বিশ্ব
খনিজ চুক্তি সই না করেই হোয়াইট হাউস ছাড়লেন জেলেনস্কি
ওভাল অফিসে একটি বিশেষ বৈঠকে অসম্মানজনক আচরণের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ চুক্তি না করেই হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। যদিও এই চুক্তিটি রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধ বন্ধের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে—এমনটাই বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ধারণা করা হচ্ছে বিস্ময়কর ঘটনাগুলো ইউরোপ এবং বিশ্বজুড়ে পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলেতে পারে। এই সফরে ট্রাম্প ও জেলেনস্কি ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বেশি প্রবেশাধিকার দিতে একটি চুক্তি সই করবে এবং একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে আশা করা হয়েছিল। তবে নেতাদের মধ্যে উত্তপ্ত আলোচনার পরে সংবাদ সম্মেলনের সেই পরিকল্পনাটি ভেস্তে যায়।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কিয়েভে পাঠানো ১৮০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি আমেরিকান সহায়তার অর্থ পরিশোধের জন্য চুক্তিটি অপরিহার্য বলে জোর দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে এটি স্পষ্ট নয় যে, তার অমতের পরিণতি কী হতে পারে। এখন চুক্তিটিকে আবার সঠিক পথে ফেরাতে জন্য জেলেনস্কির সঙ্গে কী করতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প—তা এখন দেকার বিষয়।
ট্রাম্প প্রকাশ্যে ইউক্রেনের নেতাকে তিরস্কার করে হোয়াইট হাউস ছাড়তে বলার পরপরই ট্রাম্পের শীর্ষ উপদেষ্টারা তাকে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করতে বলেন।
জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেন, 'আপনি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের নিয়ে তামাশা করছেন। আপনি যা করছেন তা দেশের জন্য খুবই অসম্মানজনক। এই দেশটি আপনাকে অনেক বেশি সমর্থন করেছে।’
প্রায় ৪৫ মিনিটের বৈঠকের শেষ ১০ মিনিট ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং জেলেনস্কির মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। যারা বিশ্বে মস্কোর বছরের পর বছর ধরে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কথা উল্লেখ করে কূটনীতির প্রতি রাশিয়ার প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে সংশয়ের কথা বলে আসছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে এমন একটি ফার্ম ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে, যেখানে মাত্র দুজন কর্মী: ট্রাম্প
বৈঠকে জেলেনস্কির মূল উদ্দেশ্য ছিল ট্রাম্পকে তার দেশকে পরিত্যাগ না করার জন্য চাপ দেওয়া। একই সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের খুব কাছাকাছি যাওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করা। কিন্ত ট্রাম্প এর পরিবর্তে উত্তেজিত হয়ে চিৎকার করেন।
এক পর্যায়ে জেলেনস্কি বলেন, পুতিন যুদ্ধবিরতি ও অন্যান্য চুক্তির বিষয়ে ২৫ বার 'নিজের প্রতিশ্রুতি' ভেঙেছেন এবং তাকে বিশ্বাস করা যায় না।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, পুতিন তার সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করেননি। ইউক্রেনকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, তিনি মনে করেন খনিজ চুক্তি— যা এখন স্থগিত রয়েছে—কার্যকরভাবে লড়াইয়ের অবসান ঘটাবে।
ভ্যান্স জেলেনস্কিকে চ্যালেঞ্জ দেওয়ার পর পরিস্থিতি প্রথম আলোচনায় আসে এবং তাকে বলেন, ' জনাব প্রেসিডেন্ট, সম্মানের সঙ্গে বলছি, আমি মনে করি ওভাল অফিসে এসে আমেরিকান মিডিয়ার সামনে অভিযোগ করার চেষ্টা করা আপনার জন্য অসম্মানজনক। জেলেনস্কি আপত্তি জানানোর চেষ্টা করলে ট্রাম্প উচ্চস্বরে বলেন, 'আপনি লাখ লাখ মানুষের জীবন নিয়ে জুয়া খেলছেন।’
আরেক পর্যায়ে ট্রাম্প নিজেকে 'মধ্যস্থতাকারী' বলে দাবি করেন। বলেন তিনি সংঘাতে ইউক্রেন বা রাশিয়ার পক্ষে নয়। তিনি পুতিনের প্রতি জেলেনস্কির 'ঘৃণা'কে শান্তির পথে বাধা বলে উপহাস করেন।
