যুক্তরাষ্ট্রে সচরাচর হামের প্রাদুর্ভাব দেখা না দিলেও চলতি বছরে উল্টো চিত্র দেখছে দেশটি। টিকার সাফল্যের কারণে ২০০০ সালে হাম নির্মূল হওয়ার ঘোষণা দিলেও আবারও যুক্তরাষ্ট্রে জেঁকে বসেছে হাম। সম্প্রতি টেক্সাস ও নিউ মেক্সিকোসহ বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রামক এই ভাইরাসটি।
এমনকি গত সপ্তাহে ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো হামে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দেশটিতে। এতে উদ্বেগ বেড়েছে দেশটির সাধারণ মানুষের মধ্যে।
গত সপ্তাহে মার্কিন রোগ নিযন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) ২০১৫ সালে পরে প্রথম হামে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। টেক্সাসে হামের আক্রান্ত হয়ে শিশু মারা যাওয়ার পর সেখানের নিজেদের টিম পাঠানোর ঘোষণা দেয় সিডিসি।
গত মঙ্গলবার সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সংস্থাটি জানায়, হামের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে টেক্সাসে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
আরও পড়ুন: নেভাডায় বার্ড ফ্লুর নতুন ধরন শনাক্ত: সিডিসি
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৭ মার্চ) টেক্সাসের স্বাস্থ্য কর্মকতারা জানিয়েছেন, পশ্চিম টেক্সাসে আক্রান্তের সংখ্যা এরইমধ্যে ২০০-তে পৌঁছেছে। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে প্রতিবেশি নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যেও। সেখানে ৩০ জনের শরীরে হাম শনাক্ত হয়েছে বলে স্বাথ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট হেলথ ডিপার্টমেন্টের তথ্য মতে, টেক্সাসের পাশাপাশি নিউ মেক্সিকোতেও হামের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। তবে এই দুটি রাজ্যের সংক্রমণের মধ্যে সরাসরি কোনো সংযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে নিউ মেক্সিকোর স্থাস্থ্য কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) নিউ মেক্সিকোর স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা টিকা নেয়নি এমন একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি হামে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন। ওই ব্যক্তি কোনো চিকিৎসা সেবা নেননি, মৃত্যুর পরে তার সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়েছে।
যদিও নিউ মেক্সিকোর মেডিকেল পর্যবেক্ষক মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেননি। তবে ওই ব্যক্তি হাম আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন বলে শুক্রবার জানিয়েছে অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ।
এই দুই অঙ্গরাজ্যের পাশাপাশি হাম ছড়াতে শুরু করেছে আলাস্কা, ক্যালিফোর্নিয়া, জর্জিয়া, কেন্টাকি, নিউ জার্সি, নিউ ইর্য়ক, পেনসালভ্যানিয়া ও রোড আইল্যান্ডেও ধরা পড়েছে হামের সংক্রমণ।
হাম ভাইরাসজনিত একটি সংক্রামক রোগ। মূলত বাতাসের মাধ্যমে এটি ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির নিশ্বাস, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা সংক্রমিত হয়ে থাকেন। সিডিসির তথ্যমতে, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনেরই আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা থাকে।