বিশ্ব
খনিজ চুক্তি ছাড়াই শেষ হলো ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক
৫ ফেব্রুয়ারি, (ইউএনবি)— বিরল খনিজ বিষয়ে চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেননি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। ওই খনিজ চুক্তি ছাড়াই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠক শেষ করেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জামার্নিতে অনুষ্ঠিত মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন জেলেনস্কি ও ভ্যান্স।
এই বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন আদায়ের জন্য ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ চুক্তি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন জেলেনস্কি।
এর আগে, গত বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের সামনে একটি সংশোধিত খসড়া চুক্তি উপস্থাপন করে কিয়েভ। চুক্তিটি কার্যকর হলে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের বিশাল ভান্ডার মার্কিন বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে বলে জানানো হয়।
তবে মিউনিখে চুক্তিটি কার্যকর না হলে ইউক্রেন এ বিষয়ে কাজ চালিয়ে যাবে বলে বৈঠকের পর এক এক্স পোস্টে বলেছেন জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, ‘ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠকটি ভালোভাবেই শেষ হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি বাস্তব এবং নিশ্চিত শান্তির দিকে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত কিয়েভ।’
এ ছাড়াও চুক্তিটি সম্পন্ন করতে আরও কিছু ক্ষেত্রে বিস্তৃতভাবে কাজ করতে হবে বলে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ইউক্রেনের দুই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: শান্তির পথে ফিরতে চায় ইউক্রেন: জেলেনস্কি
তবে চুক্তি না হওয়ার ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করে কোনো বক্তব্য দেয়নি ওয়াশিংটন কিংবা কিয়েভ।
সম্প্রতি রুশ সেনাবাহিনীর হামলায় পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। ইউরোপের পাশাপাশি মার্কিন সামরিক সহযোগিতা পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দেশটি।
গত সপ্তাহে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি এই চুক্তির একটি রূপরেখা তুলে ধরেন। ইউক্রেনে বিদ্যমান বিপুল খনিজ সম্পদের মানচিত্র প্রদর্শন করে তিনি বলেন, দেশের খনিজ সম্পদ দিয়ে দেওয়া নয়, এসব সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্রকে অংশীদারত্বের প্রস্তাব দিতে চান তিনি।
কিয়েভ যে খনিজগুলো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে চায়, তার মধ্যে রয়েছে টাইটেনিয়াম, ইউরেনিয়াম, লিথিয়ামের মতো বিরল ও মূল্যবান কিছু খনিজ পদার্থ।
ট্রাম্প যদিও ইউক্রেনকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেননি, তবে তিনি বলেছেন, কিয়েভের কাছ থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিরল খনিজ পদার্থ চায় যুক্তরাষ্ট্র এবং এরপরই ওয়াশিংটনের সহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
শুক্রবার বৈঠকের আগে খনিজ নিয়ে চুক্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ভ্যান্স সাংবাদিকদের স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
গত বুধবার কিয়েভ সফরকালে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি একটি খসড়া চুক্তি উপস্থাপন করেন দেশটির ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট।
সে সময় জেলেনস্কি বলেন, ‘মিউনিখে যাতে এ বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যায়, সে উদ্দেশ্য মাথায় রেখেই যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া চুক্তিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখবে ইউক্রেন।’
এরপর শুক্রবার মিউনিখে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবটি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্র তার উদ্বেগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, ‘তিনি (জেলেনস্কি) মনে করেন, তাকে এমন কিছুতে স্বাক্ষর করতে বলা হচ্ছে, যেটি পড়ার সুযোগও তার নেই।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে হারানো ভূখণ্ড ফিরে পাওয়ার আশা ছাড়তে হবে: হেগসেথ
অন্য দুটি সূত্র বেসেন্টের প্রস্তাবটিকে ‘একপাক্ষিক’ বলে চিহ্নিত করেছে, তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হয়নি তারা।
