মঙ্গলবার রিট আবেদনটি শুনানির জন্য পৃথক তিনটি বেঞ্চে উত্থাপন করলে রিট আবেদনটি শুনানি না করে ফেরত দেন।
রিটকারী পক্ষের আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘রিট আবেদনটি প্রথমে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানির জন্য উত্থাপন করি। শুনানি না করে এই বেঞ্চ অন্য কোনো বেঞ্চে যেতে পরামর্শ দেন। তখন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে গেলে তারও একই কথা বলেন। পরে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আবেদনটি উত্থাপন করলে অপেক্ষা করতে বলেন।’
তিনি বলেন, ‘আদালত বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিষয়টি দেখছেন, তাই অপেক্ষা করেন। আদালত আপাতত রিট আবেদনটি শুনতে চাননি।’
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, ‘আদালত বলেছেন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন অপরাধীরা যেই হোক, যে পরিচয়ই থাকুক, সে অপরাধী। তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া এ মামলার এজাহারভুক্ত প্রায় সব আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। গ্রেপ্তারদের ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যাদের নাম আসছে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তদন্ত সঠিকভাবেই এগোচ্ছে। তাই আদালত এ মুহূর্তে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়েছেন।’
আদালত আরও বলেছেন, ‘আইনগত কোনো ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনে উপযুক্ত আদেশ দেয়া হবে। আদালত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং রিটকারীকেও পর্যবেক্ষণ করতে বলেছে।’
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর আইনজীবী শাহীন বাবু বাদী হয়ে এই রিট করেন। রিটে আবরারের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে, এ হত্যার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং আবরারের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়। রিটে বুয়েট কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা সচিব, ইউজিসি, ডিএমপি কমিশনার, চকবাজার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
গত ৬ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র আবরারকে তার আবাসিক হলে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটির তদন্ত করতে ডিবিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
ঘটনার পর থেকেই আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের বুয়েট থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।