‘আমরা আশাবাদী যে, আমরা সঠিক পথেই আছি, এবং আমরা অতীতের মতোই আমাদের চ্যালেঞ্জগুলো জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সকল অংশীজনের সহযোগিতায় সফলভাবে কাটিয়ে উঠতে পারবো,’ বলেন তিনি।
ড. মোমেন বলেন, আশার ব্যাপার হলো, আমরা এসডিজি ট্র্যাকার চালু করতে পেরেছি যা সূচকগুলোর সাথে প্রতিটি এসডিজির লক্ষ্য নির্ধারণ এবং অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে ব্যবহার করা হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘এসডিজি এবং বাংলাদেশ: এসডিজি অর্জনে জাতিসংঘের অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো, সদস্য (সিনিয়র সচিব), সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন ডা. শামসুল আলম এবং ইউএনএফপিএ’র আঞ্চলিক পরিচালক (এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল) বিজোরন অ্যান্ডারসন উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন।
ড. মোমেন বলেন, প্রতিটি লক্ষ্যমাত্রায় অগ্রগতি করলেও এখনও অনেক দূর যেতে হবে। ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হবো সেটি এখনো একটি বড় হুমকি হয়ে রয়েছে।’
তিনি বলেন, সরকার নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা (বিসিসিএসএপি) তৈরি করেছে।
বর্তমানে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাস এবং হুমকি প্রতিরোধে স্থিতিশীলতা বিকাশে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের সাথে সমন্বয় করে বেশ কিছু প্রকল্প সরকার বাস্তবায়ন করছে।
দারিদ্র্যের মুক্তি, সকলের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, শিশু ও মাতৃত্বজনিত মৃত্যু হ্রাস, জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য হ্রাস, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ, পরিবেশ ব্যবস্থার উন্নয়ন নিশ্চিতসহ যে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে, বলে মনে করেন ড. মোমেন ।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের ২৩টি বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত জাতিসংঘ কান্ট্রি টিম (ইউএনসিটি) যৌথভাবে সরকারকে এসডিজি অর্জনে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
‘এমডিজি অর্জনে জাতিসংঘের সহযোগিতা সত্যই প্রশংসনীয় এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে এ জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তারা সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা কাঠামো গঠনের জন্যও নিবিড়ভাবে কাজ করছেন। অদূর ভবিষ্যতেও তারা এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. মোমেন।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে আমাদের বিখ্যাত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কথা উল্লেখ করতে চাই তা হলো ‘মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে’।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আরও বৃহত্তর, দীর্ঘমেয়াদী এবং বৈশ্বিক পুঁজির নিশ্চয়তা ও সহযোগিতা প্রয়োজন হবে।’
‘আমি আশা করি জাতিসংঘ ব্যবস্থায় যে সকল বন্ধুরা আছে তারা আমাদের এ প্রচেষ্টায় তাদের সমর্থন এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে,’ বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করার পর থেকেই এদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জাতিসংঘ মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে।
তিনি দারিদ্র্য বিমোচন, স্বাস্থ্য, খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষা, শিক্ষা, বৈষম্য দূরীকরণ, এবং লিঙ্গ সমতায় অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশে কর্মরত জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন, ‘সফলভাবে এসডিজি অর্জনের জন্য রাজনৈতিকভাবে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং নৈতিকভাবে সমর্থন করি। সে জন্য সম্পদের সহজলভ্যতা, মানুষের সক্ষমতা ও ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করার জন্য কাজ করছি।’
তিনি বলেন, তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নেতা, বেসরকারি খাত এবং দায়িত্বশীল নাগরিক সমাজের সাথে এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
ইতিমধ্যে অনেক উদ্ভাবন এবং উন্নয়ন সমাধান উন্নত করা হয়েছে। তবে আরও অনেক কিছু করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
মিয়া সেপ্পো বৈশ্বিক লক্ষ্য নিয়ে নিউইয়র্কে হতে যাওয়া ৭৪তম জাতিসংঘ সম্মেলনের আগে ঢাকার এ সম্মেলনকে গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ হিসাবে উল্লেখ করেন।