বৈঠক শেষে জেলেনস্কি নিজে মার্কিন প্রস্তাবকে ‘একপাক্ষিক’ মনে করেন কি না—জানতে চাইলে, ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর ব্রায়ান শ্যাটজ বলেন, ‘আমি মনে করি, তার (জেলেনস্কি) দৃষ্টিকোণ থেকে প্রস্তাবটি একতরফা মনে হওয়াই যুক্তিসংগত।’
ট্রাম্পের প্রস্তাবটিতে কিছু সংশোধন দরকার বলে মন্তব্য করলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
৩১৭ দিন আগে
চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে ড্রোন হামলা, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আঘাত হেনেছে একটি সশস্ত্র ড্রোন। এতে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সুরক্ষা কাঠামোতে গর্ত তৈরি হয়েছে। এছাড়া সেখানে আগুনও ধরে যায়।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য ইউক্রেন রাশিয়াকে দায়ী করলেও তা অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন।-খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
এ ঘটনায় নাজুক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে বিকিরণের মাত্রা বাড়েনি বলে নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইইএই) ও কিয়েভ। আইইএই জানায়, ড্রোনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাইরের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করলেও ভিতরের পারমাণবিক কনটেইনার শেলে আঘাত হানতে পারেনি। সংস্থাটি জানায়, চেরনোবিলে অবস্থানরত প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা একটি বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে সেখানে গেলে ড্রোনটি দেখতে পান। তবে এই ঘটনায় কারা দায়ী এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: শান্তির পথে ফিরতে চায় ইউক্রেন: জেলেনস্কি
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ফের বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। প্রসঙ্গত, চেরনোবিলে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ বেসামরিক পারমাণবিক বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছিল। ১৯৮৬ সালে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চারটি চুল্লির একটি বিস্ফোরিত হয়।
এতে চুল্লিটির দীর্ঘমেয়াদি তেজস্ক্রিয়তা নিয়ন্ত্রণে সুরক্ষা প্রাচীর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনায় ৩০ জন প্রাণ হারান এবং উত্তর গোলার্ধের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে।
চেরনোবিলে যেকোনো সময়ে ড্রোন কিংবা অন্য যুদ্ধাস্ত্র আঘাত হানার শঙ্কা করা হচ্ছিল। এর পেছরে অন্যতম কারণ ছিল, ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে বেশ কয়েকবার ইউরোপের সর্ববৃহৎ জাপোরিজঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে আঘাত হেনেছে ড্রোন।
এমন সময় এ ঘটনা ঘটল, যখন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ছাড়াও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে জড়ো হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন ও ইউরোপের নেতারা।
অন্যদিকে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হামলায় পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা। ইউরোপের সামরিক সাহায্য পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দেশটি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে হারানো ভূখণ্ড ফিরে পাওয়ার আশা ছাড়তে হবে: হেগসেথ
চেরনোবিলে হামলা নিয়ে এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ধ্বংস হওয়া ইউনিটের সুরক্ষা প্রাচীরে রাশিয়ার ড্রোন আঘাত হানে। এতে সেখানে আগুন ধরে যায়। পরে আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। তিনি বলেন, প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, সুরক্ষা প্রাচীরের উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঝুকিপূর্ণ এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে যেন নতুন করে দুর্ঘটনা না ঘটে, সেকারণে ২০১৬ সালে বাইরে সুরক্ষা প্রাচীর তৈরি করা হয়েছিল। সামাজিকমাধ্যমে ইউক্রেনের জরুরি বিভাগের পোস্ট করা একটি ছবিতে প্রাচীরের গায়ে একটি বড় গর্ত দেখা যায়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে এই হামলার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরবেন বলেও জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘কোনো ধরনের পরিণতির কথা না ভেবে আজকের দিনে এ ধরনের স্থাপনায় হামলা চালানো, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দখল করে নেওয়া এবং যুদ্ধ শুরু করার কাজটি একমাত্র রাশিয়াই করতে পারে।’
এই হামলা প্রমাণ করে রাশিয়া আলোচনার জন্য প্রস্তুত নয় অভিযোগ করে যুদ্ধ বন্ধের যেকোনো আলোচনার আগে তিনি তার দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত চান বলে জানান জেলেনস্কি।