ট্রাম্প বলেন, 'পুতিনের প্রতি তার ঘৃণা আপনারা দেখেছেন। এ ধরনের ঘৃণার সঙ্গে চুক্তি করা আমার জন্য খুবই কঠিন।’
আরও পড়ুন: মুখোমুখি বসবেন ট্রাম্প-পুতিন, চলছে প্রস্তুতি
৩০৩ দিন আগে
ভারতে তুষারধসে আটকা ৪১ শ্রমিক
ভারতের তিব্বত সীমান্তের কাছে তুষারধসে অন্তত ৪১ জন নির্মাণ শ্রমিক আটকা পড়েছেন। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) তুষার ধসে তারা আটকা পড়েন বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
ঘটনাটি ঘটে উত্তরাখণ্ড রাজ্যের মানা পাসের কাছে। দুর্ঘটনায় ৫৭ জন নির্মাণ শ্রমিক প্রাথমিকভাবে বরফের নিচে চাপা পড়েন। পরে উদ্ধারকারী দল এখন পর্যন্ত ১৬ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা রাজীব স্বরূপ।
স্বরূপ বলেন, উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে তিনজনকে একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেই বাকী নিখোঁজদের উদ্ধারে চেষ্টা চলছে।
উত্তরাখণ্ডের শীর্ষ কর্মকর্তা পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে।
পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল হিমালয় অঞ্চল, যা বিশ্ব উষ্ণায়নে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে এটি তুষারধসের ঝুঁকিতে রয়েছে।
২০২২ সালে উত্তরাখণ্ড অঞ্চলে তুষারধসে ২৭ জন শিক্ষানবিশ পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকায় খনি ধসে আটকা পড়েছে ৪ হাজার অবৈধ শ্রমিক
৩০৩ দিন আগে
বিটিএস সদস্যকে চুমু খেয়ে বিপাকে পঞ্চাশোর্ধ্ব নারী
দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় কে-পপ ব্যান্ড বিটিএস সদস্য জিনের গালে সম্মতি ছাড়া চুমু দিয়ে আইনি জটিলতায় পড়েছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব এক জাপানি নারী। ওই ঘটনার পর তাকে তলব করেছে দক্ষিণ কোরিয়ান পুলিশ।
স্থানীয় বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির রাজধানী সিউলের সংপা পুলিশ স্টেশনের এক পুলিশ কর্মকর্তা। গত বছরের জুন মাসে জিন আয়োজিত ‘ফ্রি হাগ’ অনুষ্ঠানে এই চুমুকাণ্ড ঘটে বলে জানান তিনি।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, সম্মতি ছাড়া চুমু দেওয়ায় ওই নারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে। তবে ওই নারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তার স্বার্থে তার পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি।
পুলিশ স্টেশন থেকে আরও জানানো হয়েছে, অনলাইনে একটি অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়। তবে তদন্ত এখনও শেষ না হওয়ায় এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা।
এদিকে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, জাপানি পুলিশের সহায়তায় দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করে। তাকে পুলিশ স্টেশনে ডাকা হলেও জেরায় হাজির হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই নারী।
দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১৩ জুন ১৮ মাসের বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা শেষ করেন জিন (কিম সোক-জিন)। বিটিএস সদস্যদের মধ্যে তিনিই প্রথম এই দায়িত্ব শেষ করেছেন। ব্যান্ডের অন্যান্য সদস্যরা এখনও সামরিক সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।
এর পরের দিন (১৪ জুন) রাজধানী সিউলে একটি অনুষ্ঠানে নিজের ভক্ত-অনুরাগীদের জন্য ‘ফ্রি হাগ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এই কে-পপ তারকা। ওই ইভেন্টে প্রায় ১ হাজার মানুষ অংশ নেয় বলে গণমাধ্যমে খবর বেরোয়।
জড়িয়ে ধরার ওই অনুষ্ঠান চলাকালে এক নারী হঠাৎ জিনের গালে চুমু দিয়ে বসেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হলে মুহূর্তের মধ্যে তা ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, অপ্রত্যাশিত চুমু পেয়ে বেশ খানিকটা অস্বস্তিতে পড়ে যান জিন।
এরপর ওই নারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে লেখেন, ‘আমার ঠোঁট তার ঘাড় স্পর্শ করেছে। তার ত্বক খুব নরম!’
