টিসিবির কার্ডের মাধ্যমে ঢাকায় ১৩ লাখ পরিবারকে ন্যায্য মূল্যে পণ্য দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) থেকে ঢাকায় ২৫ থেকে ৩০টি ট্রাকে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এতে নতুন করে আরও ৯ হাজার পরিবার যোগ হবে। প্রতিটি ট্রাকে ৩০০ জন এসব পণ্য পাবে। শুক্রবার ও শনিবার বাদে প্রতিদিন বিক্রি হবে। তবে বিভিন্ন দিন বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হবে।
পরে সব দিনই এই কর্মসূচি চলবে উল্লেখ করে সচিব বলেছেন, একেক দিন ঢাকার একেক স্পটে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, এই সেলে যে কেউ ২ কেজি করে মসুর ডাল, আলু ও পেঁয়াজ এবং ২ লিটার সয়াবিন তেল নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে আলু প্রতি কেজি দাম পড়বে ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ টাকা, মসুর ডাল ৬০ টাকা এবং প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১০০ টাকা। তবে এই মুহূর্তে চিনি দেওয়া যাচ্ছে না। চিনি পাওয়া গেলে দেওয়া হবে।
তিনি জানিয়েছেন, যিনি আগে আসবেন তিনি আগে পাবেন, এই ভিত্তিতে এই ট্রাকসেল কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আমদানি বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই ট্রাকসেলের পরিধি বাড়ানো হবে।
সচিব আরও বলেন, সরকার ভর্তুকি মূল্যে এসব পণ্য দিচ্ছে। প্রতিটি পণ্য অর্ধেক দামে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের আওতাধীনরা যেন এই পণ্য না নেন, এই বিষয়টি নিশ্চিতে তদারকি করা হবে।
বৈশ্বিক অবস্থা ও ডলারের বিনিময় হারের দাম বেড়ে যাওয়ায় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে বলে দাবি করেন বাণিজ্য সচিব।
আরও পড়ুন: টিসিবির স্মার্ট কার্ড স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
তবে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১০ হাজার ৯৫ টন আলু আমদানি হয়েছে। ২ লাখ টন আলুর আইপি দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
ডিম আমদানি নিয়ে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ২৫ কোটি ডিম অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিপরীতে ৬২ হাজার ডিম আমদানি হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য ডিম আমদানি না, ডিমের দাম কমানো। দাম কমে গেলে আমদানি কম হলেও অসুবিধা নেই। তবে বাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত আলু ও ডিম আমদানি হবে।
বাণিজ্য সচিব বলেন, ডিম ও আলু আমদানি হওয়ায় উল্লেখযোগ্য ফল আমরা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশনা গেছে, কোল্ড স্টোরেজ থেকে ২৭ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি হবে। জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কোল্ডস্টোরেজ থেকে আলু বের হবে।
টিসিবি কার্ডধারীদের এখন আলু দেওয়া হবে না জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, কারণ জেলা প্রশাসকরা সোমবার (১৩ নভেম্বর) থেকে সরকারি দামে অর্থাৎ ৩৬ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি নিশ্চিত করবে।
সচিব আরও বলেন, তেল, চিনি, ডাল, আলু এসব পণ্য আমদানি করতে যেন ডলারের সমস্যা না হয় সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে- একজন ভোক্তা মাসে একবারই এ ট্রাকসেল থেকে পণ্য কিনতে পারবেন। এই বিষয়টি নিশ্চিতে একেক দিন ঢাকা শহরের একেক স্থানে এই পণ্য বিক্রি করা হবে।
আরও পড়ুন: ওএমএস কর্মসূচির জন্য সয়াবিন তেল ও মসুর ডাল আমদানি করবে টিসিবি
দায়িত্বশীল ক্রয় পদ্ধতিতে মার্কিন অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতা চাইলেন বিজিএমইএ সভাপতি
আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সিইও স্টিফেন লামারকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)।
চিঠিতে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, 'শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন ও মসৃণ কার্যক্রম নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে যেসব পণ্য পাঠানো হবে, সেগুলোর মূল্য যথাযথভাবে সমন্বয় বা মজুরির হার বৃদ্ধি করা জরুরি।’
