রবিবার রাজধানীর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে এসে সাংবাদিকদের সাখে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সোমবার সকালে ইউএনওর ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ শেষ হবে। এখনো ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা যায়নি। রোগী ভালো ব্যবস্থাপনায় আছে এবং সবকিছু ভালোভাবে চলছে। রোগীর চিকিৎসায় যা যা দরকার সব দেয়া হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন রোগী যে পর্যায়ে আছে তাতে বিদেশে প্রেরণের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। ভবিষ্যতে যদি প্রয়োজন হয় তখন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
‘ইউএনও ওয়াহিদা আমার সাথে কথা বলেছেন। আমার মনে হয়েছে উনি এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছেন। আটজন চিকিৎসক সফলতার সাথে তার অপারেশন করেছে। ইউএনও ওয়াহিদার ডান দিকের অংশটা এখনো অবশ আছে। তবে চিকিৎসকরা বলেছেন ফিজিক্যাল থেরাপি এবং সময়ের সাথে সাথে এটা ভালো হয়ে যাবে,’ বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এদিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আসাদুল ইসলামকে রবিবার বিকালে আদালতে তোলা হবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওসি ইমাম জাফর বলেন, ‘রবিবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে আসাদুলকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। রবিবার বিকাল ৩টা থেকে ৪টা নাগাদ তাকে আদালতে তোলা হবে।’
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় আসাদুলকে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব-১৩।
এদিকে শনিবার বিকালে এই মামলার অন্য দুই আসামি নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমারের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। তাদেরকে সুবিধাজনক সময়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান ডিবি’র ওসি।
এরা আগে ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে হত্যা চেষ্টা মামলায় রবিবার ভোরে সন্দেহভাজন আরও দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- উপজেলার বানিয়াল পালশা গ্রামের খোকা শেখের ছেলে শাহজাহান শেখর (৪৫) এবং চক বাসুনিয়া বিশ্বনাথপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে সোহেল রানা (৩৩)।
রবিবার ভোরে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ নিজ বাড়ী থেকে তাদের আটক করে।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় মামলার প্রধান আসামি আসাদুলের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম শাওন, সইমুদ্দিনের ছেলে সুলতান (৩৮) ও ধিরেন্দ্র নাথের ছেলে শ্যামল চন্দ্রকে (৪০) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
আটককৃতরা বর্তমানে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাত আড়াইটার দিকে দুর্বৃত্তরা ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনওর বাসার নাইটগার্ডকে বেঁধে রেখে পেছন দিকের ভেন্টিলেটর ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে এবং ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবা ওমরকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। পরে তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে আহতদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে ইউএনও ওয়াহিদার অবস্থার অবনতি হলে তাকে জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
বর্তমানে তিনি রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।