দক্ষিণ কোরিয়ার ২০১৩ সালে গঠিত হয় বিটিএস। ৩২ বছর বয়সী জিন বয়সে এই ব্যান্ডের সবচেয়ে বড় সদস্য।
৩০৪ দিন আগে
মিসরে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু, কার্যকারিতা নিয়ে শঙ্কা
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে প্রতিবেশী দেশ মিসরে আলোচনা শুরু হয়েছে। শনিবারে (১ মার্চ) শেষ হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতির চুক্তির প্রথম ধাপের ছয় সপ্তাহের মেয়াদ। তবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে রয়েছে আশঙ্কা।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মিসরের রাজধানী কায়রোতে শুরু হয়েছে এই আলোচনা। দেশটির সরকারি তথ্য সেবা দপ্তর এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রথম দিন চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে ইসরায়েল, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।
মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো গাজাবাসীর জন্য মানবিক সহায়তা বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা করেছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে ইসরায়েল
চুক্তির প্রথম ধাপে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ভোরে ৪ ইসরায়েলি জিম্মির লাশ হস্তান্তর করেছে হামাস। বিনিময়ে গত শনিবারের স্থগিত হওয়া বন্দিসহ ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তির কথা রয়েছে। এ ছাড়াও গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে সেনা প্রত্যাহার করার শর্তও রয়েছে। এরপর তৃতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় মৃত জিম্মিদের লাশ ফেরত আনার কথা।
ইসরায়েলের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে হামসের হাতে ৫৯ ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতার পঞ্চম পর্যায়ে তিন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির পর হামাসকে নির্মূল করার ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। পরবর্তীকে তাকে সমর্থন করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি: আরেক দফা বন্দি বিনিময়ে সম্মত ইসরায়েল-হামাস
অন্যদিকে, প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের বর্বর হামলা সত্ত্বেও নতজানু হয়নি হামাস। যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছের হামাসের। এছাড়া নিজেদের অনেক সেনা প্রাণ হারালেও অস্ত্র ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল হামাস যোদ্ধারা। এ পরিস্থিতিতে আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে আশঙ্কা রয়েই যায়।
অবশ্য চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলতে থাকবে।
এদিকে, আলোচনা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতির শর্তানুযায়ী গাজার ফিলাডেলফি করিডোর থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে না।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎস জানান, সম্প্রতি করিডোরটি পরিদর্শনকালে তিনি সেখানে একটি সুড়ঙ্গ দেখতে পেয়েছেন। তবে নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উত্থাপন করেননি।
অবশ্য মিসর ওই সুড়ঙ্গ ধ্বংস করছে বলে জানিয়েছে। পরে দেশটি সেখানে সামরিক বাফার জোন স্থাপন করেছে বলে নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েলের এই ঘোষণাকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে বিবৃতি দিয়েছে হামাস। সংগঠনটি জানিয়েছে, চুক্তি মেনে না চললে বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।
হামাস ও ইসরায়েলের এই কঠোর অবস্থান যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে আরও জটিল করে তুলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩০৪ দিন আগে
ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে শুরু করেছে ইসরায়েল
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ৬ শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া শুরু করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বন্দীদের মুক্তি দেওয়া শুরু করেছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনি সূত্রগুলো সিনহুয়াকে জানিয়েছে, মধ্য পশ্চিম তীরের ওফার কারাগার থেকে বন্দীদের বহনকারী বাসগুলো বেইতুনিয়া এলাকার একটি অভ্যর্থনা কেন্দ্রের দিকে রওনা হয়েছে।
হামাস সংশ্লিষ্ট প্রিজনার্স ইনফরমেশন অফিস জানিয়েছে, সপ্তম ও অষ্টম ব্যাচের বন্দী মুক্তির বিষয়টি একীভূত করা হয়েছে। যার ফলে মোট ৬৪২জন বন্দী মুক্তি পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি: আরেক দফা বন্দি বিনিময়ে সম্মত ইসরায়েল-হামাস
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তির প্রথম ধাপের অংশ হিসেবে এসব বন্দী মুক্তি পাচ্ছেন। হামাস এটিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় বন্দী মুক্তির ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে।
হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম এক বিবৃতিতে বলেন, 'সপ্তম ও অষ্টম ব্যাচের বন্দিদের মুক্তির মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের একটি অর্জন আমরা প্রত্যক্ষ করছি, যা যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বন্দী মুক্তি।’
তিনি আরও বলেন, হামাস যেকোনো বিনিময় চুক্তিতে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তিকে অগ্রাধিকার দেয়। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, তারা মৃতদেহ বিনিময়ের জন্য নতুন পদ্ধতি সম্পর্কিত মধ্যস্থতাকারীদের অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন। যা প্রক্রিয়াটির প্রতি ইসরায়েলের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করে।
মঙ্গলবার হামাস ঘোষণা করেছে, ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিলম্বিত মুক্তি নিয়ে তারা একটি বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে, যা মূলত গত শনিবার হওয়ার কথা ছিল। কায়রোতে হামাসের প্রতিনিধি দল ও মিশরীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার পর এই প্রস্তাব আনা হয়।
আরও পড়ুন: কেমন কাটছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর জীবন?