বিশ্ববাজারের প্রতিযোগী বাণিজ্য সংস্থা আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ) পোশাক, জুতা ও অন্যান্য সেলাই পণ্য সংস্থা এবং তাদের সরবরাহকারীদের প্রতিনিধিত্ব করে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এখন থেকে নতুন ন্যূনতম মজুরি নীতিমালা মেনে সব ধরনের ব্যবসায়িক সমঝোতা ও চুক্তি করতে হবে।
চিঠিতে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আমি বিনীতভাবে এএএফএ সদস্যদের তাদের বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের সঙ্গে যথাযথ সহানুভূতি ও বিবেচনাসহ সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করছি।’
ফারুক বলেন, ‘আমাদের নেওয়া প্রতিটি প্রচেষ্টা ও পদক্ষেপের মাধ্যমে, আমরা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের পরিপূরক হতে চাই, যা পারস্পরিক ও টেকসইভাবে বৃদ্ধি করা। ব্যবসার জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা সরকারের সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, 'পরিকল্পিত প্রবৃদ্ধি ও দক্ষতাকে সমর্থন করে উন্নত অবকাঠামো ও নীতি তৈরিতে সরকারের করা উন্নতি ও অগ্রগতি আপনারা অনুসরণ করছেন। আমি নিশ্চিত আপনাদের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতায় আমরা এগিয়ে যেতে পারব।’
লামারকে লেখা চিঠিতে বিজিএমইএ প্রধান বলেন, গত ৭ নভেম্বর সরকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ২০২৩ সালের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে।
ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং শ্রমিক ও নিয়োগকর্তার প্রতিনিধিসহ অংশীজনদের সঙ্গে ব্যাপকভাবে পরামর্শ ও সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
নতুন ন্যূনতম মজুরি অনুযায়ী সপ্তম গ্রেডের শ্রমিকদের মোট ন্যূনতম মাসিক মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা মোট মজুরির ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি এবং মূল মজুরি ৬৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, নতুন ন্যূনতম মজুরি এমন এক সময়ে এসেছে যখন বিশ্ব অর্থনীতি অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তেমনি বাংলাদেশের অর্থনীতিও অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে এই সংকটের প্রভাব পড়ছে, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে জ্বালানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পরিবহনসহ আমাদের সব অভ্যন্তরীণ খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।’
চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার বাড়ায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অর্থায়ন আরও ব্যয়বহুল হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি লিখেছেন, 'আপনারা জানেন, সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ২০১৩ সাল থেকে আন্তর্জাতিক মানের কর্মক্ষেত্র হিসেবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শিল্পকে বিশাল বিনিয়োগ করতে হয়েছে, যা আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে করেছি।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘এখন বৈশ্বিক জলবায়ু অ্যাকশন এজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে, আমাদের কারখানাগুলো জিএইচজি নির্গমন হ্রাস এবং আরও দক্ষ জনশক্তি বাড়াচ্ছে। শুধু তাই নয়, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, শ্রমিকদের স্বাচ্ছন্দ্য ও ক্লান্তি
কমানোর জন্য কারখানাগুলো মেশিন, পদ্ধতি ও উৎপাদন প্রক্রিয়া সময়োপযোগী করছে।’
ফারুক বলেন, ‘এই সমস্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে, বাংলাদেশ একটি নির্ভরযোগ্য, টেকসই এবং সর্বাধিক পছন্দের সোর্সিং গন্তব্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।’ এই সমস্ত উদ্যোগ ও বিনিয়োগগুলো আপেক্ষিক ও নিরঙ্কুশভাবে ব্যবসার উপর প্রভাব ফেলে।’
তিনি বলেন, ‘এখন ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির মাধ্যমে এই শিল্প প্রতিযোগিতা বজায় রেখে শ্রমিকদের উন্নত জীবনযাত্রার মান নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে।’
ফারুক বলেন, ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি, বিশেষ করে মূল মজুরি ৬৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে শ্রমিকরা ওভারটাইম সুবিধা, অর্জিত ছুটি নগদীকরণ, উৎসব বোনাসসহ অন্যান্য ভাতার ক্ষেত্রে বেশি লাভবান হচ্ছেন।
