একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তারা দাবি করতেন যে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগ। তাদের মতে, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ঠিক পরেই বিপিএলের অবস্থান ছিল। কিন্তু এখন তারা বলছেন, বিপিএলকে দেশের অন্যতম সেরা লিগ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছেন তারা।
বিপিএলের পরবর্তী আসরটি ২০২৩ সালের জানুয়ারির শুরু থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিসিবি ইতোমধ্যেই সাতটি অংশগ্রহণকারী ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকদের নামের খসড়া তৈরি করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে সম্ভাব্য মালিকরা শত মিলিয়ন টাকা ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়ার পর শিগগিরই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো চূড়ান্ত করা হবে।
বিপিএলের মতো একই সময়ে কমপক্ষে আরও দু’টি লিগ খেলার কথা রয়েছে। ফলে বিপিএলের সেরা বিদেশি খেলোয়াড়দের দৃষ্টি আকর্ষণ নাও করতে পারে। তাদের অনেকেই ইতোমধ্যে অন্য দু’টি লিগের দলের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে- একটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং অন্যটি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: বিপিএল ২০২২ ফাইনাল: টস জিতে ব্যাটিংয়ে কুমিল্লা
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক সোমবার বলেন, ‘বিপিএল একটি ভাল টি-টোয়েন্টি ইভেন্ট ছিল, যখন এর মতো একাধিক লিগ ছিল না।’
‘এখন অনেক লিগ আছে – সিপিএল হচ্ছে, পিএসএল এখানে, সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি লিগ আয়োজন করতে যাচ্ছে এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতেও একই দৃশ্য। এখন, অন্যান্য (আন্তর্জাতিক) লিগের সঙ্গে (বিপিএল) তুলনা করা কঠিন। আমরা এটাকে অন্যতম সেরা ঘরোয়া লিগ বানাতে চাই।’
২০১২ সালে প্রথমবারের মতো বিপিএল খেলা হয়েছিল। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) চার বছর পর পাকিস্তান সুপার লিগ(পিএসএল) শুরু করে। যখন বিপিএল এখনও তার ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে, তখন পিএসএল পিসিবির জন্য প্রচুর অর্থ আয় করছে।
ইসমাইল আরও বলেন, ‘বিপিএলের মতো অনুষ্ঠান আয়োজন করতে অনেক অর্থ খরচ হয়। ‘এটিকে আরও বড় করতে আমাদের প্রচুর অর্থের যোগানে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা বিক্রি করতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমরা এটাকে হোম-এন্ড অ্যাওয়ে ইভেন্ট হিসেবেও আয়োজন করতে পারি না। এর জন্য আমাদের পর্যাপ্ত জায়গা নেই। আমরা যা দেখতে চাই তা হল এটিকে আমাদের সেরা ঘরোয়া ইভেন্টগুলোর একটিতে পরিণত করা।’
যেহেতু বিপিএল এই মৌসুমে বিদেশি খেলোয়াড়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হতে পারে, তাই শর্ত শিথিল করতে যাচ্ছে বিসিবি।
ইসমাইল বলেন, একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের যেকোনো সময়ে একজন বিদেশি খেলোয়াড়কে চুক্তিবদ্ধ করতে পারবে এবং তারা যেকোনো সময়ের জন্য বিদেশি খেলোয়াড়কে চুক্তিবদ্ধ করতে পারবে।
এর মানে, যদি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি মাত্র দুই ম্যাচের জন্য একজন খেলোয়াড় পায়, তাহলে তারা সেই খেলোয়াড়কে চুক্তিবদ্ধ করতে পারবে। একই সঙ্গে ইসমাইল বলেন, একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি একটি ম্যাচে চারজনের পরিবর্তে দুইজন বিদেশি খেলোয়াড় খেলতে পারে।
ইতোমধ্যেই খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করেছে বিসিবি। বিসিবি জানায়, ‘এ’ ক্যাটাগরির স্থানীয় খেলোয়াড়রা পাবে ৮০ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন ক্যাটাগরির খেলোয়াড়রা অর্ধ মিলিয়ন টাকা পাবে।
প্রতিটি দল সরাসরি পরিকল্পনার বাইরে একজন স্থানীয় খেলোয়াড়কে চুক্তিবদ্ধ করার অনুমতি দেয়, তবে বিদেশি খেলোয়াড়কে চুক্তিবদ্ধ করার কোন সীমা নেই। পরিকল্পনার বাইরে কোনো বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে নিতে কত টাকা দেবে তা ঠিক করবে না বিসিবি।
আরও পড়ুন: সাইফকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো বিপিএল শিরোপা জিতলো বসুন্ধরা