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে আশ্বাস দাবির পরে বন্দীদের মুক্তিতে এই বিলম্ব হয়। আগের বন্দী বিনিময় কার্যক্রমের সময় হামাস আয়োজিত ‘উসকানিমূলক সামরিক কুচকাওয়াজ’র পুনরাবৃত্তি হবে না। যেটিকে তিনি ‘ইসরায়েলি জিম্মিদের অধিকারের জন্য অপমানজনক’ বলে মনে করেছিলেন।
৩০৫ দিন আগে
অভিবাসন নীতিতে কঠোর ট্রাম্প, তবে ধনী হলে অন্য কথা
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ধনকুবের বিদেশি ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করতে সেই তিনিই এবার নতুন পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘গোল্ড কার্ড’ নামে এক নতুন অভিভাসন নীতির কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। তবে এই সুবিধা নিতে গুণতে হবে বিরাট অঙ্কের অর্থ, ৫০ লাখ ডলার (প্রায় ৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা)।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ওভাল অফিস থেকে এই ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘আমরা গোল্ড কার্ড বিক্রি করতে যাচ্ছি, যার প্রত্যেকটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ লাখ ডলার।’
‘এই গোল্ড কার্ড গ্রিন কার্ডের সুবিধা দেবে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ারও পথও সুগম করবে। ধনী ব্যক্তিরা এই কার্ড কিনে যক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে পারবেন।’
আরও পড়ুন: শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প
দুই সপ্তাহের মধ্যে এই কার্ড বিক্রি শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, লাখ লাখ কার্ড বিক্রির আশা করছেন তারা।
ট্রাম্পের বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক এ সময় ইবি-৫ (গ্রিন কার্ড) প্রোগ্রামের সমালোচনা করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিদ্যমান ইবি-৫ ভিসা কর্মসূচির জায়গায় নতুন এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে।
তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে আবেদনকারীদের ভেটিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তারা বিশ্বস্ত কিনা তা যাচাই করা হবে।’
রুশ ধনকুবেররাও এ গোল্ড কার্ড পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন কি না—জানতে চাইলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, তা তো হতেই পারে! বেশ কয়েকজন রুশ ধনকুবেরকে আমি চিনি, তারা তো বেশ ভালো মানুষ।’
১৯৯২ সালে প্রথম ইবি-৫ কর্মসূচি চালু করে মার্কিন কংগ্রেস। এতে ন্যূনতম ১০ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলোতে (টিইএ) কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে ৮ লাখ ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে বিদেশি নাগরিকদের গ্রিন কার্ড পাওয়ার সুযোগ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। বিনিয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেতেন বিদেশিরা।
ট্রাম্প ও তার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরাও এই কর্মসূচির সুবিধা নিয়ে বড় বড় কিছু প্রকল্পে অর্থায়ন করেছেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তবে পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসে এই কর্মসূচিটি নিয়ে সমালোচনা ওঠে। যে লক্ষ্যে ইবি-৫ চালু করা হয়েছিল, সেখান থেকে এটি সরে যাচ্ছে বলে সে সময় অভিযোগ করা হয়। সমালোচকরা কর্মসূচিটির সংস্কার দাবি করেন।
আরও পড়ুন: চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ: ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শি জিন পিংয়ের
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালে টিইএতে ন্যূনতম বিনিয়োগ ৯ লাখ ডলার এবং অন্যান্য এলাকায় ১৮ লাখ ডলারে উন্নীত করার চেষ্টা করলেও ২০২১ সালে এক ফেডারেল জজ এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন।
এরপর ২০২২ সালে প্রোগ্রামটি আবার চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় বাইডেন প্রশাসন। বর্তমান বিনিয়োগ শর্তাবলী বাইডেনের আমলেই কার্যকর করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেই অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে একের পর এক নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। এ সময় তিনি জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের আইন বাতিল করেন, সীমান্তে জারি করেন জরুরি অবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান।
এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের আটক করে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ সময়ে অভিবাসীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণেরও অভিযোগ উঠেছে।
এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের এই ‘গোল্ড কার্ড স্কিম’ যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ট্রাম্প এটিকে সরকারের জন্য বিপুল রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি ধনী ব্যক্তিদের আকৃষ্ট করার হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন।
তবে কংগ্রেসে এই পরিকল্পনা বিতর্কের জন্ম দিতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত অভিবাসন ব্যবস্থার ওপর এর প্রভাব নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
৩০৫ দিন আগে
গাজায় যুদ্ধবিরতি: আরেক দফা বন্দি বিনিময়ে সম্মত ইসরায়েল-হামাস
ইসরায়েলি বন্দিদের মরদেহ হস্তান্তর ও বিনিময়ে শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে ইসরায়েল প্রশাসন ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরই মধ্যে দিয়ে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে আরেক দফা বন্দি বিনিময় হতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল ও হামাসের কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চলতি সপ্তাহে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ৬০০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও তাদের মুক্তি দেয়নি হামাস। স্থানীয় সময় রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে এক ঘোষণার মাধ্যমে বন্দি বিনিময় স্থগিত করে ইসরায়েল। হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তির সময়ে ‘অপমানজনক অনুষ্ঠান’ করার প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নেয় নেতানিয়াহু প্রশাসন।
শনিবার হামাসের জিম্মি মুক্তির সময় জিম্মিদের সমবেত জনতার উদ্দেশে হাত নাড়তে দেখা যায়। এমনকি হামাসের দুই যোদ্ধার কপালে এক জিম্মি চুমু খাওয়ার ছবি, ভিডিও ভাইরাল হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে ইসরায়েল লেছে, ‘লজ্জাজনক অনুষ্ঠান ছাড়াই পরবর্তী জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শনিবারের নির্ধারিত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
ইসরায়েলের এ পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানায় হামাস। একে যুদ্ধবিরতির চুক্তির ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ আখ্যা দিয়ে হামাস এক বিবৃতিতে জানায়, বন্দিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় বসবে না তারা।
এই অচলাবস্থার কারণে চলমান ছয় সপ্তাহের প্রথম ধাপের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করল ইসরায়েল: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
তবে মঙ্গলবার আরেক বিবৃতিতে হামাস জানায়, সশস্ত্র দলটির শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা খলিল আল হায়ারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল কায়রো সফরকালে এই বিরোধ নিষ্পত্তির একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।
আলোচনায় অগ্রগতির ফলে চার ইসরায়েলি জিম্মির লাশ ও যুদ্ধবিরতির আওতায় মুক্তি পাওয়া কয়েকশ অতিরিক্ত ফিলিস্তিনি বন্দিকে ঘরে ফেরানোর পথ সুগম হয়েছে বলে জানানো হয়।
গত শনিবার যেসব ফিলিস্তিনির মুক্তি স্থগিত করা হয়েছিল, তাদের সমন্বয়ে চুক্তি অনুযায়ী নতুন বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে নিশ্চিত করেছে হামাস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা হামাসের হাতে নিহত জিম্মিদের লাশ ফিরিয়ে আনার চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আজই (বুধবার) এই বিনিময় কার্যকর হতে পারে। কোনো প্রকাশ্য অনুষ্ঠান ছাড়াই মিসরীয় কর্তৃপক্ষের কাছে দেহগুলো হস্তান্তর করা হবে বলে ইয়নেট নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এর আগে, শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হামাস জিম্মিদের মুক্তির সময় একটি সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে ইসরায়েলি জিম্মিদের সমাবেশের উদ্দেশে হাত নাড়তে দেখা যায়। এমনকি এক জিম্মিকে হামাসের দুই যোদ্ধার কপালে চুমু খেতেও দেখা যায়। পরবর্তীতে এ ঘটনার ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ইসরায়েল এ ঘটনার প্রতিবাদ জানায়।