তিনি বলেন, 'নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন হলে কারখানাগুলোর ওপর ব্যাপক আর্থিক প্রভাব পড়বে। বর্তমান অর্থনৈতিক ও আর্থিক পরিস্থিতিতে নতুন মজুরি বাস্তবায়ন করা আমাদের অনেক কারখানার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে।’
ফারুক বলেন, শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান নিশ্চিত করা তাদের পাশাপাশি বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সিইওকে লেখা চিঠিতে বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, 'যেহেতু আমরা নতুন ন্যূনতম মজুরি কাঠামো গ্রহণ করেছি, তাই আমরা এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করব এবং দায়িত্বশীল ক্রয় অনুশীলনের ক্ষেত্রে আপনাদের সমর্থন আমাদের প্রয়োজন।’
দারাজের ১১.১১ সেল উৎসবে মেতে ছিলেন বাংলাদেশের ২৯ লক্ষাধিক ক্রেতা
ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস দারাজ আনুষ্ঠানিকভাবে বছরের সবচেয়ে বড় সেল দারাজ ১১.১১ শুরু করেছে।
এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টায় দারাজের মাধ্যমে ২৯ লক্ষাধিক ক্রেতা যুক্ত হয়েছেন ৫৩ হাজারের বেশি ব্র্যান্ড এবং ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে।
দারাজ ১১.১১ ক্যাম্পেইনে ক্রেতারা পাচ্ছেন উন্নতমানের ফ্যাশন, বিউটি, হোম ও ডেকোর এবং আরও অনেক আইটেম। কম দামের পাশাপাশি ৬৩ শতাংশ ক্রেতারা উপভোগ করেছেন ফ্রি ডেলিভারির সুবিধা। ১৪ হাজারের বেশি ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এস এম ই) দারাজের ১১.১১ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করেছেন প্রথম ২৪ ঘণ্টায়।
দারাজ গ্রুপের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার বিয়ারকে মিকেলসেন এই মাইলফলক সম্পর্কে বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে আমরা ক্রেতাদের কাছে সম্ভাব্য সর্বোত্তম মূল্য অফার নিশ্চিত করতে চেয়েছি। এটি আমাদের বিক্রেতা ও পার্টনারদের ছাড়া সম্ভব ছিল না। এ ছাড়াও দারাজে আরও অনেক নতুন বিক্রেতা যোগ দিচ্ছেন। দারাজকে ভরসা করার জন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এবারের ১১.১১-এ ক্রেতাদের অভিভূত সাড়া পেয়ে আমরা অত্যন্ত উৎসাহিত। আশা করি আমরা সারা বছর ক্রেতাদের জন্য সেরা পণ্য, সেরা মূল্য এবং সেরা মান নিশ্চিত করার আমাদের প্রতিশ্রুতিকে বজায় রাখতে সক্ষম হব।’
আরও পড়ুন: সেলার ও উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়নে দারাজ সেলার সামিট-২০২৩
দারাজ ১১.১১ সেলে প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ২ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি ফ্যাশন পোশাক বিক্রি হয়েছে। এর মাঝে বাংলাদেশি নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের সংখ্যাই বেশি।
১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ও ল্যাপটপ বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ১ লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি গ্রোসারি আইটেম বিক্রি করেছে।
দারাজ জানায়, ক্রেতাদের কাছে সর্বোত্তম মূল্যে মানসম্পন্ন পণ্যগুলো পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আকর্ষণীয় ডিল এনছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মাধ্যমে ক্রেতারা কেনাকাটা করার সময় অনেক বেশি সাশ্রয় করতে পারেবেন। গ্রাহকরা ৫০ কোটি টাকা মূল্যমানের ছাড়সহ অতুলনীয় কেনাকাটার অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারবেন।
২০ লাখ ডিলের সঙ্গে এ বছরের ১১.১১ আগের চেয়ে বড় যেখানে রয়েছে সুলভ মূল্যে পণ্য কেনার সুযোগ।
অবস্থান নির্বিশেষে, দারাজ এই মেগা উৎসব উদযাপনের জন্য নির্বাচিত পণ্যসমূহে বিনামূল্যে ডেলিভারি অফার করছে।
বিকাশ, নগদ, ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, দারাজ-ইবিএল কো-ব্র্যান্ড কার্ড ও আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পেমেন্টে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক দিচ্ছে।