তবে কিয়েভের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কোনো ধরনের পারমাণবিক অবকাঠামোতে বা শক্তিকেন্দ্রে হামলার প্রশ্নই উঠে না। আমাদের সেনারা এমন কোনো কাজ করেনি।’
পেসকভ বলেন, রাশিয়াকে দোষারোপ করতে এবং যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিনের আলোচনাকে ভেস্তে দিতেই এই হামলার ‘মিথ্যে নাটক’ সাজিয়েছে কিয়েভ।
এই ড্রোন হামলা ও এতে রাশিয়াকে অভিযুক্ত করার নিন্দা জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। তিনি এটিকে ইউক্রেনের একটি ‘বেপরোয়া’ পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
তিনি জানান, ‘যে সুরক্ষা প্রাচীরে হামলার অভিযোগ ইউক্রেন করছে, সেটি নির্মাণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে রাশিয়াও অংশীদার ছিল।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ট্রাম্প-পুতিন, বসবেন সৌদিতে
এর আগে, দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের তৎপরতা শুরু করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এ বিষয়ে ফোনালাপ করেন। ক্রেমলিন ও কিয়েভ থেকেও ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বর্তমানে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে জার্মানিতে অবস্থান করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। গতকাল সম্মেলন শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে।
৩১৭ দিন আগে
শান্তির পথে ফিরতে চায় ইউক্রেন: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তার দেশ শান্তির পথে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির মিউনিখে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে এক পোস্টে জেলেনস্কি লেখেন, ‘আমরা একটি বাস্তব এবং নিশ্চিত শান্তির দিকে যত দ্রুত সম্ভব এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।’
এসময় রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের অবসানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃঢ় সংকল্পের প্রতি নিজ দেশের কৃতজ্ঞতার উপর জোর দেন জেলেনস্কি। তিনি ট্রাম্পের এমন সংকল্প ইউক্রেনের জন্য ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তায় সহায়তা করতে পারবে বলেও আশা করেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে হারানো ভূখণ্ড ফিরে পাওয়ার আশা ছাড়তে হবে: হেগসেথ
জেলেনস্কি আরও উল্লেখ করেছেন, ইউক্রেন বৈঠক এবং সরাসরি পরিস্থিতির গভীর মূল্যায়নের জন্য ইউক্রেন ও রাশিয়া বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত কিথ কেলোগের সফরের অপেক্ষায় রয়েছে।
ইউক্রেনের ইন্টারফ্যাক্স সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার পর ভ্যান্স বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো টেকসই এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
শুক্রবার শুরু হওয়া ৬১তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে জেলেনস্কি এবং ভ্যান্স সাক্ষাৎ করেন।
৩১৭ দিন আগে
বলিভিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতে মৃত্যু বেড়ে ২৮
বলিভিয়ায় গত বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া তীব্র বৃষ্টিপাতের কারণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দেশটির উপবেসামরিক প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুয়ান কার্লোস কালভিমন্তেস এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বৃষ্টিতে দেশের ৯টি বিভাগের মধ্যে আটটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে ওই কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ৮৩টি পৌরসভার কথা বলছি এবং আমি নিশ্চিত যে, এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের অনেকেই নিজেরা দুর্যোগের সম্মুখীন থাকার কথা বলবেন।’
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে বন্যা ও ভূমিধসে নিহত ৭
এখন পর্যন্ত ২৭টি পৌরসভা নিজেদের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে ২২টি লা পাজের এলাকার। জলবায়ুর কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই বিভাগটি।
দেশটির সরকার জানিয়েছে, চুকুইসাকা (দক্ষিণ), লা পাজ (পশ্চিম), তারিজা (দক্ষিণ), কোচাবাম্বা (কেন্দ্র), সান্তা ক্রুজ (পূর্ব) এবং পোটোসি (দক্ষিণ-পশ্চিম) বিভাগে বন্যায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সরকারের তথ্যানুযায়ী এখনো চারজন নিখোঁজ রয়েছেন।নিখোঁজদের তিনজন লা পাজের উত্তরে এবং একজন চুকুইসাকা বিভাগের।