তবে মঙ্গলবারের ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের চুক্তির শর্ত পূরণ হবে। গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। আর এ ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি ও বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে।
বন্দি বিনিময়ে এই অগ্রগতির পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যপ্রাচ্যে সফরের পথও সুগম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধ সমাপ্তির বিষয়ে আলোচনায় উইটকফের অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: দুই জিম্মিকে ছাড়ল হামাস, ইসরায়েল মুক্তি দিল ৬০২ বন্দিকে
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে হঠাৎ হামলা চালায় হামাস। সে সময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। পাশাপাশি আরও প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা।
এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে পরের দিন থেকে গাজাজুড়ে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। আকাশ ও স্থলপথে গত প্রায় ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৪৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে, এই সময়ে হামাসের ১৭ হাজারের বেশি যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। তবে এই তথ্যের পক্ষে তারা কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসনগরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। সেখানকার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে; ধ্বংস হয়েছে অবকাঠামো, ভেঙে পড়েছে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা। পাশাপাশি লড়াই চলাকালে প্রয়োজনীয় ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে গাজায় প্রবেশ করতে না দেওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে গাজাবাসীর।
৩০৬ দিন আগে
থাইল্যান্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৭, আহত ৩২
থাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় প্রাচিনবুরি প্রদেশের একটি সড়কে বাস উল্টে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৩২ জন।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির স্থানীয় সড়ক নিরাপত্তা কেন্দ্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বাস দুর্ঘটনার জায়গাটি তুলনামূলকভাবে ঢালু ছিল।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সেনা অভিযানে ১০ জন নিহত
কেন্দ্রের মতে, স্থানীয় সময় ভোর ৩টার দিকে গাড়িটি উল্টে যায়। এসময় বাসটিতে ৪৯ জন যাত্রী ছিলেন। বাস উল্টে গেলে ঘটনাস্থলেই ১৬ জন নিহত হন। আর হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়।
এছাড়া আহত ৩২ জনকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পুলিশের বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রাস্তার ওই অংশটি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে , বাসটির ব্রেক সিস্টেম কাজ না করার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
৩০৬ দিন আগে
ইরাকের আদমশুমারির ফল ঘোষণা, জনসংখ্যা ৪ কোটি ৬১ লাখ
ইরাকে প্রায় চার দশক পরে অনুষ্ঠিত আদমশুমারিতে দেশটির জনসংখ্যা বেড়ে ৪ কোটি ৬১ লাখে পৌঁছেছে। গত বছর শুমারির শুরুতে করা প্রাথমিক অনুমানের চেয়েও যা ১০ লাখ বেশি। শিক্ষা ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বি জনসংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে কুর্দিরা। সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে শুমারির ফলাফল ঘোষণা করেন ইরাকের পরিকল্পনা মন্ত্রী মোহাম্মদ তামিম।
এর আগে ২০০৯ সালের বেসরকারি এক হিসাবে দেশটির জনসংখ্যা ছিল ৩ কোটি ১৬ লাখ। ইরাকের কর্মকর্তারা বলেন, ‘ভবিষ্যতে ইরাকের সম্পদ বণ্টন ও ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে এই শুমারির তথ্য সহযোগিতা করবে বলে তদের বিশ্বাস। দীর্ঘদিন পরে শুমারি অনুষ্ঠিত হওয়ায় একে সরকারের সাফল্য হিসেবে দেখছেন তারা।’