১১.১১-এ আকর্ষণীয় ডিলগুলো ছাড়াও, ক্রেতারা সারা বছর প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে সেরা মানের পণ্য উপভোগ করতে পারে। দারাজে আছে প্রতিদিনের কম দামের ডিল থেকে শুরু করে আকর্ষণীয় ভাউচার এবং ফ্ল্যাশ সেল যা তার ব্যবহারকারীদের জন্য কেনাকাটাকে সাশ্রয়ী এবং সুবিধাজনক করে তোলে। এই ধরনের উদ্যোগগুলো ক্রেতাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসগুলিতে সঞ্চয় করার সুযোগ করে দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইন কেনাকাটাকে শোভনীয় অভিজ্ঞতায় রূপান্তরিত করে। এর মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মান আরও হয় উন্নত।
দারাজ বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন, ‘আমরা আমাদের পার্টনারসমূহ, ক্রেতাগণ এবং অবশ্যই আমাদের টিমের কাছে কৃতজ্ঞ তাদের প্রশংসনীয় সমর্থনের জন্য যা ১১.১১-কে বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করেছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির এ সময়ে, আমাদের এ বছরের লক্ষ্য ছিল ক্রেতাদের সঞ্চয় সর্বাধিক করতে সাহায্য করা এবং বিক্রেতা ও উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন আয়ের সুযোগ তৈরি করা। আমরা চেয়েছি জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় মোকাবেলা করায় তাদের সাহায্য করতে। আমরা সামনে আমাদের ক্রেতাদের আরও বেশি সঞ্চয় ও বৈচিত্র্যের মাধ্যমে সেরা কেনাকাটার অভিজ্ঞতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এরই সঙ্গে আরও বেশি বিক্রেতাদের তাদের ব্যবসায়িক বিকাশে সহায়তা করতে প্রস্তুত।’
১১.১১, বছরের সবচেয়ে বড় সেল, চলছে ১১ থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত। এখুনি ঘুরে আসুন দারাজে এবং উপভোগ করুন অবিশ্বাস্য ডিল ও অফার।
আরও পড়ুন: বছরের সবচেয়ে বড় সেল ১১.১১ নিয়ে আসছে দারাজ
ভাঙচুর বন্ধ না হলে জীবন ও সম্পদের সুরক্ষায় মালিকেরা কারখানা বন্ধ রাখতে পারবে: বিজিএমইএ
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, যদি কোনো কারখানায় শ্রমিক ভাই-বোনেরা কাজ না করেন, কাজ না করে কারখানা থেকে বের হয়ে যান এবং কারখানা ভাঙচুর করেন; তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিক ভাই-বোন ও সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষায় শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন।
রবিবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় সংগঠনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় বিজিএমইএ সভাপতি বলেছেন, যতদিন না শ্রমিক ভাঙচুর বন্ধ হচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারছে, ততদিন পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষ শিল্প ও সম্পদ রক্ষায় ১৩ (১) ধারায় কারখানা বন্ধ রাখতে পারবেন। প্রতিটি উদ্যোক্তার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে বহিরাগতদের হাত থেকে তার নিজস্ব শিল্প ও সম্পদ রক্ষার।’
তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমানে পোশাকখাতে অনেক কারখানায় কাজ কম, ক্রেতারা নতুন করে অর্ডার দেওয়া বন্ধ রেখেছেন, তাই আমরা নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখতে বলেছি। পরিস্থিতি অনূকূলে এলে আবার নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে।’
ফারুক হাসান বলেন, সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ, এ শিল্পকে নিয়ে যারা চক্রান্ত করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন। সেইসঙ্গে শিল্প-কারখানা চালানোর জন্য আমাদেরকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিন। রাজনীতি ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক। এ মূহুর্তে প্রবাসী আয়খাতে মন্থর ধারা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থায় রপ্তানি আয়ের অন্যতম প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প বিশেষ মনোযোগের দাবি রাখে।
সময়ের পরিক্রমায় নূন্যতম মজুরি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেলেও শিল্পের সক্ষমতা সে অর্থে খুব বেশি বাড়েনি জানিয়ে ফারুক হাসান বলেন, চলতি ২০২৩ (পঞ্জিকা বছর) এর প্রথম ৯ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক পোশাক আমদানি ভ্যাল্যুতে কমেছে ২২ দশমিক ৮১ শতাংশ, যেখানে বাংলাদেশ থেকে তাদের আমদানি কমেছে প্রায় ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নে প্রস্তুত বিজিএমইএ: ফারুক হাসান