ন্যাশনাল মেটিওরোলজি অ্যান্ড হাইড্রোলজি সার্ভিস পূর্বাভাস দিয়েছে যে, আগামী সপ্তাহগুলোতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এমনকি বৃষ্টিপাত মার্চ ও এপ্রিল পর্যন্তও অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে বন্যায় নিহত ৩, নিখোঁজ ২
৩১৭ দিন আগে
ইউক্রেনকে হারানো ভূখণ্ড ফিরে পাওয়ার আশা ছাড়তে হবে: হেগসেথ
রাশিয়ার কাছে হারানো সব ভূখণ্ড ফিরে পাওয়ার আশা ত্যাগ করে শান্তি চুক্তি করতে ইউক্রেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। এ সময় ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্যপদের দাবিও বাস্তসসম্মত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ন্যাটো সফরে হেগসেথ এসব কথা বলেন। এর আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়া বাস্তবসম্মত হবে। ইউক্রেনের হারানো সব ভূখণ্ড ফিরে পাওয়াটাও অসম্ভব।’
ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন।’ ক্রেমলিন ও কিয়েভ থেকেও ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে হেগসেথ বলেন, ‘যুদ্ধ করতে হলে কিয়েভকে অবশ্যই মস্কোর পরিকল্পনা নিয়েও ভাবতে হবে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ট্রাম্প-পুতিন, বসবেন সৌদিতে
তিনি জানান, ‘মস্কো দাবি করেছে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদান থেকে বিরত থাকতে হবে। তাছাড়াও ২০২২ সালে ইউক্রেনের যে ৪টি অঞ্চল নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করেছে, রাশিয়াকে সেখান থেকে তাদের সেনাপ্রত্যাহার করে নিতে হবে। ইউক্রেন এই শর্ত মানলে তারা ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করবে।’
হেগসেথ আরও জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও সামরিক সাহায্য নিশ্চিত করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এছাড়াও সেখানে একটি শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়ন করার কথাও বলেছে ট্রাম্প।’
তবে ইউক্রেনে নিযুক্ত ওই বাহিনীতে থাকবে না যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সেনা। এছাড়াও রাশিয়া আক্রমণের শিকার হলে ন্যাটোর আর্টিকেল ৫ এর আওতায় ওই শান্তিরক্ষী বাহিনী কোনো সাহায্য পাবে না বলে জানিয়েছেন এই রিপাবলিকান নেতা। উল্লেখ্য, ন্যাটোর আর্টিকেল-৫ অনুসারে, কোনো সদস্যরাষ্ট্র আক্রান্ত হলে সম্মিলিতভাবে অন্যরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
এর আগে, ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়ারমার্ক জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও পুনরায় রাশিয়ার আগ্রাসনের স্বীকার হওয়ার আশঙ্কা করছে কিয়েভ।
এ কারণে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কাছ থেকে শক্তিশালী সামরিক সহায়তা আশা করছে তারা। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে ন্যাটোর সদস্যপদ কিংবা দেশটিতে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়ন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার হয়ে যেতে পারে ইউক্রেন: ট্রাম্প
রাশিয়া ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে আলোচনা করতে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্স শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ট্রাম্প ও হেগসেথের বক্তব্যের পর ইউক্রেনের দাবি কতটুকু গুরুত্ব পাবে, মার্কিন প্রশাসনের কাছে তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করে রাশিয়া। মস্কোর ভাষায় যা ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’। এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের উপদ্বীপ ক্রিমিয়া দখল করে নেয় রাশিয়া। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূমি দখল করে নিয়েছে রাশিয়া।
৩১৯ দিন আগে
সাগরতলে মিলল সবচেয়ে গতিসম্পন্ন ভুতুড়ে কণা
ভূমধ্যসাগরে এ পর্যন্ত সবচেয়ে গতিসম্পন্ন ভুতুড়ে কণাটির খোঁজ মিলেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে তারা বলেন, এর আগে যে অল্প কয়েক শ কণা আবিস্কার করা হয়েছে, সেগুলোর চেয়েও প্রায় ৩০ গুণ বেশি সক্রিয় এটি।
সাগরের গভীরে একটি নির্মাণাধীন নিউট্রিনো ডিটেক্টর দিয়ে এটি শনাক্ত করা হয়েছে। নিউট্রিনো বলতে ক্ষুদ্র পারমাণবিক কণাকে বোঝায়, যা আলোর কণার চেয়েও দ্রুতগতির। ধারণা করা হয়, এই ক্ষুদ্র কণা অশূন্য ভরের কণা।আরও পড়ুন: চাঁদের দূরবর্তী অংশের অজানা তথ্য দিলেন বিজ্ঞানীরা
পর্দাথের মধ্য দিয়ে এই কণা প্রায় অবিকৃতভাবে চলাচল করতে পারে। যে কারণে এটিকে ভুতুড়ে কণা বলা হয়। নিউট্রিনো অর্থ হচ্ছে ‘ক্ষুদ্র নিরপেক্ষ কণা’। গ্রীক বর্ণ নিউ (ν) দিয়ে এটিকে প্রকাশ করা হয়।
মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়েছে, ছায়াপথের বাইরে থেকে এই কণা এসেছে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও এই ভুতুড়ে কণার সঠিক উৎস রহস্যেই থেকে যাচ্ছে।
সূর্যের মতো তারকা থেকে এসব নিউট্রিনো আসে। কোটি কোটি কণা প্রতিটি মুহূর্তে মানব-শরীরের ভেতর দিয়ে চলাচল করছে। এগুলো এতোই মিহি যে শনাক্ত করা ব্যাপক কঠিন। সাধারণত দ্রুত গতিতে ছোটাছুটি করা নিউট্রিনো শনাক্ত করতে পারেন না বিজ্ঞানীরা।আরও পড়ুন: পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেলেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিজ্ঞানী জিওফ্রে হিন্টন ও জন হপফিল্ড
এই ক্ষুদে কণার সঙ্গে যখন আরেকটি বস্তুকণার সংঘর্ষ হয়, তখন কী ঘটে, তা গবেষণা করে দেখেন বিজ্ঞানীরা। বছর দুয়েক আগে এমন ঘটনায় মিউয়ন নামের একটি মৌলিক কণিকা তৈরি হয়েছিল। যেটি বায়ুমণ্ডলে ক্রিয়াশীল মহাজাগতিক রশ্মির মাধ্যমে পৃথিবী পৃষ্ঠ ভেদ করে বহু গভীরে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে।
নেদারল্যান্ডসের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর সাব-এটোমিক ফিজিক্স নিকহেফের বিজ্ঞানী আরার্ট হেইজবোয়ের বলেন, ‘মহাবিশ্বের সর্বোচ্চ-জ্বালানি প্রক্রিয়াগুলো বোঝার চেষ্টা করছি আমরা।’
সাধারণত ভূ-উপরিভাগের বিকিরণ থেকে সুরক্ষায় মাটির গভীরে, বরফের নিচে ও পানির নিচে রাখা হয় নিউট্রিনো ডিটেক্টর।
৩১৯ দিন আগে
গাজায় ‘জাহান্নামের সব দরজা’ খুলে দেওয়ার হুমকি ইসরায়েলের
দুদিনের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া না হলে গাজাবাসীর জন্য ‘জাহান্নামের সব দরজা’ খুলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎয। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে তিনি এমন হুমকি দিয়েছেন।তার এই হুমকিকে পরোয়া করছে না বলেও পাল্টা জবাব দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এতে দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও চুক্তিটি টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করছে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় আগামী শনিবারে (১৫ ফেব্রুয়ারি) তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করে দেওয়ার কথা রয়েছে।
তবে স্থানীয় সময় সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত আর কোনো ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানায় হামাসের সামরিক শাখা কাশেম ব্রিগেডের এক মুখপাত্র।
হামাসের এই সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির পুরোপুরি লঙ্ঘন’ বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
হামাসকে হুমকি দিয়ে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “হামাস যদি জিম্মি মুক্তির সময়সীমা মেনে না চলে, ‘তীব্র লড়াই’ শুরু করবে ইসরায়েল।”
আরও পড়ুন: চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ: জিম্মিদের ফেরত দিচ্ছে না হামাস
নেতানিয়াহু আরও বলেন, তিনি গাজার ভেতরে ও আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনীকে জড়ো হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পরই গাজা সীমান্তবর্তী ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতিরিক্ত সেনা পাঠানো ও রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
এ ছাড়াও হামাসের সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘শনিবারের মধ্যে বন্দিবিনিময় সম্পন্ন না করা হলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল হওয়া উচিত।’
তবে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর হুমকিকে উড়িয়ে দিয়েছে হামাস। গতকাল মঙ্গলবার হামাসের এক নেতা সব ধরনের হুমকি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘কেবল যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চললেই গাজা থেকে জিম্মিদের ফেরত নিতে পারবে ইসরায়েল।’
এ পরিস্থিতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো চুক্তি বজায় রাখতে তৎপরতা শুরু করেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য হামাসের একটি প্রতিনিধি দল মিসরে অবস্থান করছে।
এই আলোচনায় সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিসরীয় কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েল ও গাজা একটি সমঝোতায় আসতে চলেছে। গাজায় আরও বেশি তাঁবু, আশ্রয়কেন্দ্র ও ভারী সরঞ্জাম পাঠানোতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল।