এ বিষয়ে দেশটির পরিকল্পনা মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি উন্নয়নে বর্তমান সরকারের কতখানি দৃঢ়সংকল্প, তারই প্রমাণ বহন করে এই উদ্যোগ।’
দশকের পর দশক ধরে চলা যুদ্ধে নানা দিক থেকেই ক্ষত-বিক্ষত ইরাক। দেশটির অর্থনীতিতে চলছে অস্থিরতা। দেশে চলমান বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করেছে দেশটির সরকার।
আরও পড়ুন: আইসিজে’র প্রেসিডেন্ট নওয়াফ সালাম লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী
এরই ধারাবাহিকতায় ইরাকের আদমশুমারির আয়োজন করা হয়েছে। শুমারিতে দেশটির অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও বাসস্থান সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও ইরাক এবং দেশটির উত্তরাঞ্চলের আধা-স্বায়ত্বশাসিত কুর্দি অঞ্চলের তথ্য শুমারিতে আলাদাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
শুমারির তথ্যমতে, ফেডারেল ইরাকের মোট জনসংখ্যার ৭০ দশমিক ২ শতাংশ শহরে বাস করেন। অন্যদিকে কুর্দি জনগোষ্ঠীর ৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ লোক শহরগুলোতে বাস করেন।
ফেডারেল ইরাকের থেকে অর্থনৈতিক দিক থেকেও তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে রয়েছেন কুর্দিরা। ফেডারেল ইরাকের তুলনায় কর্মক্ষম জনসংখ্যা বেশি কুর্দি অঞ্চলে। কুর্দিতে ৪৬ শতাংশ জনগণ অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল, সেখানে ইরাকে ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ।
এমনকি শিক্ষাক্ষেত্রে যেখানে ৯৩ শতাংশ কুর্দি শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, সেখানে ফেডারেল ইরাকের ৮৮ শতাংশ শিশু স্কুলে যায়। তবে শুমারির তথ্যমতে, ফেডারেল ইরাকের জনগণ বাড়ির মালিকানা, বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে ভালো অবস্থানে রয়েছে।
শুমারির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে ইরাকের পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘চার দশকের মধ্যে প্রথমবার আয়োজিত এই আদমশুমারি সফলতার সঙ্গে শেষ করেছে ফেডারেল সরকার।’
গত নভেম্বরে আদমশুমারি পরিচালনা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দেশটির ১৮টি প্রদেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ কাজে ১ লাখ ২০ হাজার গবেষক নিয়োগ করে সরকার।
এর আগে ১৯৮৭ সালে যখন সাদ্দাম হোসেন ক্ষমতায় থাকাকালীন আদমশুমারি করা হয়েছিল ইরাকে।
৩০৭ দিন আগে
কেমন কাটছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর জীবন?
রাতের ঘুটঘুটে কালো অন্ধকার কেমন যেন একটা ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি করে, যা কোমলমতি শিশুদের মনে ভয়ের সৃষ্টি করে। যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত গাজার রাতগুলো যেন অন্য যেকোনো জায়গার চেয়ে আরও বেশি ভয়ানক!
গাজা উপত্যকায় যখন রাত নামে ভাঙা ঘরবাড়ির বিভিন্ন অংশ অন্ধকারে ঢেকে গিয়ে ভয়ার্ত দৃশ্য তৈরি করে। এতে আতঙ্কিত হয় শিশুরা।
ইসরায়েলের তান্ডবে নিজের বাড়ি বিধ্বস্ত হলেও ধংসস্তূপের মধ্যেই বাস করছেন ফিলিস্তিনি নারী রাওয়া তাম্বুরা ও তার বাচ্চারা। তবে রাত হলেই অন্ধকারে নিজেদের বাড়ির ভগ্নদশায় ভয় পায় তার ছেলেরা।
ভয় তাড়াতে বাধ্য হয়ে মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে রাখেন তাম্বুরা। অবশ্য যতক্ষণ চার্জ থাকে মোবাইলে। পনেরো মাসের হামলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে গাজায়। তার কর্মস্থলে থাকা একটি জেনারেটরে রোজ চার্জ করে আনেন মোবাইল।
আরও পড়ুন: এবার অধিকৃত পশ্চিমতীরে ট্যাংক পাঠাল ইসরায়েল
দীর্ঘ ১৬ মাস পর বাড়ি ফিরেছেন তাম্বুরা। যদিও বাড়ি বলতে সেই অর্থে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। প্রচণ্ড হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে পানি, বিদ্যুৎ, তীব্র শীতে উষ্ণতা পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা, এমনকি ময়লা আবর্জনা দূর করার উপায়ও তাদের নেই।’
জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় যুদ্ধ-বিরতি কার্যকর হওয়ার পর প্রায় ৬ লাখ বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী প্রবল আগ্রহ উদ্দিপনা নিয়ে নিজেদের বাসস্থানে ফিরেছিলেন।