একই সময়ে সারা পৃথিবী থেকে পরিমাণে আমদানি কমেছে ২৫ দশমিক ১৬ শতাংশ, আর বাংলাদেশ থেকে কমেছে ২৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। শুধুমাত্র আগস্টেই বাংলাদেশ থেকে ভ্যালুতে কমেছে ৩৩ দশমিক ৭১ শতাংশও সেপ্টেম্বরে ৩৪ দশমিক ৭২ শতাংশ।
চলতি ২০২৩ (পঞ্জিকা বছর)- এর প্রথম আট মাসে ইউরোপের বৈশ্বিক আমদানি কমেছে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং বাংলাদেশ থেকে কমেছে ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ, শুধুমাত্র আগষ্ট মাসেই কমেছে ২৬ দশমিক ০৬ শতাংশ।
২০২৩ সালের অক্টোবরে দেশের সামগ্রিক রপ্তানি অক্টোবর ২০২২ এর তুলনায় ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে পোশাক রপ্তানির কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রকৃত রপ্তানি পারফরমেন্স ২৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ নিচে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের অন্যতম প্রধান বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পোশাকের দরপতন শুরু হয়েছে, যেটা শিল্পের জন্য নতুন শঙ্কা তৈরি করছে। সার্বিকভাবে বিশ্ববাজার থেকে গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পোশাকের দর ৮ দশমিক ০৩ শতাংশ কমেছে।
তিনি আরও বলেন, একই মাসে (আগস্ট ২০২৩) বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যের দর কমেছে ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক কারণের জের ধরে পোশাক শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। বিগত ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সময়ে গ্যাসের মূল্য বেড়েছে ২৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে ২১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত ৫ বছরে পোশাক শিল্পে উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
তিনি বলেন, শুধু তাই নয়; উন্নত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাংক সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে আমাদের ক্রেতাদেরও কস্ট অব ফান্ড বেড়ে গেছে, যার চাপ বহন করতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের।
তিনি আর জানান, ২০১৩ সাল থেকে প্রতিবছরই নিয়মিতভাবে ন্যূনতম ৫ শতাংশ হারে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে কেন্দ্রীয় তহবিল কার্যকর করা হচ্ছে, যা শ্রমিকদের নানামূখী কল্যাণে ব্যয় করা হয়। এই তহবিলের অর্থ শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা পোশাক রপ্তানিতে প্রভাব ফেলবে না: বিজিএমইএ
বাংলাদেশ জুলাইয়ে আরএমজি রপ্তানি করে ৩.৯৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে: বিজিএমইএ
কালীপূজা উপলক্ষে বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ২দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
হিন্দু ধর্মালম্বীদের কালীপূজা বা শ্যামাপূজা উপলক্ষে ২ দিন বন্ধ থাকছে বুড়িমারী স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষ।
ভারতের কোচবিহার রাজ্যের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরের ৩ সংগঠন কালীপূজা বা শ্যামাপূজায় রবিবার (১২ নভেম্বর) থেকে সোমবার (১৩ নভেম্বর) ২ দিন আমদানি-রপ্তানিকারকেরা সকল প্রকার ব্যবসায়ী কর্মকাণ্ড বন্ধ রেখেছেন। যার ফলশ্রুতিতে বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়েও সকল প্রকার আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। তবে উভয় দেশের স্থলবন্দরের পুলিশ অভিবাসন চৌকি (পুলিশ ইমিগ্রেশন) দিয়ে পাসপোর্ট এবং ভিসাধারী যাত্রীদের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা ও লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে কুমিল্লার বিবিরবাজার স্থলবন্দরে ৬ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
বুড়িমারী স্থলবন্দরের পুলিশ অভিবাসন চৌকির কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মুর হাসান কবির জানান, ‘কালীপূজায় স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও উভয় দেশের পুলিশ ইমিগ্রেশন খোলা রয়েছে।’
বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন জানান, ‘কালীপূজায় উভয় স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ রাখার ব্যাপারে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন। ব্যবসায়ীরা কাজকর্ম বন্ধ রাখলে এমনিতেই স্থলবন্দর অচল হয়ে যায়।’
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৪ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ, পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক
টিসিবির স্মার্ট কার্ড স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) স্মার্ট কার্ড স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, টিসিবির ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরিত করায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি অসামঞ্জস্য দূর হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মালিবাগে দেশব্যাপী ১ কোটি স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ এবং চলতি মাসের চালসহ টিসিবি পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সারাদেশে বিনামূল্যে এই স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে উল্লেখ করে কার্ড পেতে কার্ডধারীদের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, শেখ হাসিনা গরিব-দুঃখী, অসহায় মানুষ যারা দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন তাদের কথা বিবেচনা করে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড অর্থাৎ পাঁচ কোটি মানুষকে কম মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশে যে পরিমাণ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে তার চেয়েও বেশি মানুষকে সরকার ভর্তুকি মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ডিম ও আলু আমদানি শুরু হওয়ায় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ডিমের একটি চালান দেশে আসার পর সরকার থেকে যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তার চেয়ে কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি আলু-পেঁয়াজসহ অন্যান্য শাক-সবজির বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: ওএমএস কর্মসূচির জন্য সয়াবিন তেল ও মসুর ডাল আমদানি করবে টিসিবি
তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজের দাম নির্ভর করে দেশের উৎপাদনে উপর। এখন পেঁয়াজের শেষ সময়। আমরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে ঘাটতি পূরণ করে থাকি। কিন্তু ভারত রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে প্রথমে ৪০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করে। এর কিছুদিন পরেই প্রতি টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য আট শো ডলার নির্ধারণ করে। যাতে করে আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে বাজারে দাম বেশি।
ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ার পরেও চালান আসতে দেরি হওয়ার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ডিম আমদানির ক্ষেত্রে আমরা বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছিলাম বিশেষ করে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা সনদ নিতে হবে। এসব শর্ত পূরণে কিছু আইনি জটিলতা থাকায় দেশে চালান আসতে দেরি হয়েছে।
টিপু মুনশি জানান, ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নিচ্ছে এবং মানুষ কষ্ট পাচ্ছে এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দেশের মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে হবে এবং আমরা সে চেষ্টাই করে যাচ্ছি।
বৈশ্বিক কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ে ভীষণ দুঃসময় পার করতে হচ্ছে। এরমধ্যেই বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে অসাধু চক্র। রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ার করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
এসময় টিসিবির চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মামুন রশিদ শুভ্র উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আগামী জানুয়ারির মধ্যে টিসিবির স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে টিসিবির পণ্য বিক্রি