হামাসের কর্মকর্তা মাহমুদ মারদাওই বলেন, শনিবারে ৩ ইসরায়েলি বন্দি মুক্তির ক্ষেত্রে ‘ইতিবাচক ইঙ্গিত’ রয়েছে। তবে চুক্তি মেনে চলার ব্যাপারে ইসরায়েলের প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক বার্তা তারা পাননি।
চুক্তি বজায় রাখার এই চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলের কর্মকর্তারা।
৩১৯ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের আকাশছোঁয়া দাম
যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে ডিমের দাম। গড় হিসেবে ডজন প্রতি ডিমের দাম দাঁড়িয়েছে ৬০০ টাকার বেশি (৪.৯৫ ডলার), কোথাও কোথাও এটা এক হাজার ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। দেশটিতে চলমান বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের কারণে এভাবে আকাশছুঁয়েছে ডিমের দাম।
মার্কিন শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর জানুয়ারি মাসের মাসিক ভোক্তা মূল্য সূচকে ডিমের এই দাম প্রকাশ করা হয়েছে।-খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
ডিমের বাজারের এই আগুনের আঁচ বোঝার জন্য যদিও সরকারি পরিসংখ্যানের প্রয়োজন নেই। কিছু কিছু এলাকায় ডিমের ডজন ছাড়িয়েছে ১০ ডলার, বাংলাদেশি মূল্যে যা ১২০০ টাকারও বেশি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের আগস্টে রেকর্ড হওয়া সর্বনিম্ন মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বেড়েছে বর্তমান দাম। এর আগে দাম বেড়ে গড় প্রতি ডজন দাঁড়িয়েছিল ৪ দশমিক ৮২ ডলারে । চলতি বছরে সেই মূল্যকেও ছাড়িয়ে গেছে।
ডিমের দামের এই বৃদ্ধি ২০১৫ সালের শেষ বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের পর থেকে সবচেয়ে বেশি। এই মূল্য বৃদ্ধির কারণে জানুয়ারি মাসে মার্কিন নাগরিকদের খাদ্যব্যয় দুই-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাকের পেছন থেকে ১ লাখ ডিম চুরি
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন, শিগগির না-ও কমতে পারে ডিমের দাম। বরং সামনে ইস্টার সানডের ছুটিতে আরও লাগামছাড়া হতে পারে এই দাম। দেশটির কৃষি বিভাগ গত মাসেই পূর্বাভাস দিয়েছিল, চলতি বছরে ২০ শতাংশ বাড়তে পারে ডিমের দাম।
সম্প্রতি দেশটিতে কয়েকটি অঞ্চলে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়েছে। এতে খামারিদের উৎপাদন মূল্য বেড়েছে। আগের চেয়ে উন্নতমানের খাবারের পাশাপাশি প্রয়োজন হয় ঔষধ, এর প্রভাব পড়ে ডিমের দামে।
এ ছাড়াও খামারিরা সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির ১০টি রাজ্যে চালু হওয়া খাঁচা-মুক্ত ফার্মে মুরগির ডিম উৎপাদন ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন এই দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে।তাদের ধারণা এতে ওই অঞ্চল গুলোতে ডিমের সরবরাহ কমে গিয়েছে। ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে দাম।
যুক্তরাষ্ট্রের খামারিদের আর্থিক সাহায্য ও ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কোব্যাংকের এক বিশ্লেষক ব্রায়ান আর্নেস্ট বলেছেন, ডিমের দাম বেশি থাকায় যদি ব্যবসায়ীরা মজুত শুরু করে তাহলে সংকট আরও বাড়বে।
তিনি বলেন, ‘ডিমের অতিরিক্ত মূল্য ক্রেতাদের ডিম কিনতে নিরুৎসাহিত করতে পারে। তার ধারণা, এতে ডিমের চাহিদা কিছুটা কমলেও দামের ওপর তেমন প্রভাব না-ও পড়তে পারে। ডিমের দাম কমে বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে বলে মত দেন তিনি।
৩১৯ দিন আগে
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ট্রাম্প-পুতিন, বসবেন সৌদিতে
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে একমত হওয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে এই বৈঠক হতে পারে বলেও তিনি আভাস দিয়েছেন।
এরমধ্য দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে গেল তিন বছর ধরে চলা মার্কিন নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছেন তিনি। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেন, ‘এই যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা করতে পুতিন ও আমি একমত।’-খবর এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
একঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। এরপর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কের সঙ্গেও কথা হবে বলে জানান ট্রাম্প। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় ইউক্রেনও সমানভাবে অংশীদার হবে কিনা; সে বিষয়ে তার কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা শান্তি অর্জনের পথে রয়েছি। আমি মনে করি, প্রেসিডেন্ট পুতিন ও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও শান্তি চান। আমিও শান্তি চাই। আমি কেবল দেখতে চাই, লোকজনের প্রাণহানি হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপীয়দের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক চলতি সপ্তাহে
