ব্যাংকিং খাতে নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে, কারণ ব্যবসা এবং ব্যক্তি পর্যায়ে অর্থ সরবরাহের জন্য টাকা উত্তোলন বেড়েছে। ফলে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন নগদ টাকার বিপুল চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা থেকে ৮ হাজার কোটি টাকার মতো কল মানির চাহিদা ছিল।
কল মানি হল যেকোনো ধরনের স্বল্প-মেয়াদী, সুদ-আর্জিত আর্থিক ঋণ, যা ঋণদাতা যখনই দাবি করে তখনই ঋণগ্রহীতাকে ফেরত দিতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত মঙ্গলবার কয়েকটি ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে ৭ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। আগের দিন ঋণের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। এপ্রিলের শুরু থেকেই আন্তঃব্যাংক স্বল্পমেয়াদি ঋণের চাপ বেড়েছে। প্রথম আট কার্যদিবসে কল মানি মার্কেট থেকে ধার করা হয়েছে ৬ হাজার ২৭১৯ কোটি টাকা।
সেক্টর সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছর ঈদের আগে নগদ টাকার চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ফলে এ সময়ে অনেক ব্যাংকে নগদ অর্থের সংকট রয়েছে।
এ অবস্থা মোকাবিলায় ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংক ঋণ নেয় (কল মানি)।
আরও পড়ুন: মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে সতর্কতামূলক মুদ্রানীতি বাংলাদেশ ব্যাংকের
এই বছর, কিছু ব্যাংক অতিরিক্ত চাপের সম্মুখীন হচ্ছে কারণ তারা ইতোমধ্যে তারল্য সংকট মোকাবিলা করছে। নগদ অর্থের ঘাটতি মেটাতে এখন এসব ব্যাংককে কল মানি মার্কেটে বেশি সুদ দিতে হচ্ছে।
কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, অনিয়মের কারণে গ্রাহকদের আস্থা নষ্ট হওয়ায় অনেক ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে। ডলার কেনার কারণে কিছু ব্যাংকের নগদ অর্থের জরুরি প্রয়োজন।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি, আমানতের প্রবৃদ্ধি হ্রাস এবং ঋণের চাহিদা বৃদ্ধি তারল্য সংকট সৃষ্টি করছে। ফলে আন্তঃব্যাংক বাজারে স্বল্পমেয়াদি ঋণের চাহিদা বেড়েছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, প্রতি বছরই ঈদের আগে নগদ টাকা তোলার চাপ থাকে। কারণ ঈদের আগে কোম্পানিগুলো তাদের কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দেয়।
এছাড়া ঈদ-সংক্রান্ত খরচের জন্য মানুষ হাতে নগদ টাকা রাখে। তাই ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার চাহিদা বেশি। এই চাহিদা মেটাতে ব্যাংকগুলো কল মানি মার্কেট থেকে ঋণ নেয়।
আরও পড়ুন: এনবিএফআই ৮ বছরের আগে গাড়ি পরিবর্তন করতে পারবে না: বাংলাদেশ ব্যাংক