শেষ রাতে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের পর রাজধানী ঢাকায় আজ সকালেও ঝরেছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। এতে রাজধানী শহররের বায়ুদুষণের মাত্রা গতকালের তুলনায় আরও অনেকটা কমেছে। এমনকি বাতাসের মান নির্ণয়কারী ওয়েবসাইট আইকিউ এয়ারের সূচক অনুযায়ী, ঢাকার বাতাস আজ ‘ভালো’ হয়ে ওঠার খুবই কাছাকাছি চলে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের মান ‘ভালো’ থেকে মাত্র ৫ দূরে ছিল। এ সময় শহরটির একিউআই স্কোর ছিল ৫৫, যেখানে এই স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়।
গত দুদিন ধরেই ঢাকার বাতাসে বাতাসের মানে উন্নতি দেখা গিয়েছে। বৃষ্টি না থাকলেও ঢাকার বাতাস ‘মাঝারি’ পর্যায়ে ছিল। আজও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। ৫৫ স্কোর নিয়ে ‘মাঝারি’ শ্রেণিভুক্ত হলেও দূষণের মাত্রা অনেকটা কমেছে। গতকাল একই সময়ে ৬১ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার ৪০তম স্থানে ছিল ঢাকা।
ঢাকার বাতাসের এই উন্নতির কারণে যুক্তরাজ্যের লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের মতো শহরের থেকেও শহরটির অবস্থান ভালো। দূষিত শহরের তালিকায় এই শহর দুটিরও নিচে ৫৮তম স্থানে রয়েছে ঢাকা, যেখানে ৬০ একিউআই স্কোর নিয়ে ওয়াশিংটনে রয়েছে ৪৭ তম স্থানে এবং ৬৬ স্কোর নিয়ে ৪০তম স্থানে রয়েছে লন্ডন।
এদিকে, আজ তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে উগান্ডার কাম্পালা, একিউআই স্কোর ১৮৫। এরপর ১৮৩ ও ১৭৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণে শীর্ষ দশে আজ দক্ষিণ এশিয়ার কোনো শহর নেই
এই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কণা দূষণের এই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো— স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।