পুতিনের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিনের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে জনগণ সত্যিকার অর্থে জানেন না। কিন্তু আমি মনে করি, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, তিনিও এই যুদ্ধের অবসান দেখতে চান। কাজেই সেটা ভালো এবং আমরা এই যুদ্ধ বন্ধের দিকে যাচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব।’
এ সময়ে শিগগিরই পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প, যা সৌদি আরবে হতে পারে।
ট্রাম্প-পুতিন আলোচনার মাধ্যমে এই আভাসই দেওয়া হচ্ছে যে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ওয়াশিংটন ও মস্কো একটি চুক্তি পৌঁছাতে একমত হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে এই যুদ্ধ নিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কিয়েভও যে পরিপূর্ণ একটি অংশীদার হবে বলে মনে করতো জো বাইডেন প্রশাসন, সেখান থেকে সরে এসেছে ওয়াশিংটন।
ইউক্রেনও কী এই যুদ্ধের সমান অংশীদার হতে যাচ্ছে, জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘খুবই চমৎকার প্রশ্ন, আমি মনে করি, তারাও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চান।’
এছাড়া ইউক্রেন যে পশ্চিমাদের সঙ্গে আরও ঘেঁষতে চাচ্ছে, সেই প্রত্যাশায় আরেকটি আঘাত করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেট হেগসেথ। ব্রাসেলসে ন্যাটোর প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের জন্য ন্যাটোর সদস্য হওয়া বাস্তবসম্মত না।’
পরবর্তীতে ট্রাম্পও একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, হেগসেথ যে কথা বলেছেন, সেটিই সত্য বলে আমি মনে করি।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অঙ্গীকার করেন, ইউক্রেনের জন্য এই পশ্চিমা সামরিক জোটের সদস্য হওয়া অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: দালালের খপ্পরে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে জড়াচ্ছেন বাংলাদেশিরা: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
৩১৯ দিন আগে
রাশিয়ার হয়ে যেতে পারে ইউক্রেন: ট্রাম্প
ইউক্রেন ‘কোনো এক সময় রাশিয়ার হয়ে যেতে পারে’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান তৎপরতার মাঝেই এমন বক্তব্য দিলেন ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রিপাবলিকান-সমর্থিত ফক্স নিউজে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘তারা একটি চুক্তি করতে পারে, আবার না-ও করতে পারে। কোনো এক সময় তারা রাশিয়ান হয়ে যেতে পারেন, আবার না-ও পারেন।’
এ সময় তিনি ইউক্রেনকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিনিময়ে মুনাফা অর্জনের ওপর জোর দেন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সেখানে যে পরিমান অর্থ খরচ করেছি, সেই সমমূল্যের বিরল খনিজসম্পদ চাই।’ তিনি আশা করেন ইউক্রেনও এই চুক্তিতে সম্মত হবেন।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়ারমার্ক জানিয়েছেন, ‘তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।’ বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেসকে (এপি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা পেতে চুক্তির আলোচনায় প্রস্তুত কিয়েভ।
তবে আন্দ্রে জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও পুনরায় রাশিয়ার আগ্রাসনের স্বীকার হওয়ার আশঙ্কা করছে কিয়েভ। এ কারণে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কাছ থেকে শক্তিশালী সামরিক সহায়তা আশা করছে তারা। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে ন্যাটোর সদস্যপদ কিংবা দেশটিতে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়ন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপীয়দের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক চলতি সপ্তাহে
রাশিয়া ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে আলোচনা করতে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্স শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নেয় ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গত রবিবার নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তবে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এই ফোনালাপের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
এ ছাড়াও চলতি সপ্তাহে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ।
৩২০ দিন আগে