এক যুগ আগে শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করেছিলেন ফুটবলের দুই বরপুত্র লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ক্যারিয়ারের গোধুলি লগ্নে তা থেকে অনেকটাই বের হয়ে গেছেন তারা; দুজনের পথ গেছে দুদিকে বেঁকে। তারপরও জাদুকরি ফুটবল দক্ষতায় যেসব কাজ তারা প্রতিনিয়ত করে চলেছেন, তাতে সেই পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ফের টেনে আনতে বাধ্য হন ভক্ত-সমর্থকরা।
শনিবার সৌদি প্রো লিগের ম্যাচে ঘরের মাঠে আল ওয়েহদাকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয় আল নাসর। এই ম্যাচে আরও একটি হ্যাটট্রিক নিজের ঝুলিতে পুরেছেন পর্তুগিজ সুপারস্টার।
এ নিয়ে ৭ ম্যাচে তৃতীয়বার হ্যাটট্রিক করলেন রোনালদো। আল নাসরের হয়ে সব মিলিয়ে তার হ্যাটট্রিক হলো ৬টি। গোটা ক্যারিয়ারে ৬৬টি।
অসামান্য পারফর্ম্যান্স দিয়ে যখন মরুর সন্ধ্যা আলোকিত করছেন রোনালদো, তখন অন্যপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে মায়াবী ফুটবলের প্রদর্শনী চালাচ্ছেন ফুটবলের আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রো লিওনেল মেসি।
মায়াবীই বটে। টানা ছয় ম্যাচে অপরাজিত থাকা নিউ ইয়র্ক রেড বুলসকে গোলের বন্যায় ভাসিয়ে দিল ইন্টার মায়ামি। একটি মাত্র গোল করেছেন মেসি। কিন্তু তার চেয়েও বেশি কিছু তার পারফর্ম্যান্স।
রেড বুলসকে ৬-২ গোলে হারানোর ম্যাচে পাঁচটি গোলই তৈরি করে দিয়েছেন মেসি। নিজে করেছেন বাকি গোলটি। বন্ধু সুয়ারেজকে দিয়ে করিয়েছেন হ্যাটট্রিক।
এক গোলে পিছিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করা মায়ামিকে যখন আরও একটি হার চোখ রাঙাচ্ছিল, ঠিক তখনই জ্বলে ওঠেন এ ক্ষুদে জাদুকর। দ্বিতীয়ার্ধে একের পর এক জাদুর ছোঁয়ায় দর্শকদের মোহাচ্ছন্ন করে রাখেন তিনি। অসাধারণ সব ড্রিবলিং, ওয়ান টু ওয়ান আর বক্সে মাপা পাস বাড়িয়ে যখন সতীর্থদের দিয়ে একেকটি অনিবার্য গোল করাচ্ছিলেন, তখন মন্ত্রমুগ্ধের মতো হাততালি দিচ্ছিল প্রতিপক্ষের দর্শকরাও।
এক ম্যাচে পাঁচ অ্যাসিস্টের ঘটনা মেজর সকার লিগে এটিই প্রথম। আর সেটা যেন ফুটবলের কাছ থেকে সবকিছু পাওয়ার পর মেসির কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি ভঙ্গি মাত্র।
এ নিয়ে চলতি মৌসুমে ১১ ম্যাচে ১২ গোলের পাশাপাশি ১১টি অ্যাসিস্ট, অর্থাৎ ১১ ম্যাচে ২৩ গোলে অবদান রাখলেন মেসি।
অন্যদিকে, চলতি মৌসুমে ৫২ ম্যাচ খেলে ৫২ গোল ও ১৪টি অ্যাসিস্ট, অর্থাৎ ৬৬টি গোলে সরাসরি অবদান রোনালদোর।
ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসেও প্রদীপ্ত প্রদীপের মতো উজ্জ্বল অথচ মায়াবী আলো ছড়িয়ে চলেছেন ফুটবল ভক্তদের মাঝে আসা ঈশ্বরের দুই আশীর্বাদ।