তিনি বলেন, চাষের নতুন ‘সমলয়’ পদ্ধতিতে চাষ করলে যন্ত্রের ব্যবহার সহজতর হবে। এতে কৃষকের সময় ও শ্রম খরচ কমবে এবং তারা লাভবান হবেন।
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে কেন্দুয়া গ্রামে ‘সমলয়’ পদ্ধতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ৫০ একর জমিতে/ব্লকে ধানের চারা রোপণ উদ্বোধন ও কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে প্রতি একর জমিতে এক ঘণ্টায় ধানের চারা রোপণ করা যায়। এর ফলে একর প্রতি কৃষকের খরচ কমবে সাড়ে চার হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: খামারিদের দেয়া সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: কৃষিমন্ত্রী
শেখ হাসিনা কৃষিকে দিয়েছেন নতুন দিগন্ত: কৃষিমন্ত্রী
ফুল চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে কৃষিকে আধুনিক ও লাভজনক করতে নিরলস কাজ করছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নেয়া হয়েছে তিন হাজার ২০ কোটি টাকার প্রকল্প। পাশাপাশি কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ত্বরান্বিত করতে দক্ষ জনবল তৈরিতে ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে কৃষি প্রকৌশলীর ২৮৪টি পদ তৈরি করা হয়েছে।
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু আমাদের দেশে ক্ষেতগুলো ছোট ছোট। তাছাড়া, কৃষকেরা বিভিন্ন জমিতে বিভিন্ন সময়ে চারা রোপন করে। ফলে কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার সঠিকভাবে করা যায় না।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহর সভাপতিত্বে কৃষক সমাবেশে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, বিএডিসির চেয়ারম্যান মো. সায়েদুল ইসলাম, ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর প্রমুখ বক্তব্য দেন।
‘সমলয়’ চাষের এক নতুন পদ্ধতি। সবাই মিলে একটি ব্লকে/মাঠে একসাথে একই জাতের ধান একই সময়ে যন্ত্রের মাধ্যমে রোপণ করা হয়। বীজতলা থেকে কর্তন, সকল প্রক্রিয়া যন্ত্রের সাহায্যে একই সময়ে করা হয়। এ পদ্ধতিতে ধান আবাদ করতে হলে চারা তৈরি করতে হয় ট্রেতে। ট্রেতে চারা উৎপাদনে জমির অপচয় কম হয়। রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে চারা একই গভীরতায় সমানভাবে লাগানো যায়। কৃষক তার ফসল একত্রে মাঠ থেকে ঘরে তুলতে পারে। কারণ, একসাথে রোপণ করায় সব ধান পাকবেও একই সময়ে। তখন ধান কাটার মেশিন দিয়ে একই সাথে সব ধান কাটা ও মাড়াই করা যাবে।
আরও পড়ুন: কৃষির উন্নতি না হলে মানুষের আয় বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর জীবনের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা: কৃষিমন্ত্রী
এসব কারণে সমলয় পদ্ধতিতে যন্ত্রের ব্যবহার সহজতর ও বৃদ্ধি হবে। ফলে, ধান চাষে সময়, শ্রম ও খরচ কম লাগবে তেমনি উৎপাদনও হবে বেশি। এতে লাভবান হবেন কৃষকরা।
কেন্দুয়া গ্রামের হাইব্রিড ধানের সমলয় চাষাবাদ প্রদর্শনী সর্বমোট ৫০ একর জমিতে স্থাপিত হয়েছে যেখানে ৯০ জন উদ্যোগী কৃষক এই কার্যক্রমের সাথে যুক্ত আছে। উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড হিরা-১ জাতের ধান এখানে রোপন করা হচ্ছে। গত ২০ জানুয়ারি একযোগে ৪ হাজার ৫০০ ট্রেতে বীজতলায় ধানের বীজ বপন করা হয়েছিল। সেটার অংশ হিসাবে আজ (শনিবার) একযোগে যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা জমিতে রোপণ করা হলো।
চলতি অর্থবছরে সারাদেশের ৬১টি জেলায় এই মৌসুমে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় সমলয় চাষাবাদ একযোগে চলমান আছে। প্রণোদনার আওতায় কৃষকদেরকে হাইব্রিড জাতের বোরো ধানবীজ, সার, চারা রোপণসহ অন্যান্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তার অংশ হিসাবে ধনবাড়ী উপজেলায় এই ব্লক প্রদর্শনী স্থাপিত হয়েছে।