তবে ঘরে ফেরার আনন্দে বিভোর গাজাবাসী ধীরে ধীরে অনুভব করতে শুরু করেছেন তাদের কঠোর বাস্তবতা। ঠিক কতদিন তাদের এই মানবেতর জীবনযাপন করতে হবে তার কোনো ইয়ত্তা নেই।
কয়েক কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে খাবার পানি আনেন তারা। নেই খাবারেরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। খাবার রান্না করতে হলে মাইলের পর মাইল খুঁজতে হয় জ্বালানি। ভাঙা বাড়িঘর গুলো থেকে ইট-পাথর সরানোর মতো কোনো সরঞ্জামও নেই গাজাবাসীর কাছে।
তাম্বুরা বলেন, ‘গাজাবাসী এতটা কষ্টে রয়েছেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন এরকম যুদ্ধবিরতির চেয়ে তারা যুদ্ধে শহীদ হলেই ভালো হতো।’ তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, ভবিষ্যতে আমরা কি করবো, আমি আর কিছু চিন্তা করতে পারছি না।’
এদিকে, আগামী শনিবার (১ মার্চ) শেষ হতে চলেছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ। দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। পুনরায় চুক্তি হবে কিনা তা অনিশ্চিত। যদি চুক্তি না করে ইসরায়েল পুনরায় হামলা করে অসহায় গাজাবাসীর ভাগ্যে কি রয়েছে, তারা নিজেরাও তা জানেন না। আশ্রয়ের সন্ধানে কোথায় যাবেন জানেন না দুর্ভাগা মানুষগুলো।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি স্থগিত করল ইসরায়েল: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
অন্যদিকে ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই গাজার পুনর্গঠন নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা শোনা গেলেও দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বিশ্বব্যাংকের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের হিসাব মতে গাজাকে ফের বসবাসযোগ্য করে তুলতে প্রায় ৫৩০ কোটি টাকা (৫৩ বিলিয়ন ডলার) প্রয়োজন। তবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কিভাবে আর কোন উৎস থেকে আসবে তা নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রাথমিকভাবে মানুষগুলো যেন কোনোভাবে বাস করতে পারে উপত্যকাটিতে সেটি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, আশ্রয়ের জন্য তাঁবু, খাবার পানি ও রান্না করার ব্যবস্থা করতে শুরু করেছে তারা।
তবে একদিকে ইসরায়েলের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ঘরবাড়িতেই কোনোভাবে টিকে থাকার চেষ্টার মাঝেই আরেক শঙ্কা তৈরি করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে গাজাবাসীদের অন্যত্র সরিয়ে তিনি গাজা দখল করার ঘোষণা দেন। এর আগে তিনি গাজাকে পুর্নগঠনের নামে তার ‘ক্লিন গাজা’ মিশনের কথা বলেন। তিনি মিসর ও জর্ডানে গাজাবাসীদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলেন।
তবে ট্রাম্পের বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছেন গাজার বাসিন্দারা। কোনো মূল্যেই তারা জন্মভূমি ত্যাগ করবেন না বলে জানান।
এই বিধ্বস্ত নগরীতেই নিজেদের অদৃষ্ট মেনে নিয়েই বাঁচতে শুরু করেছে গাজাবাসী। বৈইত লাহিয়ার তাম্বুরা রোজ ঘণ্টাখানেক হেঁটে গিয়ে একটি হাসপাতালে নার্সের চাকরি করেন। তার মাত্র ১২ বছর বয়সী ছেলে কয়েক কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে খাবার পানি সংগ্রহ করেন। তারা বাস করেন তাদের বাড়ির অর্ধেক ভাঙা একমাত্র রক্ষা পাওয়া রুমটিতে।
তাদের মতোই তেল আল হায়ার আসমা দাওইমাও ফিরেছেন নিজ বাসভূমে। কিন্তু তার বাড়িটির কিছুই অবশিষ্ট না থাকায় থাকছেন ভাড়া বাড়িতে। আসমা বলেন, ‘আমি এখানে ফেরার সাহস পাচ্ছিলাম না। সত্যটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল যে আমাদের বাড়িটা আর নেই।’
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলিরা শুধু বাড়িই নয়, আমাদের স্বপও ভেঙে দিয়েছে।’ গাজার শহরে ফিরে ভাঙা বাড়ির ছোট একটি রুমে পুরো পরিবার নিয়ে বাস করছেন ২০ বছর বয়সী যুবক হুডা শায়েক। তার ভাষ্যে, অন্তত নিজের জন্মস্থানে তো রয়েছেন তারা।
এমনই মানসিক শক্তিতে বলীয়ান গাজাবাসী। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ জেনেও জন্মভূমির মাটি আটকে পড়ে রয়েছেন গাজার মানুষ। বিশেষজ্ঞরা বলছে, গাজার পুর্নগঠনে লাগতে পারে কয়েক দশক।
জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অঞ্চলটিতে আরও বেশি পরিমানে ত্রান পাঠানোর চেষ্টা করছে।
৩০৭ দিন আগে