উন্নত বিশ্বের কারণে গ্রীনহাউস গ্যাসের প্রভাবে বাংলাদেশ ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন জলবায়ু পরিবর্তন প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের সুরক্ষা ও উৎসাহিতকরণ বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ইয়ান ফ্রাই।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশে সরকারি সফরে আছেন। এই সফর থেকে প্রাপ্ত ফলাফল ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সংবাদ সম্মেলনে জানাবেন তিনি।
একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ১ মে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর জাতিসংঘের বিশেষ এই দূতের প্রথম সফর এটি। তিনি বাংলাদেশে ৪-১৫ সেপ্টেম্বর অবস্থান করবেন।
কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব দুর্বল সম্প্রদায়ের মানবাধিকারকে প্রভাবিত করে তা তিনি মূল্যায়ন করছেন। বিশেষ এই প্রতিবেদক জলবায়ু পরিবর্তন ও চরম আবহাওয়ার ক্ষয়ক্ষতির দিকে মনোনিবেশ করছেন।
ইয়ান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশের জনগণের ওপর ব্যাপক অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতি করে চলেছে। গবেষণাপ্রাপ্ত ফলাফল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত খরচ ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে ২৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৫৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে বৃদ্ধি পাবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতের আহ্বান জাতিসংঘ
জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ জানান, ‘উন্নত বিশ্বের কারণে নির্গত গ্রীনহাউস গ্যাস দূষণে ভুগছে বাংলাদেশের মানুষ। এখন সময় এসেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পদক্ষেপ নেয়ার এবং এই প্রভাবগুলোর দায় নেয়ার।’
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কীভাবে মানুষকে তাদের জমি থেকে বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য করছে এবং এই প্রভাবগুলো মোকাবিলায় কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে সেদিকেও তিনি বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছেন এবং অনুসন্ধান করছেন।
জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত ভালো চর্চা, কৌশল ও নীতি চিহ্নিত করছেন। কারণ দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয় এবং এর প্রতিকূল প্রভাবের বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করে।
ইয়ান ২০২৩ সালের জুনে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে তার সফরের বিষয়ে একটি বিস্তৃত প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন।
আরও পড়ুন: শান্তির সংস্কৃতি প্রচারে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের
ইয়ান ফ্রাই হলেন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার প্রথম বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার।
তিনি ২০২২ সালের মার্চে মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪৯ তম অধিবেশনে নিযুক্ত হন এবং ২০২২ সালের ১ মে থেকে কার্যক্রম শুরু হয়।
ফ্রাই একজন আন্তর্জাতিক পরিবেশবিষয়ক আইন ও নীতি বিশেষজ্ঞ।
তার প্রাথমিকভাবে দৃষ্টি থাকছে প্রশমন নীতি এবং প্যারিস চুক্তি, কিয়োটো প্রোটোকল এবং এ সম্পর্কিত উপকরণগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত ক্ষয়ক্ষতির ওপর।
তিনি ২১ বছরেরও বেশি সময় ধরে টুভালু সরকারের হয়ে কাজ করেছেন এবং ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের জন্য দেশটির রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ পুলিশ, সংস্থা ও জাতীয় কর্তৃপক্ষসহ সকলের সমন্বয় প্রয়োজন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী